জিয়া থেকে খালেদা তারপর – বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্ণেল শরিফুল হক ডালিম

৪০তম পর্ব

১ম কিস্তি

প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে খালেদা জিয়ার সরকারের পাশে সেনা পরিষদ

বিএনপি জোট সরকার গঠনের পরপরই এক প্রলংকারি ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত হয়ে পরলো উপকূলীয় বিস্তীর্ণ অঞ্চল। বিশেষ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হল উড়ির চর অঞ্চল। টেলিযোগাযোগ সহ সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ রূপে ভেঙ্গে পরেছে। ঢাকার সাথে বহির্বিশ্বের কোনও যোগাযোগ নেই। বাংলাদেশের সরকারের কাছে ত্রাণকার্য পরিচালনা করার মতো কনও সঙ্গতিও নেই। অগুন্তি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে, বাস্তুহারা অবস্থায় জলবন্দী হয়ে পরেছে হাজার হাজার নারী-পুরুষ, শিশুসহ আবাল বৃদ্ধ বণিতা। এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবেলা করা নবগঠিত সরকারের পক্ষে অসম্ভব হয়ে দেখা দিলো। দিশাহারা সরকার!
এই বিপর্যয়ের হাত থেকে দুর্গতদের উদ্ধার করতে না পারলে পতন অবধারিত। খালেদা সরকারের অবস্থা টালমাটাল, আতংকগ্রস্ত সমগ্র দেশবাসী।
অপ্রত্যাশিত ভাবে কামাল সিদ্দিকি আমাদের বাসায় সশরীরে এসে উপস্থিত হয়ে জানালো প্রধানমন্ত্রী আমাকে সাথে করে নিয়ে যেতে পাঠিয়েছেন বিশেষ জরুরী প্রয়োজনে। যেহেতু টেলিফোন কাজ করছে না তাই তাকে এভাবে নিজেকেই আসতে হয়েছে।
কোথায় যেতে হবে?
সুগন্ধায় তার কার্যালয়ে, তিনি অধীর অপেক্ষায় রয়েছেন।
এত জরুরী তলব কেনও, বিষয়টাকি?
সেটা তার মুখ থেকেই শুনবি, চল।
তা না হয় শুনবো, কিন্তু সুগন্ধায় মৌমাছির মতো ভনভন করা নানা বর্ণের নানা ধরণের লোকজনদের ভিড় ঠেলে সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলতে যেতে কিছুটা অস্বস্তি বোধ করছি।
অস্বস্তির কারণটা ঠিক বুঝতে পারছিনা।
সেটা তুই বুঝবিও না, চল।

পৌঁছালাম সুগন্ধায়। রানী এলিজাবেথ যখন পূর্ব পাকিস্তান সফরে এসেছিলেন তখনএই মনোরম ভবনটি রাণীর থাকার জন্য বিশেষ ভাবে বানানো হয়েছিলো মানুষে গিজগিজ করছে সুগন্ধা।কামালের গাড়ী গিয়ে থামলো পোর্টিকোতে। গাড়ী থেকে নেমে ত্বরিত ঢুকে পড়লাম সুগন্ধার ভেতরে। কামাল আমাকে নিয়ে একটি ঘরেগিয়ে ঢুকলো, পথে অনেকেই সালাম ঠুকলো। ঘরে অপেক্ষায় ছিল সাব্বিহউদ্দিন।
ম্যাডামকে খবর দাও।
তিনি অপেক্ষাতেই আছেন। চলুন।বলে সাব্বি আমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে গেল যেখানে খালেদা জিয়া অবস্থান করছিলেন। আমরা প্রবেশ করতেই তিনি উঠে দাঁড়ালেন। সালাম জানাতেই তিনি একটা সোফায় বসে ইশারায় আমাকে পাশের সোফাটাতে বসতে বললেন। পাশেই রাখা দু’টি ভিক্টোরিয়ান চেয়ারে বসল কামাল ও সাব্বি। গুরুগম্ভীর পরিবেশ।
ছুটিতে ভাগ্যিস আপনি ঢাকার বাইরে যাননি, তাহলে তো আপনার সাথে যোগাযোগই করা সম্ভব হতো না। ভূমিকার পর আসল বক্তব্য শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী
সর্বনাশা ঘূর্ণিঝড় সরকারের জন্য এমন এক সমস্যার সৃষ্টি করেছে যার সমাধানের সামর্থ সরকারের নেই। পুরো দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পরেছে। এই অবস্থায় সরকার যদি ত্রাণকাজ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে ব্যর্থ হয় তাহলে সরকারের অস্তিত্বই বিপন্ন হয়ে পরবে। আমাদের বিমান বাহিনী এবং সেনা বাহিনীর কাছে যেসব হেলিকপ্টার রয়েছে সেগুলো বিধ্বস্ত এলাকায় যেতেই পারছে না। এই অবস্থায় কামাল আর সাব্বির পরামর্শ অনুযায়ী আপনাকে ডেকে এনেছি। ভাই, আমি আকুল আবেদন জানাচ্ছি আপনি যথাসাধ্য চেষ্টা করে দেখুন যদি কোনও উপায় বের করা যায়।
আপনি দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে সমস্যার সমাধানের পথ খুঁজে পাচ্ছেন না, সেইক্ষেত্রে আমার মতো একজন অতি সাধারণ মানুষের পক্ষে কি করা সম্ভব সেটা ঠিক বুঝতে পারছিনা ভাবী!
আমি জানতে পেরেছি বিদেশে আপনার অনেক ক্ষমতাশালী বন্ধুবান্ধব আছেন, তাদের মাধ্যমে কোনও রাস্তা বের করা সম্ভব নয় কি?
আমি চুপ করে আছি দেখে বেগম জিয়া আবারও অনুরোধ জানালেন
প্লিজ ভাই, চেষ্টা করে দেখুন। শুধু সরকারের জন্য নয়, অসহায় ক্ষতিগ্রস্তদের স্বার্থে!
কিন্তু ভাবী, দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভাবে অকেজো হয়ে পরেছে সেক্ষেত্রে এখান থেকে বিদেশে যোগাযোগ করাও তো সম্ভব নয়।
আপনার সুবিধা মতো বাইরে যেকোনো দেশে গিয়ে যোগাযোগ করুন। আজই বেরিয়ে পড়ুন। কামাল, আপনি সব বন্দোবস্ত করে দিন।
আপনার অনুরোধ রক্ষা করে আমি আমার সাধ্যমত সর্বাত্মক চেষ্টা কোরব, কিন্তু ফলাফল কি হবে সে সম্পর্কে আমি কিছুই বলতে পারছি না। তবে আপনাকে কথা দিতে হবে, আপনি যে আমাকে এমন একটি স্পর্শকাতর গুরু দায়িত্ব দিচ্ছেন এই কথাটা আমাদের চারজন ছাড়া অন্য কেউ কখনো জানতে পারবে না। ফলাফল যাই হউক না কেনোও।
কথা দিলাম।
ধন্যবাদ। এবার তাহলে আসি। যদি সম্ভব হয় চেষ্টা কোরব আজই বেরিয়ে পড়তে।
বিদায় নিয়ে তিনজনই এসে বসলাম কামালের ঘরে।

আচ্ছা কামাল, এ সমস্তের মানে কি? প্রধানমন্ত্রীর কাছে কি প্রমাণ করতে চাচ্ছিস তোরা, সারা বিশ্ব আমার ইচ্ছামত চলছে? প্রধানমন্ত্রীকে এ ধরনের পড়া পড়িয়ে আমাকে বিব্রত করে বন্ধুত্বের ভালোই প্রতিদান দিচ্ছিস কিছুটা রেগেই বললাম। সাব্বি মাথা নিচু করে এমন ভাবে নিশ্চুপ বসেছিলো যেনো চোর ধরা পড়ে গেছে। ইতিমধ্যে বেয়ারা এসে চা-নাস্তা পরিবেশন কোরল। সাব্বি বললো
কামাল ভাই, আমার এক বন্ধুর ট্রাভেল এজেন্সি আছে। তার কাছে লোক পাঠালে হয়তো আজই ব্যাংকক পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। সেখান থেকে তিনি যেখানে ইচ্ছে যেতে পারবেন।
হ্যাঁ, তুমি নিজেই যাও।
সাব্বি বেরিয়ে যাবার আগে জানতে চাইলো
টিকেটটা কি সঙ্গে করেই নিয়ে আসবো?
অবশ্যই, যদি সম্ভব হয়।
সাব্বি চলে যাবার পর ঘরে রইলাম শুধু আমরা দু’জন। কামাল ইন্টারকমে কাকে যেন হুকুম দিল যতক্ষণ তার রুমে গেস্ট রয়েছেন ততক্ষণ তার রুমে কাউকে যেন ঢুকতে না দেয়া হয়।
বন্ধু, এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় থেকে নির্বাচন পর্যন্ত পর্দার অন্তরালে তুই যে ভূমিকা রেখেছিস সে সম্পর্কে ম্যাডাম ছাড়া অন্য কেউই অবগত নয়। তবে তার কিছুটা আমি আন্দাজ করতে পেরেছি।
রসিকতা করে বললাম
পিটার কুস্টার কানে কানে কিছু বলেছে নাকি?
দু’জনেই হেসে উঠলাম।
কত টাকার দরকার?
কিছু ক্যাশ ডলার দিয়ে দে, তাতে না কুলোলে Credit Card ব্যবহার কোরব। ফিরে এসে সব হিসাব তোকে কড়ায়-গণ্ডায় বুঝিয়ে দেবো।
That’s not important really. To be honest, আমাকে তোরা বিশেষ করে তুই বিস্মিত করেছিস।
কেনও?
১৫ই আগস্ট বিপ্লবের চেতনা ও তোদের প্রতি যে ধরনের নিষ্ঠুর অবিচার এবং বিশ্বাসঘাতকতা জিয়া করেছেন এরপরও তোরা জাতির প্রতিটি ক্রান্তিলগ্নে নিঃস্বার্থ ভাবে সাধ্যমতো ইতিবাচক অবদান রেখে যাচ্ছিস কোনও প্রতিদানের প্রত্যাশা ছাড়াই। এই নিঃস্বার্থ ত্যাগের সঠিক মূল্যায়ন কি এই দুর্ভাগা জাতি কোরবে কখনো!
ভুল বললি। প্রতিদানের প্রত্যাশা অবশ্যই আছে। সেটা হল, মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের যে শপথ আমরা নিয়েছিলাম সেই প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। সেই সংগ্রামে নিজেকে আহূতি দিতে কুণ্ঠিত হবো না যতদিন বেঁচে থাকবো। সংঘটিত ১৫ই আগস্ট এবং ৭ই নভেম্বর-এর ঐতিহাসিক সফল বৈপ্লবিক অভ্যুত্থানের পর সেনা পরিষদের নেতৃত্ব জেনারেল জিয়াকে পরিকল্পনা অনুযায়ী ক্ষমতার কেন্দ্রে অধিষ্ঠিত করে। সেই জিয়াই পরে সামরিক বাহিনীতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার ধুয়া তুলে সেনা পরিষদের নিবেদিতপ্রাণ,পরীক্ষিত তিনহাজারেরও বেশী দেশপ্রেমিক সেনা সদস্যকে ষড়যন্ত্রমূলক নারকীয় হত্যাযজ্ঞে যেভাবে হত্যা করেন সেটাই আমার বক্তব্যের পক্ষে সবচেয়ে বড় প্রমাণ নয় কি? সেনা পরিষদের সাথে যে অন্যায় জিয়া করেছিলেন ক্ষমতা কুক্ষিগত করার লক্ষে তার শাস্তি তো তিনি এড়াতে পারেননি যদিও পরকালের বিচারটা এখনও বাকি রয়েছে। আর একটা কথা তোকে বলতে চাই,
আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি মোনাফেকি, প্রতিহিংসা পরায়ণতা এবং মিথ্যাচারের উপর ভিত্তি করে কোনও রাজনীতিই বেশিদিন টিকে থাকতে পারে না। মিথ্যার বেসাতি সাময়িক চমক সৃষ্টি করতে পারে বটে, কিন্তু অল্প সময়েই সেটা ফিকে হয়ে যায়। অন্যদিকে সত্য চিরভাস্বর।
ডালিম, তুই তো সব সময় বলে থাকিস অতীতের দিকে না চেয়ে ভবিষ্যতের দিকে দেখা উচিৎ। তাহলে চীন সফরকালে জিয়া চাচার(আমার আব্বা) উপস্থিতিতে তোকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন, ‘Let us forget and forgive and start afresh’ তাঁর সেই প্রস্তাব তোরা প্রত্যাখ্যান করলি কেনও?
অতীত নিয়ে বুঁদ হয়ে থাকা আমাদের অভ্যাস নয় ঠিকই, তবে অতীতের ভুল ভ্রান্তি থেকে শিক্ষা না নিলে ভবিষ্যতে সঠিক পথে এগুনো কিভাবে সম্ভব? তার উক্তি ‘Let us forget and forgive and start afresh’, ছিল বর্ণচোরার আর একটা কুটিল চাল আমাদের ফাঁদে ফেলার। আগস্ট আর নভেম্বরের বৈপ্লবিক অভ্যুত্থানের পর জাতীয় শত্রু আওয়ামী-বাকশালী চক্র যখন বিলুপ্তির পথে তখন ভারতের সাথে সমঝোতার পর তাদের মানসকন্যা হাসিনাকে ভারত থেকে সসম্মানে ফিরিয়ে এনে তার নেতৃত্বে সার্বিক সাহায্য-সহযোগিতা প্রদান করে জাতীয় রাজনীতিতে মৃতপ্রায় আওয়ামী লীগকে পুনর্জীবিত করে সহ-অবস্থানের রাজনীতি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন জেনারেল জিয়া। সেই বাস্তবতার নিরিখে আমাদের পক্ষে তার সাথে নতুন করে কি শুরু করা সম্ভব হতো?
কিছু মনে করিসনে, তুইও একজন দেশপ্রেমিক তবে তোর আর আমাদের মধ্যে একটু ফারাক আছে দোস্ত।
তুই হলি চোখ-কান খোলা রেখে চলায় অভ্যস্ত একজন দেশপ্রেমিক, আর আমরা হচ্ছি ‘৭১-এরস্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আপোষহীন নিবেদিতপ্রাণ দেশপ্রেমিক।
আমার কথায় কামাল বিব্রত বোধ করছিল। তাই সান্ত্বনা দিতে বললাম
এটাও আমাদের জানা আছে তুই রাজনৈতিক ভাবে সচেতন, বুদ্ধিমান, উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত একজন চৌকস আমলা। তাই তুই দেশি-বিদেশী বিভিন্ন মহলের সুনজরে রয়েছিস।
আমাদের তোর মতো Credentials নাই ভাই। তাই আমাদের একমাত্র নিজেদের সীমিত বুদ্ধিমত্তার উপর নির্ভর করেই বাঁচতে হচ্ছে এবং হবে।
Actually, Zia was highly ambitious but had over estimated himself at times. His offer was a very foolish bait to allure us within his fold and crush at his will. Because, he had been under continuous threat and fear that it is only we and no one else who could unmask his dirty face and duality of his character to the people if need be. Therefore, how could we offer ourselves to be entrapped? Hope, I have made myself clear. You are smart enough to fathom the rest.
তাহলে খালেদা জিয়াকে সাহায্য করছিস কেনও?
জবাবটা তো তোর ম্যাডামই দিয়ে দিয়েছিলেন আজকের আলাপ কালে, দেশ এবং দেশবাসীর স্বার্থে। মন দিয়ে শুনিসনি বোধহয়। হাসতে হাসতে আরও বললাম, খালেদার প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি যখন হতে পেরেছিস তখন ভেতরের খেলার অনেক কিছুই সময়মতো জানতে পারবি।
But, I must say it’s a very smart move. This has removed many misgivings all around. At the same time this would also give you the opportunity to be one of Khaleda’ s most close trusted confidant. With time you would also become a sought for blue eyed boy in the capitals of may powerful countries particularly in the West due to your credentials, character traits and brilliant track record.
পক্ষান্তরে আমরা তো বর্তমানে সবক্ষেত্রেই অপাংক্তেয়। কোথাও তেমন একটা গ্রহণযোগ্যতাও নেই। সবখানেই বর্জনীয়।
কামাল আমার কথাগুলো খুবই মনোযোগের সাথে শুনে বললো
তোর প্রতিটি কথা গুরুত্বপূর্ণ। তোদের সাথে আমার এবং আমার মতো অন্য কারো কোনও তুলনাই হয় না।
একসময় একজন স্টাফ এসে কামালকে একটা এনভেলাপ দিলো, সেটা কামাল আমাকে দিয়ে বললো
এখানে পথে খরচের জন্য কিছু বৈদেশিক মুদ্রা আছে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই সাব্বি ফিরে এসে জানালো-আজ রাতেই থাই এর ফ্লাইটে আমার ব্যাংকক যাবার সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। টিকেটটা আমাকে দিয়ে কামাল বললো
তুই বাসায় চলে যা, সময়মত আমার এক অফিসার তোকে বাসা থেকে নিয়ে ফ্লাইটে তুলে দিয়ে আসবে। চল, তোকে গাড়ীঅব্দি পৌঁছে দিয়ে আসি।
বাসায় ফিরে নিম্মিকে জানালাম, কয়েকদিনের জন্য দেশের বাইরে যেতে হবে সেই সিদ্ধান্তই গৃহীত হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর অফিসে বৈঠকে। আজ রাতেই যাবার ব্যবস্থা হয়েছে।
আমার স্যুট ক্যারিয়ার আর হ্যান্ডব্যাগটাতে প্রয়োজনীয় সবকিছু গোছগাছ করে দাও। সময় মতো কামালের প্রটোকল অফিসার এসে আমাকে নিয়ে যাবে।
কোথায় যাচ্ছো? নিম্মি খানিকটা উদগ্রীব হয়ে জানতে চাইলো।
প্রথমে ব্যাংকক। তাড়াতাড়ি খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করো, বেশি সময় নেই, তাই ঝটপট তৈরি হয়ে নিতে হবে।

সময়মত প্রটোকল অফিসার গাড়ী নিয়ে উপস্থিত হলেন। সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে জিয়া ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে পৌঁছালাম। সাথে নিম্মি এবং মহুয়া এসেছে।গাড়ী থেকে নামতেই দেখি এয়ারপোর্ট-এর সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা আমাদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য অপেক্ষা করছেন। বুঝতে পারলাম, প্রাইম মিনিস্টারের অফিস থেকে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। তারা আমাদের VIP Lounge-এর একটা কামরায় নিয়ে গেলেন। খাতির যত্নের আতিশয্য চোখে পরার মতো। প্রটোকল অফিসার জানালেন, Flight on time. তিনি আমার মালপত্র, টিকেট আর পাসপোর্ট নিয়ে এয়ারপোর্টের কর্মকর্তাদের সাথে বেরিয়ে গেলেন। একজন তদারককারিকে রেখে গেলেন যাতে আমাদের কোনও অসুবিধে না হয়। আমরা চা নাস্তা খেতে খেতে নিজেদের মধ্যে টুকটাক কথা বলছিলাম। এরই মধ্যে একজন উর্দি পরা অফিসার এসে কাঁচুমাচু হয়ে আমাকে অনুরোধ করলেন
স্যার, আমার একজন সিনিয়র অফিসার বিশেষভাবে আমাকে পাঠিয়েছেন, তিনি আপনার সাথে সাক্ষাত করে সালাম জানাতে ইচ্ছুক।
বেশতো, নিয়ে আসুন তাকে। সম্মতি পেয়ে অফিসার ছুটে বেরিয়ে গেলেন। ভদ্রলোক বেরিয়ে যাবার পর আমি নিম্মি এবং মহুয়াকে লক্ষ্য করে বললাম
কি ব্যাপার বল তো? জানা ছিল অদ্ভুত জীবজন্তু দেখার জন্য উৎসুক লোকজন চিড়িয়াখানায় যায়, আমিও কি সেই পর্যায়ে পরলাম নাকি!
মহুয়া জবাব দিলো
ভাইয়া, তোমার উপস্থিতিটা জানাজানি হলে এয়ারপোর্টের পাবলিক হুমড়ি খেয়ে পরতো মেজর ডালিমকে এক নজর দেখার জন্য। তোমাকে নিয়ে সব মহলেই এত বেশি কৌতূহল যা দেখে আমরাও হতবাক হয়ে যাই। তুমি বাংলাদেশের মানুষের কাছে কিংবদন্তির এক রহস্য নায়ক।
তাই নাকি, ভাববার কথা!
ভদ্রলোকটি একজন বয়স্ক ব্যক্তিকে সাথে নিয়ে হাজির হলেন। জানলাম, পদবীতে তিনি সিভিল এভিয়েশনের ডেপুটি ডিরেক্টর এয়ারপোর্ট ইন চার্জ।সালাম ও কুশলাদি বিনিময়ের পর তিনি জানালেন প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে বিশেষ নির্দেশ দেয়া হয়েছে আপনার উপস্থিতিটা যাতে গোপন রাখা হয়।সেক্ষেত্রে আপনার সাথে দেখা করার অনুরোধ জানানোটা আপনি কিভাবে গ্রহণ করবেন সেটা বিবেচনায় না এনেই আবেগের তাড়নায় অনুরোধটা করেই ফেললাম। আপনি কিছু মনে করেননি তো, স্যার?
আরে না না এতে মনে করার কিছুই নেই আপনি বসুন।
পাশের একটা সোফায় বসলেন ভদ্রলোক।চাচলবে?বলেই ইশারায় পরিচারককে চা পরিবেশন করতে বললাম।
স্যার, সারা দেশবাসী বুড়ো থেকে বাচ্চারাও আপনার নাম জানে। কিন্তু স্বচক্ষে দেখার সৌভাগ্য খুব অল্পজনেরই হয়েছে।
১৫ই আগস্টের পটপরিবর্তনের পর আমি আপনার ঘোষণা শুনে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে আপনাদের জন্য দোয়া করেছি। আপনারা সবাই জাতীয় বীর। তখন থেকেই চাক্ষুষ আপনাকে দেখার একটা বাসনা মনে মনে লালন করে এসেছি, আল্লাহ্‌পাক আজ আমার সেই মনোবাসনা পূরণ করলেন। আমি মন থেকে দোয়া করছি, আপনি দীর্ঘজীবী হউন। আপনাদের মতো কৃতী নির্ভীক সন্তানরাই দেশকে প্রগতি এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথে নিয়ে যেতে পারে। এটা শুধু আমার বিশ্বাসই নয়, দেশের অধিকাংশ মানুষেরও কথা। ভদ্রলোকের চোখ দিয়ে পানি ঝরে পড়ছিলো কথা বলতে বলতে। বয়স্ক একজন ইমানদার নামাজি ভদ্রলোক নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছিলেন না।
সব শুনে আমি বললাম
আপনার দোয়াতে আমাদের স্মরণ রাখবেন। আপনাদের দোয়াই আমাদের মনোবল, প্রত্যয় আরও সবল করে তুলবে বৃহত্তর দেশ ও জাতীয় স্বার্থে কাজ করে যাবার জন্য।
আমি আসি স্যার, সাক্ষাৎদিতে সম্মত হওয়ায় অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমি তাকে জড়িয়ে ধরে বললাম
আপনার মতো একজন বুজুর্গ-এর সাথে মিলিত হয়ে দোয়া নিতে পেরে আমি নিজেকেই ধন্য মনে করছি। সালাম জানিয়ে বেরিয়ে গেলেন দু’জনই।
ভাইয়া,দেখলেতো? চিড়িয়াখানায় অদ্ভুত জন্তু-জানোয়ার দেখে আবেগ বিহ্বলতায় কারো চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ে না নিশ্চয়ই! আমি আগে যা বলেছিলাম, সেটাই প্রমাণ করে গেলেন এক বর্ষীয়ান পরহেজগার ভদ্রলোক। মহুয়ার কথার কোনও জবাব না দিয়ে মনে মনে আল্লাহ্‌পাকের হাজার শুক্রিয়া আদায় করছিলাম।
এত অপপ্রচার ও নিষ্পেষণের পরও এখনো দেশবাসীর মনে আমাদের জন্য দোয়া এবং ভালোবাসা রয়েছে! রয়েছে অনেক প্রত্যাশা! একসময় এনাউন্সমেন্ট হলবোর্ডিং শুরু হয়েছে। এরপরও ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। কারণ, প্রথা অনুযায়ী সব যাত্রী প্লেনে ওঠার পরই VIP Passengers are taken for boarding যাতে তাদের লাইন-এ দাঁড়িয়ে সময় নষ্ট করতে না হয়। যথাসময়ে প্রটোকল অফিসার এসে বললেন
চলুন স্যার, ভাবী, আপা আপনারাও চলুন।
নিম্মি, মহুয়াসহ আমরা প্লেনের ভেতর ঢুকতেই স্মিতহাস্যে এক বিমানবালা আমাদের সাদর সম্ভাষণ জানিয়ে আমাকে আমার নির্দিষ্ট আসনে বসিয়ে দিলো। VIP কনও যাত্রী থাকলে নিয়ম অনুযায়ী এয়ারপোর্ট অথরিটি আগেই ককপিট এবং ক্যাবিন ক্রুদের জানিয়ে দেয় Special handling-এর জন্য। নিম্মি বললো
যেখানেই থাকো টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক হলে ফোন কোরো।
নিশ্চয়ই। প্রটোকল অফিসারকে বললাম, আপনি অনেক কষ্ট করলেন ভাই তার জন্য ধন্যবাদ।
মোটেও নয়, স্যার। আমারই সৌভাগ্য আপনাকে এত কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেলাম কামাল স্যারের সৌজন্যে। আমি ভাবীদের বাসায় পৌঁছে দিয়ে ফিরবো। তারা সবাই বিদায় নিয়ে চলে গেলো।
সাথে সাথেই প্লেনের দরজা বন্ধ করে দেয়া হল। এক সময় প্লেন আকাশে উড়াল দিলো।
আমি ব্যাগ থেকে নেলসন ম্যান্ডেলার জীবনের উপর সদ্য প্রকাশিত বইটি বের করে তাতে মনঃসংযোগ করলাম। এক সময় বিমানবালা খাবারের মেন্যু রেখে গেলো।
মিয়ানমার থেকে ফিলিপিনস পর্যন্ত খাবারের মধ্যে ফ্লেভারে বেশ কিছুটা মিল রয়েছে। থাইফুড এর মেন্যু থেকে পছন্দের খাবারের কয়েকটা আইটেম বেছে নিলাম। সিট বেল্ট খোলার ঘোষণা হতেই কেবিন ক্রুরা খাবার পরিবেশনায় ব্যস্ত হয়ে পরলো।
নেলসন ম্যান্ডেলা, রবার্ট মুগাবে, জমু কেনিয়াটা, জুলিয়াস নায়ারে, আরাপ মই, ইদি আমিন, আল বশির, তোরাবি, মুসেবেনি, জর্জ গারাং, মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, আইদিত, মোয়াম্মর গাদ্দাফি, নুরি মিজরি, আয়াতুল্লাহ খোমেনি, লি কুয়ান ইউ, মাহাথির মোহাম্মাদ, দেং শিয়াও পিং, হুয়ো গুয়ো ফেং, প্রিন্স সিহানুক,মারকোস, কোরাজন আকিনো,ইয়াসির আরাফাত ছাড়াও অনেক সংগ্রামী নেতার সাথে পরিচিত হওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে।
বইটাতে ডুবে ছিলাম। খাবারের ট্রলি নিয়ে হাসি মুখে একজন বিমানবালা খাবার পরিবেশন করে ড্রিংকসের ট্রলির দিকে দৃষ্টি ফিরিয়ে জিজ্ঞেস করলো
What would you like, Sir?
Just a glass of plain water please.
বিমানবালা গ্লাসে পানি ঢেলে দিলো।
Thanks.
You are most welcome, বলে চলে গেলো বিমানবালা।
খাবারের সাথে বই পড়তে পড়তেই সময় কেটে গেলো, পৌঁছে গেলাম ব্যাংকক।
এয়ারপোর্ট থেকে হোটেল দুসিথানীতে একটা রুমের বুকিং দিয়ে হোটেলের ট্যাক্সি নিয়েই পৌঁছালাম দুসিথানীতে।
ওটাই তখনকার দিনে ব্যাংককের সবচেয়ে আধুনিক এবং নামিদামি হোটেল।

সূচীপত্র  [প্রতিটি পর্বে্র নীচে ক্লিক করলেই সেই পর্বটি পাঠ করতে পারবেন]

১ম পর্ব   “জিয়া থেকে খালেদা তারপর” – লেখকের কথা

২য় পর্ব  শ্রদ্ধেয় মওলানা ভাসানীর সাথে শেষ সাক্ষাত

৩য় পর্ব দ্বিজাতি তত্ত্ব

৪র্থ পর্ব –  কিছু বিভ্রান্তি এবং অপপ্রচারের জবাব

৫ম পর্ব – সত্য কহন

৬ষ্ঠ পর্ব – ব্যাংককে আমরা

৭ম পর্ব – বঙ্গভবনে কি হচ্ছিল রাত ১২ টায়!

৮ম পর্ব – বন্দীত্ব থেকে মুক্ত করা হলো জেনারেল জিয়াকে

৯বম পর্ব – “সংঘর্ষের পথে জিয়া”

১০ম পর্ব – খন্দকার মোশতাকের বিশেষ দূত হিসেবে এলেন সাদ্রে ইস্পাহানী

১১তম পর্ব – শিশু ভাই এলেন ব্যাংককে

১২তম পর্ব  – নিজেদের আলোচনা

১৩তম পর্ব  ১ম কিস্তি   – রাষ্ট্রীয় অতিথি হয়ে লিবিয়ার পথে

১৩তম পর্ব – ২য় কিস্তি- রাষ্ট্রীয় অতিথি হয়ে লিবিয়ার পথে

১৪তম পর্ব –  বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জমির এলেন সস্ত্রীক

১৫তম পর্ব – এভিএম তোয়াব আসছেন

১৬তম পর্ব  –  শিশুভাইকে বেনগাজীতে আসার অনুরোধ

১৭তম পর্ব  –  ১ম কিস্তি – জিয়ার ডাকে ঢাকার পথে

১৭তম পর্ব – ২য় কিস্তি

১৭তম পর্ব –  ৩য় কিস্তি

১৭তম পর্ব –  শেষ কিস্তি

১৮তম পর্ব –  বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর ইতিহাস

১৯তম পর্ব –  জেনারেল মনজুরের সাথে বৈঠক

২০তম পর্ব – লন্ডন হয়ে ফিরলাম বেনগাজীতে

২১তম পর্ব – ঢাকা হোয়ে পিকিং-এর উদ্দেশ্যে যাত্রা

২২তম পর্ব – বাংলাদেশে নীতি বিবর্জিত কুটুম্বিতার রাজনীতির রূপ

২৩তম পর্ব –  জিয়ার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে

২৪তম পর্ব –  রাষ্ট্রপতি হিসাবে জিয়ার গণচীনে দ্বিতীয় সফর

২৫তম পর্ব  –  আব্বার উপস্থিতিতে প্রথম রাতে জেনারেল জিয়ার সাথে আমার বৈঠক

২৬তম পর্ব – দ্বিতীয় বৈঠক

২৭তম পর্ব – জিয়ার নিযুক্ত সেনাপ্রধান জেনারেল এরশাদের চীন সফর

২৮তম পর্ব – চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে আসার পর রাষ্ট্রপতি জিয়ার প্রতিক্রিয়া

২৯তম পর্ব  –  চীন থেকে লন্ডনে নির্বাসন কালে

৩০তম পর্ব  –  জেনারেল মঞ্জুরের ব্যর্থ অভ্যুত্থান, জেনারেল এরশাদের ক্ষমতা দখল

৩১তম পর্ব  – নিউইয়র্কের পথে জেনারেল এরশাদের সাথে লন্ডনে সাক্ষাৎ

৩২তম পর্ব – খালেদা জিয়া হলেন বিএনপির চেয়ার পার্সন

৩৩তম পর্ব – জেনারেল এরশাদের প্ররোচনায় রশিদ-ফারুক বানালো ফ্রিডম পার্টি

৩৪তম পর্ব – ১ম কিস্তি – এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের ক্রান্তিকালে খালেদা জিয়ার পাশে সেনা পরিষদ

৩৪তম পর্ব – এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের ক্রান্তিকালে খালেদা জিয়ার পাশে সেনা পরিষদ

৩৪তম পর্ব – এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের ক্রান্তিকালে খালেদা জিয়ার পাশে সেনা পরিষদ-শেষ কিস্তি

৩৫তম পর্ব – ১৯৯১-এর নির্বাচনে খালেদা জিয়ার বিজয়ে সেনা পরিষদের অবদান – ১ম কিস্তি

৩৬তম পর্ব – ১৯৯১-এর নির্বাচনে খালেদা জিয়ার বিজয়ে সেনা পরিষদের অবদান  – শেষ কিস্তি পেশাওয়ারের পথে

৩৭তম পর্ব – ফিরে এলাম নাইরোবিতে

৩৮তম পর্ব – নব নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার পথে যাত্রা 

৩৯তম পর্ব – ঢাকায় পৌঁছালাম

৪০তম পর্ব –  ১ম কিস্তি – প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে খালেদা জিয়ার সরকারের পাশে সেনা পরিষদ

৪০তম পর্ব – প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে খালেদা জিয়ার সরকারের পাশে সেনা পরিষদ – ২য় কিস্তি

৪০তম পর্ব – প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে খালেদা জিয়ার সরকারের পাশে সেনা পরিষদ- শেষ কিস্তি

৪১তম পর্ব – রুহানী জগতের আর এক সূফি সাধকের সান্নিধ্যে

৪২তম পর্ব – আমাকে আবার খালেদা জিয়ার জরুরী তলব

৪৩তম পর্ব – ব্যাংকক ট্রানজিট লাউঞ্জে

৪৪তম পর্ব – হংকং হয়ে বেইজিং – ১ম কিস্তি

৪৪তম পর্ব –  হংকং হয়ে বেইজিং – শেষ কিস্তি

৪৫তম পর্ব – হংকং হয়ে ফিরলাম ঢাকায়

৪৬তম পর্ব – গোপনে আমেরিকা সফর

৪৭তম পর্ব – আবার ঢাকায়

৪৮তম পর্ব – নাইরোবিতে প্রত্যাবর্তন

৪৯তম পর্ব – দেশে ফিরলাম

৫০তম পর্ব – নিরুদ্দেশে যাত্রা

৫১তম পর্ব – ২৮শে জানুয়ারি ২০১০ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ

৫২তম পর্ব – দেশের সূর্যসন্তান বীরদের ফাঁসিতে বিএনপি এবং জামায়াতের
প্রতিক্রিয়া

৫২তম পর্ব -দেশের সূর্যসন্তান বীরদের ফাঁসিতে বিএনপি এবং জামায়েতের
প্রতিক্রিয়া  –  শেষ কিস্তি

৫৩তম পর্ব – বিশ্বায়নের মোজেজা, রাষ্ট্র ও ধর্ম – ১ম কিস্তি

৫৩তম পর্ব – বিশ্বায়নের মোজেজা, রাষ্ট্র ও ধর্ম – শেষ কিস্তি

৫৪ তম পর্ব – শেষকথা

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *