জিয়া থেকে খালেদা তারপর – বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্ণেল শরিফুল হক ডালিম

৩৯তম পর্ব

ঢাকায় পৌঁছালাম

ঢাকায় পৌঁছে বেগম খালেদা জিয়র সাথে যোগাযোগ করতেই তিনি সেই রাতেই তার ক্যান্টনমেন্ট-এর বাড়িতে রাতের খাওয়ার দাওয়াত দিলেন। নিম্মিকে তার দাওয়াতের কথা বললাম। নিম্মি পরিষ্কার জানিয়ে দিলো তার পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়। জানাই ছিল সে খালেদা জিয়ার দাওয়াতে যাবে না। সুতরাং যথাসময়ে আমি একাই গিয়ে পৌঁছালাম শহীদ মইনুল রোডের বাড়ীতে।
সেখানে আমাকে অভ্যর্থনা জানালো কমবয়সী এক তরুণ। পরিচয় দিলো সে খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব, নাম মোসাদ্দেক ওরফে ফালু। বসার ঘরে বসিয়ে দাঁত বের করে বিগলিত ভাবে জানালো ম্যাডাম সুগন্ধার অফিস থেকে বেরিয়ে পরেছেন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে যাবেন। কেনও যেন প্রথম দেখাতেই ছেলেটাকে তেমন পছন্দ হয়নি। তাই গায়ে পড়ে যখন আলাপ জমাতে জিজ্ঞেস কোরল, ‘ভাবী এলেন না?’ তখন বিরক্ত হয়েই তার কথার জবাব না দিয়ে বললাম, ‘আপনি আসুন, আমি অপেক্ষা করছি’, বলে টেবিলের উপর রাখা ম্যাগাজিনগুলো থেকে একটা তুলে নিয়ে মুখ ঢাকলাম। বেরিয়ে গেলো ফালু।
কয়েক মিনিটের মধ্যেই বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ীবহর গেট দিয়ে ঢুকছে বুঝতে পারলাম।
গাড়ী থেকে নেমে সোজা আমি যেই ঘরে বসেছিলাম সেখানেই এসে ঢুকলেন তিনি। আমি সোফা থেকে উঠে সালাম জানালাম। তিনি সালামের জবাব দিয়ে আমাকে বসতে বলে নিজেও পাশের সোফায় বসে জিজ্ঞেস করলেন, কই নিম্মি এলো না?’ কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে বললাম দীর্ঘ সফরের ধকলে অসুস্থ হয়ে পরায় ও আসতে পারেনি। তার এই অপারগতার জন্য আমাকে ক্ষমা চেয়ে নিতে বলেছে নিম্মি আপনার কাছ থেকে।
আপনারা তো বেশ কয়েকটা দেশ ঘুরে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন, জার্নির একটা ধকল তো থাকবেই। এবার বলুন কেমন হল আপনাদের সফর?
ভালো। বন্ধু-বান্ধবদের ধন্যবাদ জানানোর দায়িত্বটা সম্পন্ন করার জন্যই ছিল এবারের সফর।আপনি যদি কিছু মনে না করেন তাহলে আলাপ-আলোচনার স্বার্থে একটি বিষয়ে আমি আপনার অভিমত জেনে নিতে চাই।
আমার দিকে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে চেয়ে তিনি জানতে চাইলেন, কোন বিষয়ে?
দেশের মাটিতে পা ফেলার পর থেকেই দেখছি সর্বত্র সবাই আপনাকে ম্যাডাম বলে সম্বোধন করছে। কাকুলের দিনগুলো থেকে বরাবরই আমি আপনাকে ভাবী বলে সম্বোধন করে এসেছি। তাই বর্তমান অবস্থায় আপনাকে কি বলে সম্বোধন করব সেটা ঠিক বুঝতে পারছি না।
আমার কথায় হেসে উঠলেন খালেদা জিয়া। এরপর কোনও দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছাড়াই জবাব দিলেন
আপনি আমাকে ভাবী বলেই ডাকবেন।
তার জবাবে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। ইতিমধ্যে গৃহপরিচারকদের একজন এসে জানালো খাবার পরিবেশন করা হয়েছে।
চলুন খাওয়ার পাটটা সেরে আসা যাক। তারপর আলাপ করা যাবে। অতি সাধারণ খাবার পরিবেশিত হয়েছে। মাছ, ভাত, ডাল, সবজি ইত্যাদি। আমার মতোই এ ধরনের সাধারণ খাবারই পছন্দ করতেন জেনারেল জিয়াউর রহমান।
খাওয়া শেষে আমরা ফিরে এলাম বসার ঘরে। একটা রুপোর রেকাবিতে পান ও রকমারি মশলা রাখা হয়েছে সাইড টেবিলে। বেগম জিয়া এবং আমি দুইজনই পছন্দসই মশলা তুলে মুখে দিলাম। মশলা চিবুতে চিবুতে তিনি সাইড টেবিলে রাখা কলিং বেলটি টিপলেন। ফালু এসে উপস্থিত হল। তিনি ফালুকে বললেন, যতক্ষণ আমি আছি কোনও ফোন কল যাতে তাকে না দেয়া হয়। হুকুম শুনে বেরিয়ে গেলো ফালু।
আমার জন্য আপনি যা করেছেন ভাই তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ কিন্তু তবুও ধন্যবাদ জানিয়ে আপনাকে ছোটো করব না।
আমি তো আপনার ব্যক্তিস্বার্থে কিছুই করিনি, যাই করেছি সেটা করেছি দেশ ও জাতীয় স্বার্থে আমাদের সবার সম্মতি ক্রমেই। ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ভারত বিরোধী জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী জনগণের বৃহত্তর অংশের ভোটে আপনি নির্বাচনে জিতেছেন। আমরাও একই চেতনায় বিশ্বাসী, সেই প্রেক্ষাপটে আপনার নির্বাচনী বিজয়ের জন্য আমরা সাধ্যমতো যতটুকু করেছি সেটা ছিল আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তাই কৃতজ্ঞতাটা শুধু আমার একার প্রাপ্য নয়।
নির্বাচনী খরচার যোগান এবং প্রাসঙ্গিক সাহায্য-সহযোগিতা দেবার জন্য যারা অগ্রণী হয়ে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন তাদের মধ্যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিয়াঁ নওয়াজ শরিফ এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী সুজাতের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তারা দুইজনই আমার মাধ্যমে আপনাকে সালাম এবং আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন। তারা আপনাকে পাকিস্তান সফরের নিমন্ত্রণও জানিয়েছেন। আমি মনে করি, আপনি সরাসরি এখান থেকেই এদের দুইজনকেই ফোনে কৃতজ্ঞতা এবং নিমন্ত্রণের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে দিন। দুইজনেরই ব্যক্তিগত সিকিওরড হট লাইনের ফোন নাম্বার আমার কাছে আছে। তিনি রাজি হলেন। পাশে রাখা রেড টেলিফোনটির দিকে ইশারা করে বললেন- মিলিয়ে দিন নাম্বার দুটো।
আমি দুটো নাম্বারই মিলিয়ে দিলাম। দু’জনের সাথেই স্বল্প আলাপের মাধ্যমে উষ্ণতার সাথেই শুভেচ্ছা বিনিময়, আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানালেন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
আলাপকালে নওয়াজ শরিফ তাকে আবারও সময়- সুযোগ মতো পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানালেন। আমি নীরব সাক্ষী হয়ে শুনলাম তাদের কথোপকথন। আলাপ শেষে তিনি খানিকক্ষণ কি যেন ভাবলেন। পরে বললেন একটা অনুরোধ করব? আমি জবাবে বললাম, নিশ্চয়ই।
আপনি সিনিয়র মিনিস্টার হয়ে আমার মন্ত্রিসভায় যোগদান করুন। প্রথমে টেকনোক্র্যাট কোটা থেকে,পরে বাই-ইলেকশনের মাধ্যমে নির্বাচিত করিয়ে নেবো। ঐ পদে অবস্থান করে আপনি আমাকে সার্বিকভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করবেন।আপনার অন্য সাথীরাও বিএনপিতে যোগদান করতে পারেন। আপনাদের মতো নিবেদিতপ্রাণ অভিজ্ঞ আস্থাভাজন সহকর্মীদের পাশে পেলে আমার ভীষণ সুবিধে হতো। দলে নিঃস্বার্থ, যোগ্য এবং নির্ভরযোগ্য বিশ্বস্ত লোকের প্রকট অভাব !
তার আচমকা এমন অপ্রত্যাশিত প্রস্তাব আমাকে হতবাক করে দিলো ! কেনও তিনি এই ধরনের একটা অগ্রহণযোগ্য প্রস্তাব করলেন ! এর পেছনে যুক্তি কি হতে পারে সেটাই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিলো। খালেদা জিয়া ভালভাবেই জানতেন সেনা পরিষদের বেঁচে থাকা শীর্ষ নেতারা সবাই মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকেই স্বাধীনতা উত্তরকালে ভারতের ষড়যন্ত্রমূলক নীলনকশা প্রতিহত করার জন্য সুচিন্তিত নীতি-আদর্শ ভিত্তিক সংগঠন গঠন করতে ব্রতী হয়েছিলেন বিধায় জাতীয় রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পরেছিলেন। তাদের সেই প্রচেষ্টা এবং রাজনীতির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছিলেন জেনারেল জিয়াউর রহমানও।
কিন্তু ১৫ই আগস্ট এবং ৭ই নভেম্বরের ঐতিহাসিক বৈপ্লবিক সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতার কেন্দ্রে অধিষ্ঠিত করার পর জেনারেল জিয়া সেনা পরিষদের রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে জাতীয় স্বার্থবিরোধী শক্তি আওয়ামী-বাকশালী এবং তাদের প্রভু ভারতের সাথে সমঝোতার রাজনীতি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং অতি নৃশংসতার সাথে সেনা পরিষদের ক্ষমতা খর্ব করায় লিপ্ত হন, এটা প্রমাণ করার জন্য যে ১৫ই আগস্ট ‘৭৫-এর বৈপ্লবিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের নেতৃত্ব প্রদানকারী সেনা পরিষদের সাথে তিনি সম্পৃক্ত নন। কিন্তু অতি অল্প সময়েই তিনি বুঝতে পারেন সেনা পরিষদের রাজনৈতিক দর্শন, লক্ষ্য এবং পরীক্ষিত সহযোদ্ধাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে তিনি মারাত্মক ভুল করেছেন। এই হঠকারিতায় তিনি নিজের ক্ষমতার ভিতকেই ধ্বংস করে ফেলেছিলেন।
ফলে তিনি দেখতে পান ঘরে-বাইরে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ধূমায়িত হয়ে উঠছে। বিশেষ করে সামরিক বাহিনীতে।
সেই সন্ধিক্ষণে তিনি তার দ্বিতীয়বার চীন সফর কালে সেনা পরিষদের সাহায্য প্রার্থনা করে অতীতের ভুলভ্রান্তি ভুলে গিয়ে আবার একত্রে রাজনীতি করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু সেই প্রস্তাব সেনা পরিষদের নেতৃবৃন্দের কাছে যুক্তিসঙ্গত কারণেই গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়নি। তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় তিনি সেনা পরিষদ এবং সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের প্রতি আরও প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে ওঠেন। নেমে আসে খড়গ। তার নিষ্ঠুর পাশবিকতায় সেনা পরিষদ সাংগঠনিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে।
কিন্তু এরপরও সেনা পরিষদের চেতনা ভিত্তিক সংগ্রামকে সম্পূর্ণ ভাবে স্তব্ধ করে দেয়া সম্ভব হয়নি। স্বৈরচারী এরশাদের পতন এবং খালেদার নির্বাচনে বিজয়ের ক্ষেত্রে পর্দার অন্তরালে সেনা পরিষদের অবদান খালেদার কাছে সেটাই প্রমাণ করেছিলো। ফলে তিনি শঙ্কিত হয়ে উঠেছেন।
তিনি হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন, যথাসময়ে প্রয়োজনে দেশ ও জনস্বার্থে জেনারেল জিয়ার আসল রূপ, এরশাদের পতনের পেছনে বিশেষ অবদান ছিল কাদের এবং তার নির্বাচনে বিজয় সম্পর্কে সত্য তথ্য একমাত্র সেনা পরিষদের শীর্ষ নেতাদের পক্ষেই প্রকাশ করা সম্ভব।তাই তিনি চেষ্টা করছিলেন ছলে-বলে-কৌশলে আমাদের তার অধীনস্থ করে রাখার। প্রধানমন্ত্রীর এ ধরনের চেষ্টা ছিল নিছক বাতুলতা মাত্র।
কারণ ‘৭১-এর মুক্তিসংগ্রাম কালে সব প্রতিকূলতার মোকাবেলা করে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যারা একটি গোপন সংগঠন গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন প্রকৃত অর্থে স্বাধীন, প্রগতিশীল, সমৃদ্ধশালী এবং সুখী এক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষে সেই প্রত্যাশার সাথে শুধুমাত্র ক্ষমতার লোভে জেনারেল জিয়া বিশ্বাসঘাতকতা করলেও শেণা পরিষদের অন্য ত্যাগী পরীক্ষিত কোনও সদস্যদের পক্ষেই তেমনটি করা সম্ভব ছিল না। জবাব দিলাম
ভাবী, আপনার অনুরোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়েই বলছি, বর্তমান অবস্থায় আপনার দলে যোগ দিলে কোনও পক্ষেরই বিশেষ লাভ হবে না। বরং আপনি আপনার ওয়াদা মতো মিথ্যা মামলার দায়ে সেনা পরিষদের অনেককেই এখনও যাদেরকে জেলবন্দী করে রাখা হয়েছে, তাদের আপনি মুক্ত করে দিন। একই সাথে বিদেশে যারা অবস্থান করছে তাদের স্বাধীন ভাবে দেশে ফিরে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিন। সেটাই হবে দেশ, জাতী এবং আপনার স্বার্থে সার্বিক বিবেচনায় বেশি ফলদায়ক।
মাঝপথে জেনারেল জিয়া আমাদের কাছ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেবার সিদ্ধান্ত নেন যদিও মূলত তার রাজনীতি আর আমাদের রাজনীতির মধ্যে তেমন কোনও দ্বন্দ্ব নেই। যেমন ধরুন, তার ১৯ দফা, এটাও কিন্তু সেনা পরিষদের কর্মসূচি থেকেই নেয়া।আমাদের শত্রুপক্ষ অত্যন্ত শক্তিশালী এবং সুসংগঠিত।তারা শুধু আওয়ামীলীগ নয়, কয়েকটি প্ল্যাটফর্ম থেকে নিজেদের সহংগঠিত করছে। আমাদেরও সমমনা দুই-তিনটি সংগঠন গড়ে তোলা উচিৎ। আমরা আপনার নির্ভরযোগ্য সহায়ক শক্তি হিসাবে জাতীয় শত্রু ভারতীয় সেবাদাসদের বাংলাদেশের মাটি থেকে সমূলে উৎখাতকরার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে সংগ্রাম করে যাবো।
সেনা পরিষদের নেতা-কর্মীদের প্রতিহিংসা পরায়ণ মনে করার কোনও কারণ নেই। ভাবী, আমি কিন্তু আন্তরিক ভাবেই বলছি, আমাদের আপনি প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করবেন না। আমাদের চিন্তা-চেতনা একই, শুধু লক্ষ্য হাসিলের পথটা ভিন্ন। অতীতের ভুল-ভ্রান্তি থেকে শিক্ষা নিয়ে সম্মুখে দেখতে হবে এবং ভবিষ্যতের জন্য ভাবতে হবে আমাদের। বিশেষ করে অতীতের তিক্ততা আমাদের ভুলে যেতে হবে ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং জাতীয়তাবাদী চেতনাকে সুসংহত করার স্বার্থেই। এই সম্পর্কে বিশদ আর কিছু বলতে চাই না। কারণ, সংগঠন হিসাবে সেনা পরিষদ এবং এর নেতৃবৃন্দের নীতি-আদর্শ সম্পর্কে আপনি নিজেও বিশেষ ভাবে অবগত আছেন বলেই আমার বিশ্বাস। আপনি আজ দেশনেত্রী হিসাবে আখ্যায়িত, রাজনীতি সম্পর্কে জ্ঞান দান করার মতো বিজ্ঞজনের অভাব আপনার নেই। তারপরও কয়েকটা কথা বলতে চাই যদি কিছু মনে না করেন।
বলুন।
ক্ষমতার কেন্দ্রে বসে কারো পক্ষেই বৃহত্তর বঞ্চিত ও শোষিত জনগোষ্ঠীর স্বার্থে কোনও দল কিংবা ত্যাগী নিঃস্বার্থ কর্মীবাহিনী গড়ে তোলা অতীতে কখনো সম্ভব হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না। এটাই ঐতিহাসিক বাস্তবতা।
নীতি-আদর্শ ভিত্তিক সংগঠন এবং কর্মীবাহিনী গড়ে তুলতে হয় সংগ্রামের মাধ্যমে। নানা মতের নানা পথের লোকজনদের নিয়ে একটি মোর্চা গঠন করা সম্ভব, তবে সাংগঠনিক ভাবে সেই মোর্চা দল হিসাবে কখনোই বলিষ্ঠ ভাবে গড়ে উঠতে পারে না অভ্যন্তরীণ মতবিরোধের কারণেই। ক্ষমতার লোভে যারা ভিড় জমায় তারা যে সবাই সুযোগ সন্ধানী সেটার অভিজ্ঞতা ইতিমধ্যেই আপনার হয়েছে। বিগত নির্বাচনে বিএনপি বিজয় অর্জন করেছে সাংগঠনিক শক্তির বলে নয়। দেশের জনগণের বৃহত্তর অংশ বিএনপিকে নয়, ভোট দিয়েছে আপনাকে। কারণ, তারা আপনার মাঝে খুঁজে পেয়েছিলো স্বৈরাচার, ভারত বিরোধী জাতীয়তাবাদ এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের পক্ষে আপোষহীন একজন সংগ্রামী নেত্রী।
কিন্তু রাষ্ট্রপরিচালনার ক্ষেত্রে আপনাকে আপনার দল কিংবা মোর্চার নেতা-কর্মীদের উপরই নির্ভরশীল হতে হবে। ফলে আপনাকে অনেক ক্ষেত্রেই বাধ্য হয়ে আপোষ করতে হবে। এই ভবিতব্যকে মেনে নেয়া ছাড়া আপনার গত্যন্তর নেই। এই বাস্তবতার নিরিখে একজন বিচক্ষণ দূরদৃষ্টি সম্পন্ন দেশপ্রেমিক হিসেবে আপনার দল ছাড়াও সমমনা আরও দুয়েকটা দল গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা আপনাকে অবশ্যই বুঝতে হবে।এই উদ্যোগ গ্রহণ না কোরলে বিদেশের তল্পিবাহক জাতীয় বেইমানদের শিকড়শুদ্ধ বাংলাদেশের মাটি থেকে উপড়ে ফেলে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও ধর্মীয় মূল্যবোধ ভিত্তিক রাজনীতিকে রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সর্বস্তরে প্রোথিত করা সম্ভব হবে না। ফলে সময়ের ধারায় বাংলাদেশ পরিণত হবে ভারত নির্ভরশীল একটি করদ রাজ্যে। আর দেশবাসী আবদ্ধ হবে গোলামীর জিঞ্জিরে যার নাগপাশ থেকে মুক্তি লাভ করাটা হয়ে উঠবে দুরূহ এবং সুদূর পরাহত।
রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের এমন অপ্রত্যাশিত করুণ পরিণতির দায় থেকে কেউই রেহাই পাবেন না যারা রাষ্ট্রীয়ক্ষমতা এবং ক্ষমতা বলয়কে নিয়ন্ত্রণ করবেন। সমাজপতিদেরও একই ভাবে এই দায়ভার বহন করতে হবে সমষ্টিগত ব্যর্থতার মাশুল গুণতে।
বেগম জিয়া মনোযোগ দিয়েই শুনছিলেন আমার কথা, কিন্তু এর কোনও প্রভাব তার উপর পড়েছিলো কিনা সেটা বোঝা গেলো না। কারণ, এই বিষয়ে তিনি কোনও মন্তব্য কিংবা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত না করে কথার মোড় ঘুরিয়ে দিলেন।
আমার একজন যোগ্য, সৎ,বিশ্বাসযোগ্য প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি এবং পিএস এর প্রয়োজন। বেশ কয়েকজন আমলার নাম দেয়া হয়েছে আমাকে। তার মধ্যে প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি হিসাবে ডঃ কামাল সিদ্দিকি এবং পিএস হিসাবে সাব্বিহউদ্দিনের নামও রয়েছে। শুনেছি এই দু’জনকেই আপনি ঘনিষ্ঠ ভাবে চেনেন। যদি আমার খবরটা সঠিক হয় তবে তাদের সম্পর্কে আপনার মতামত জানতে চাই।
প্রশ্নটা সরল হলেও এর পেছনে কনও উদ্দেশ্য থাকলেও থাকতে পারে। তাই একটু ভেবে নিয়ে জবাব দিলাম
কামাল সিদ্দিকির সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয় ১৯৭১ সালে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসে কোলকাতায় পৌঁছানোর পর। কালুরঘাট থেকে বেতারে মেজর জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণায় সাড়া দিয়ে নড়াইলের SDO হিসেবে বিদ্রোহ করে সে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করে। পাকিস্তান আমলের বিদ্রোহী CSP অফিসারদের মধ্যে নুরুল কাদের খান, কামাল সিদ্দিকি এবং তৌফিক এলাহী চৌধুরী এই তিনজনই মুজিবনগর অস্থায়ী সরকারের সচিবালয়ে যোগদানের পরিবর্তে সেক্টরে যুদ্ধ করার অনুমতি চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছিলেন। কামাল ও তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু বেনু(ঢাকা ভার্সিটির লেকচারার) তখন বনগাঁয়ে ১ম ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের ছাউনিতে ক্যাপ্টেন হাফিজের সাথে অবস্থান করে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলো। আমিও তখন ক্যাপ্টেন হাফিজকে সাহায্য করছিলাম ১ম ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট এর পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ায়। এই সুবাদেই কামাল সিদ্দিকি আর বেনুর সাথে আমার পরিচয় ঘটে। ট্রেনিং শেষে তাদের পাঠিয়ে দেয়া হয় ৮নং সেক্টরের অধীন গোজাডাঙ্গা সাব সেক্টরে কমান্ডার ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিনের কাছে।
অল্প সময়ের ব্যবধানে শুধুমাত্র তৌফিক এলাহীর আবেদন মনজুর করেন প্রবাসী সরকার। ফলে বাকিরা বাধ্য হয় সচিবালয়ে যোগদান করতে।
কামালকে প্রবাসী সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমেদের পিএস হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়। সুনামগঞ্জের বিদ্রোহী SDO আকবর আলী খানের (খসরু মামা) ইচ্ছাতেই কোলকাতায় নিম্মির বাবা জনাব আর আই চৌধুরীর বাসাতেই কামালের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কামালের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসাবে দ্বিধাহীন ভাবে বলতে পারি, রাজনৈতিক ভাবে সচেতন কামাল একজন দেশপ্রেমিক মেধাবী দক্ষ আমলা। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতাও রয়েছে কামালের।
১৫ই আগস্ট বিপ্লবের পর প্রেসিডেন্ট মোশতাকের সেক্রেটারি হিসাবে তাকেই নিয়োগ করা হয়েছিলো। সার্বিক বিবেচনায় আপনি যদি কামালকে প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি হিসাবে বেছে নেবার সিদ্ধান্ত নেন কিংবা ভেবে থাকেন, তাহলে তার জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, সততা, নিষ্ঠা, বিশ্বাসযোগ্যতা এবং কর্মদক্ষতা থেকে আপনি উপকৃতই হবেন বলেই আমার বিশ্বাস।
সাব্বিহউদ্দিন আমার ছোটভাই স্বপনের বন্ধু সায়েলের বড়ভাই। হংকং-এ সাব্বি আমার ফার্স্ট সেক্রেটারি হিসাবে কাজ করেছে। সাব্বি আমাকে ডালিম ভাই বলেই সম্বোধন করে থাকে ঘনিষ্ঠতার কারণে। কামালের মতোই তার চারিত্রিক গুণাবলী এবং পেশাগত যোগ্যতা প্রশ্নাতীত। সাব্বিও রাজনৈতিক ভাবে সচেতন দেশপ্রেমিক। সাব্বি একজন পড়ুয়া দক্ষ আমলা। তাকেও আপনি পিএস হিসাবে বেছে নিলে কামালের মতো একইভাবে উপকৃত হবেন। অনেক দেরি হয়ে যাওয়ায় উঠে দাঁড়িয়ে বললাম, অনুমতি দিলে আমি তবে আসি।
বেগম জিয়া গাড়ী বারান্দা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, কবে ফিরে যাচ্ছেন?
অনেক দিন পর দেশে আসার সুযোগ পেলাম। যদি অনুমতি দেন তাহলে সপ্তাহ দুয়েক আত্মীয়-স্বজনদের সাথেকাটিয়ে যেতে চাই।
ঠিক আছে তবে তাই করুন, আমি মুস্তাফিজকে (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) বলে দিবো। আপনি সুবিধামতো সময়ে মিনিস্ট্রিতে গিয়ে ফর্মালিটিজগুলো সেরে নেবেন।
অনেক ধন্যবাদ, আপনার অনেক মুল্যবান সময়ের অপচয় করে গেলাম।
আচ্ছা, খোলামেলা আলাপ করে ফিরে যাবার আগ মুহূর্তে এ ধরনের লৌকিকতা কিংবা শিষ্টাচার প্রদর্শনের কনও প্রয়োজন ছিল কি?
ঠিক সেই মুহূর্তে প্রশ্নটার উদ্দেশ্য বোধগম্য না হওয়ায় জবাব দিলাম
হয়তো ছিল না। তবুও রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনার প্রতিটি মুহূর্তই মূল্যবান।
তা হতেই পারে, আমি কিন্তু আপনাদের বাসায় দাওয়াত করেছিলাম খোলামেলা আলাপ করার জন্যই। সেই ক্ষেত্রে এই ধরনের ফর্মালিটির কনও প্রয়োজন ছিল না বোধ করি। আন্তরিকতার সাথেই কথাগুলো বলেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া।
কথা না বাড়িয়ে বাসায় ফিরে এলাম।
বাসায় ফিরে দেখি খাওয়ার পাট চুকিয়ে পানের আড্ডায় সবাই মশগুল। আমি হাজির হতেই সবাই ছেঁকে ধরলো, এতক্ষণ ধরে কি আলাপ করে এলাম প্রধানমন্ত্রীর সাথে! নিম্মি টিপ্পনী কেটে বললো, অনেকদিন পর অতিচেনা প্রিয় দর্শনী ভাবীর সাথে একান্ত সাক্ষাৎকার বলে কথা ! তার উষ্ণ সান্নিধ্যে পুরনো দিনের স্মৃতি রোমন্থন করছিলেবুঝি?
ঠিক তা নয়। তবে তিনি জানতে চেয়েছিলেনতুমি সঙ্গে নেই কেনও? তার সাফাই দিতেই তো অনেকক্ষণ লেগে গেলো। তোমার শারীরিক অসুস্থতার বিষয়টি বিবেচনা করে ভাবী দুই সপ্তাহের ছুটি মনজুর করলেন।
অবাক হয়ে নিম্মি বললো, আমার অসুস্থতা!
হ্যাঁ, সেই অজুহাতটাই আমাকে দিতে হয়েছিলো অনেকটা অপারগ হয়েই। আসল কারণটা বলা কি উচিৎ হতো?
সবাই হেসে উঠে বললো
ভালই হলো, হৈ হুল্লোড় করে দুটো সপ্তাহ কাটানো যাবে।
নিম্মি, তোমার বদ্দা কামাল সিদ্দিকিকে ফোনে মিলাও, ওকে একটা সান্টিং দিতে হবে। নিম্মি ফোনে কামালের সাথে যোগাযোগ করে আমাকে রিসিভারটা দিলো।
কিরে ব্যাটাচ্ছেলে, কেমন আছিস?
তোর সাথে কথা বলার ইচ্ছে নেই, তোরা ঢাকায় এসেছিস এই খবরটা আমাকে অন্যের কাছ থেকে জানতে হয় কেনও? ব্যাপারটা খুবই অপমানজনক!
দুপুরের আগে পৌঁছাতেই রাতে ডাক পড়লো মইনুল রোডে রাতের খাবারের দাওয়াতে। সেখান থেকে এইমাত্র ফিরেই ফোন করছি।
কিব্যাপার?
কনও ব্যাপার নেই।
তুই চেপে যাচ্ছিস।
আমি না তুই?
মানে?
মানেটা অত্যন্ত সরল। তোমার দীর্ঘদিনের লালিত বাসনা, খালেদা জিয়ার সাথে ঘনিষ্ঠ ভাবে কাজ করার। সেই বাসনা মেটানোর সব ব্যবস্থাই জানলাম তলে তলে ইতিমধ্যেই ঠিক করে ফেলেছিস।
কি করে জানলি?
উচ্চমার্গে উড়ন্ত বাজপাখির শ্যেনদৃষ্টি এড়ানো যে প্রায় অসম্ভব সেটা তোমার মতো পণ্ডিত এবং চতুর আমলার না জানার কথা নয়। তা যাই হউক, তোকে প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি আর সাব্বিকে পিএস হিসাবে নিয়োগ দানের ব্যাপারে আমার অভিমতটা কিন্তু তোমাদের ম্যাডাম জেনে নিয়েছেন।
তাই বুঝি, তুই কি বললি?
যতটা প্রাপ্য নয় তার চেয়ে কিছুটা বাড়িয়ে বলে ঘনিষ্ঠ বন্ধুর দায়িত্ব পালন করেছি। তাই দুশ্চিন্তার কারণ নেই। তোর স্বপ্ন সফল হবে।
আমার কথা শুনে নিম্মি আমার হাত থেকে রিসিভারটা নিয়ে বললো
তাহলে তো পুরো প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়টাই আমাদের কব্জায় চলে আসবে তাইনা বদ্দা?কি ব্যাপার আপনি তো দেখছি কিছুই বলছেন না! বুঝতে পেরেছি, পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর আপনারা দুই জনই হয়ে উঠবেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তেমনটি হলে আমরা মোটেও অবাক হব না মনে রাখবেন।
আমি নিম্মির কাছ থেকে রিসিভার নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম
Jokes apart, বলতো কামাল, ঐ পদটাতে তোর এতো মোহ কেনও? ডাচ সাংবাদিক পিটার কুস্টারকে কেন্দ্র করে ৭ই নভেম্বরের পর জিয়াউর রহমানের সাথে ভুল বুঝাবুঝির কারণে তুই ৩-৪ মাস যশোরে হক ভাইয়ের শেল্টারে ভাগোরা ছিলি। এরপর সারেন্ডার করে কিছুদিন নাজিমুদ্দিন রোডের লাল দালানে থাকতে হয়েছিলো। সেই ঘটনার সাথে এই সিদ্ধান্তেরসম্পর্ক নেই তো? কামাল কোনও জবাব দিলো না, তবে বিব্রত বোধ করছিলো। আমি ঠিকই বুঝে নিয়েছিলাম, যোগসূত্র রয়েছে। রাত অনেক হওয়ায় বাক্যালাপ বন্ধ করার পর সেদিনের মতো আমাদের সভা সাঙ্গ হল।
আমাদের ছুটি ভালোই কাটছিলো। বন্ধু-বান্ধবদের পার্টি, আউটিংস, আত্মীয়-স্বজনদের দাওয়াত, ঘরোয়া আড্ডায় সময় অতি দ্রুত গড়িয়ে চলেছে।

সূচীপত্র  [প্রতিটি পর্বে্র নীচে ক্লিক করলেই সেই পর্বটি পাঠ করতে পারবেন]

১ম পর্ব   “জিয়া থেকে খালেদা তারপর” – লেখকের কথা

২য় পর্ব  শ্রদ্ধেয় মওলানা ভাসানীর সাথে শেষ সাক্ষাত

৩য় পর্ব দ্বিজাতি তত্ত্ব

৪র্থ পর্ব –  কিছু বিভ্রান্তি এবং অপপ্রচারের জবাব

৫ম পর্ব – সত্য কহন

৬ষ্ঠ পর্ব – ব্যাংককে আমরা

৭ম পর্ব – বঙ্গভবনে কি হচ্ছিল রাত ১২ টায়!

৮ম পর্ব – বন্দীত্ব থেকে মুক্ত করা হলো জেনারেল জিয়াকে

৯বম পর্ব – “সংঘর্ষের পথে জিয়া”

১০ম পর্ব – খন্দকার মোশতাকের বিশেষ দূত হিসেবে এলেন সাদ্রে ইস্পাহানী

১১তম পর্ব – শিশু ভাই এলেন ব্যাংককে

১২তম পর্ব  – নিজেদের আলোচনা

১৩তম পর্ব  ১ম কিস্তি   – রাষ্ট্রীয় অতিথি হয়ে লিবিয়ার পথে

১৩তম পর্ব – ২য় কিস্তি- রাষ্ট্রীয় অতিথি হয়ে লিবিয়ার পথে

১৪তম পর্ব –  বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জমির এলেন সস্ত্রীক

১৫তম পর্ব – এভিএম তোয়াব আসছেন

১৬তম পর্ব  –  শিশুভাইকে বেনগাজীতে আসার অনুরোধ

১৭তম পর্ব  –  ১ম কিস্তি – জিয়ার ডাকে ঢাকার পথে

১৭তম পর্ব – ২য় কিস্তি

১৭তম পর্ব –  ৩য় কিস্তি

১৭তম পর্ব –  শেষ কিস্তি

১৮তম পর্ব –  বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর ইতিহাস

১৯তম পর্ব –  জেনারেল মনজুরের সাথে বৈঠক

২০তম পর্ব – লন্ডন হয়ে ফিরলাম বেনগাজীতে

২১তম পর্ব – ঢাকা হোয়ে পিকিং-এর উদ্দেশ্যে যাত্রা

২২তম পর্ব – বাংলাদেশে নীতি বিবর্জিত কুটুম্বিতার রাজনীতির রূপ

২৩তম পর্ব –  জিয়ার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে

২৪তম পর্ব –  রাষ্ট্রপতি হিসাবে জিয়ার গণচীনে দ্বিতীয় সফর

২৫তম পর্ব  –  আব্বার উপস্থিতিতে প্রথম রাতে জেনারেল জিয়ার সাথে আমার বৈঠক

২৬তম পর্ব – দ্বিতীয় বৈঠক

২৭তম পর্ব – জিয়ার নিযুক্ত সেনাপ্রধান জেনারেল এরশাদের চীন সফর

২৮তম পর্ব – চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে আসার পর রাষ্ট্রপতি জিয়ার প্রতিক্রিয়া

২৯তম পর্ব  –  চীন থেকে লন্ডনে নির্বাসন কালে

৩০তম পর্ব  –  জেনারেল মঞ্জুরের ব্যর্থ অভ্যুত্থান, জেনারেল এরশাদের ক্ষমতা দখল

৩১তম পর্ব  – নিউইয়র্কের পথে জেনারেল এরশাদের সাথে লন্ডনে সাক্ষাৎ

৩২তম পর্ব – খালেদা জিয়া হলেন বিএনপির চেয়ার পার্সন

৩৩তম পর্ব – জেনারেল এরশাদের প্ররোচনায় রশিদ-ফারুক বানালো ফ্রিডম পার্টি

৩৪তম পর্ব – ১ম কিস্তি – এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের ক্রান্তিকালে খালেদা জিয়ার পাশে সেনা পরিষদ

৩৪তম পর্ব – এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের ক্রান্তিকালে খালেদা জিয়ার পাশে সেনা পরিষদ

৩৪তম পর্ব – এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের ক্রান্তিকালে খালেদা জিয়ার পাশে সেনা পরিষদ-শেষ কিস্তি

৩৫তম পর্ব – ১৯৯১-এর নির্বাচনে খালেদা জিয়ার বিজয়ে সেনা পরিষদের অবদান – ১ম কিস্তি

৩৬তম পর্ব – ১৯৯১-এর নির্বাচনে খালেদা জিয়ার বিজয়ে সেনা পরিষদের অবদান  – শেষ কিস্তি পেশাওয়ারের পথে

৩৭তম পর্ব – ফিরে এলাম নাইরোবিতে

৩৮তম পর্ব – নব নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার পথে যাত্রা 

৩৯তম পর্ব – ঢাকায় পৌঁছালাম

৪০তম পর্ব –  ১ম কিস্তি – প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে খালেদা জিয়ার সরকারের পাশে সেনা পরিষদ

৪০তম পর্ব – প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে খালেদা জিয়ার সরকারের পাশে সেনা পরিষদ – ২য় কিস্তি

৪০তম পর্ব – প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে খালেদা জিয়ার সরকারের পাশে সেনা পরিষদ- শেষ কিস্তি

৪১তম পর্ব – রুহানী জগতের আর এক সূফি সাধকের সান্নিধ্যে

৪২তম পর্ব – আমাকে আবার খালেদা জিয়ার জরুরী তলব

৪৩তম পর্ব – ব্যাংকক ট্রানজিট লাউঞ্জে

৪৪তম পর্ব – হংকং হয়ে বেইজিং – ১ম কিস্তি

৪৪তম পর্ব –  হংকং হয়ে বেইজিং – শেষ কিস্তি

৪৫তম পর্ব – হংকং হয়ে ফিরলাম ঢাকায়

৪৬তম পর্ব – গোপনে আমেরিকা সফর

৪৭তম পর্ব – আবার ঢাকায়

৪৮তম পর্ব – নাইরোবিতে প্রত্যাবর্তন

৪৯তম পর্ব – দেশে ফিরলাম

৫০তম পর্ব – নিরুদ্দেশে যাত্রা

৫১তম পর্ব – ২৮শে জানুয়ারি ২০১০ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ

৫২তম পর্ব – দেশের সূর্যসন্তান বীরদের ফাঁসিতে বিএনপি এবং জামায়াতের
প্রতিক্রিয়া

৫২তম পর্ব -দেশের সূর্যসন্তান বীরদের ফাঁসিতে বিএনপি এবং জামায়েতের
প্রতিক্রিয়া  –  শেষ কিস্তি

৫৩তম পর্ব – বিশ্বায়নের মোজেজা, রাষ্ট্র ও ধর্ম – ১ম কিস্তি

৫৩তম পর্ব – বিশ্বায়নের মোজেজা, রাষ্ট্র ও ধর্ম – শেষ কিস্তি

৫৪ তম পর্ব – শেষকথা

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *