দাসত্বের দিনরাত্রী

শক্তিকে আমরা পুঁজা করি। শক্তিকে আমরা ভয় পাই। আমরা যখন প্রার্থনা করি তখন ইশ্বরের কাছে মনোবল প্রার্থনা করি।  কোন রকম শক্তি না থাকলেও একে অন্যের উপরে ক্ষমতায়ণ করা যায় নানা কারণে।

তার মানসিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে
তার শারীরিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে
তার আর্থিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে
তার সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে
তার ভাল ও কল্যানকামী মনের সুযোগ নিয়ে

খুব সম্ভবত জসীমুদ্দিনের লেখা (মনে করতে পারছিনা) এক লোক হাট থেকে বাসায় ফিরছিল। হাতে চাল ডাল ছিল। হোচট খেয়ে পড়ে গেলে তার হাতের চাল ডাল মাঠের মধ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। এর পরে যে মানুষটি সেই পথ দিয়ে যাচ্ছিল সে এই চাল ডাল ছিটিয়ে থাকতে দেখে সম্ভবত হাতের মুলাটাও রেখে আসে এই ভেবে যে এখানে দেবতাকে প্রাসাদ দেওয়া হয়েছে। এর পরে যে লোকটি সেখান দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল সে সেখানে একটা লাল গামছা টাঙিয়ে বসে যায় ।

প্রথম ব্যক্তিটি হোচট খেয়েছিল অন্যমনস্ক ছিল সেজন্য।
দ্বিতীয় ব্যাক্তিটি মন দুর্বল এবং অলৌকিকতাই বিশ্বাসী (দোষের কিছু নয়) সুতারাং সে অদৃশ্য দেবতার পূজাই তার মূলাটি নিজের খাদ্যে ঘাটতি সৃষ্টি করে ফেলে রেখে গেল এই ভেবে যে দেবতাতে সন্তুষ্টিতে এই রকম অনেক মূলা খাইবার সুযোগ আসবে আগামীতে
আর যে লাল কাপড় টাঙ্গিয়ে বসে গেল সে অন্যের দুর্বল মন ও আবেগের যুযোগের সদব্যবহার করে কোন রকম পরিশ্রম না করেই জীবিকা নির্বাহের একটি পথ খুঁজে পেলো
বাংলাদেশের চট্রগ্রামের পাহাড়ে পাহাড়ে এমন অনেক পীর ফকিরের আস্তানা আছে। যেখানে মানুষের আবেগ ও ভালবাসা ক্যাশ করে অনেকেই ধান্দাবাজির করে চালিয়ে দিচ্ছে কত কত যুগ ধরে

মুলত সব কিছুই ব্যনিজ্য । পেট আর পেটের নীচে ক্ষুধা যতদিন থাকবে ততদিন মানুষ এই ক্ষুধা নিবারণের জন্য খাবার যোগাড় করার তাগিদে নানা ধরনের কর্মকান্ড চালিয়ে যাবে যার যার ক্ষমতা, মেধা, চাতুর্য, কূটকৌশল, শিক্ষা দীক্ষা ব্যবহার করে।

লাটিন আমেরিকাতে খুব সহজেই ইংরেজরা তাদের সকল সম্পদ লুট করতে পেরেছিল কারণ ল্যাটিন আমেরিকার বেশীরভাগ দেশেই মানুষ অদৃশ্য ইশ্বরকে কল্পনা করে নিয়ে মূর্তি তৈরি করে পুজা করতো। ইংরেজের জাহাজ যখন তীরে আসে তখন ওরা ভাবে – আহা! এতদিনের পুজা বুঝি ইশ্বরের কানে পৌছে গেছে । ইশ্বর নিজেই এসেছেন সাক্ষাৎ দিতে। ইংরেজেরা সাথে করে ধর্মযাজক নিয়ে যেতো। সবাইকে খ্রিষ্টান বানিয়ে, সব সম্পদ লুট করে, জাহাজ ভর্তি করে সম্পদ নিয়ে ইংরেজেরা  ফিরে আসে । যারা বাঁধা দিয়েছিল তাদের হত্যা করে রাস্তার মাঝখানে ঝুলিয়ে রাখে যাতে কেউ আর প্রতিবাদ করতে সাহস না পায়।

টেরোরিজম বা সন্ত্রাসের জনক হলো উপনিবেশিক শক্তিগুলো। এরা যখন অন্য দেশে যেয়ে সেই দেশের সম্পদ লুট করতো তখন নানা রকমের কৌশল অবলম্বন করতো। মগজ ধোলাই, অলৌকিক কোন কিছু পাবার আশ্বাস, ভয়ভীতি প্রদর্শণ, সরাসরি বল প্রয়োগ , অকথ্য নির্যতন ইত্যাদি সন্ত্রাস তারাই করেছে যারা লুট করতে এসেছে। এবং এই সন্ত্রাসের অপবাদ তাদের উপর দিয়েছে যাদের সম্পদ লুট হয়ে গেছে।

সেপ্টেম্বর এগারোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ধবংস করা হয় ভেতরে পোত্থিত বোমা দিয়ে। আর প্লেনগুলোকে বিল্ডিং এর ভেতর ঢুকিয়ে দেওয়া হয় রিমোট কন্ট্রেলের মাধ্যমে। বিল্ডিংএর ভেতর প্লেন যেয়ে বিল্ডিং ধবংস করেনি, বোমা এক্সপ্লোড করে বিল্ডিং ধবংস করা হয়েছিল। বিন লাদেন ও তার সংগীদের গল্প তৈরি হয়েছিল অনেক আগেই। পেন্টাগনের এই কাল্পনিক ড্রামা করা হয়েছিল

চারটি কারনে

বিশ্বের তেল ও খনিজসম্পদশালী দেশগুলোতে বসবাসকারী মানুষেরা বেশীরভাগই ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী
তাদের কপালে “টেরোরিস্ট বা সন্ত্রাসী” রাবার স্টাম্প মেরে দিলে কেয়ামত পর্যন্ত তা থেকে যাবে যেহেতু পুঁজিপতিদের হাতে রয়েছে মিডিয়া, আগ্নেয়াস্ত্র, কূট কৌশল, পূঁজি তথা ক্ষমতা। সম্পদ লুটে বাধাপ্রদানকারী স্থানীয় অধিবাসীদের কপালে যদি “টেরোরিস্ট” মোহর লাগিয়ে দেওয়া যায় তাহলে বাকীগুলাকে মোসাহেব, দালাল, দাস হিসাবে নিয়জিত করলে বাঁধা বিপত্তিহীন লুটপাট করা যাবে।

ইরাকের তেল এবং ইরানকে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসার অব্যহত প্রচেষ্টাকে ত্বরান্বিত করা আর বাদবাকী দেশগুলোর খনিজ সম্পদ হরফ এবং ধবংস করা ( ইরাকের পরেই লিবিয়ার তেলের উপরে কব্জা করা হয়েছে তারপর সিরিয়া আর পালেস্টাইনের জমি তো মোটামুটি সবই ইসরায়েলের দখলে, ক্যাম্পে কিছু পালেস্টিনিয়ান আছে। ওদেরকে নিয়মিত কার্পেট বোম্বিং করে হত্যা করা হচ্ছে)
আফগানিস্তানের নীচে দিয়ে তেল  পরিবহনের জন্য ট্যানেলের কাজ সমাপ্ত করা এবং আফগানিস্তানের খনিজ সম্পদ লুট করা
পাকিস্তানের খনিজ সম্পদ লুট করা

ফিরে আসি slave Ship এ  ।

আয়শা মেহের
সম্পাদিকা
প্রবাসনিউজ২৪
টরেন্টো, কানাডা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.