নারী যদি ঘর থেকে বেরোয়, নারী যদি প্রগলভা হয় তার সাথে ঘরের বউ মিশলে পুরুষ আতঙ্কিত হয়। পাছে তার সুরক্ষিত খাঁচার পাখি ডানা ঝাপটায়, উড়াল দেয়। যদিও সেই স্বামী চায় ঘরের বউ হোক নির্বাক, গৃহকর্মী, ভার্চুয়াল অজ্ঞ, সিরিয়াল দেখুক আর ঘরকন্নায় মনোযোগি আর ভার্চুয়াল প্রেমের/কামের জন্য সে খুঁজে ফেরে এই ধরণের জ্ঞানী, সুন্দর, খলখলিয়ে হাসা মেয়েদের। যারা লেখায় পারদর্শী, অনেকটাই ফ্রিভাবে চলাচল করে। তেমনই ফেসবুকের বিশ্বপ্রেমিক যারা প্রোফাইলে পারিবারিক কোন বউবাচ্চাদের ছবি পারতপক্ষে দেয়না, ইনবক্সে একইসময় বিচ্ছিন্নভাবে নানান নারীর কাছে ইনিয়েবিনিয়ে প্রেমপ্রস্তাবনা পাঠায়। প্রায় দুই বছর আগে তেমনি এক রোমিও আমাকে ইনবক্সে নানান ভাবে তার ভাললাগার গুণগান গাইতো, দেখা করতে চাইতো। গ্রুপে উলটাপালটা লেখা দেয়ায় দিলাম একদিন ব্লক করে।
একদিন কয়েকজন বন্ধু ঘুরতে গিয়ে এই রোমিও প্রসঙ্গ উঠলো, আমিও বললাম হ্যাঁ আমাকেও তো নানানভাবে প্রেম নিবেদন করতো। তখন সেই গ্রুপের অধিকাংশ মেয়েরাই বললো দিদি আমাকেও এই ধরনের মেসেজ দিত, দেখা করার জন্য অনুরোধ করতো।
মাথায় তখন চিন্তা এলো আচ্ছা সবাই মিলে এই লোকরে বলদ বানালে কেমন হয়?
যেই ভাবা সেই কাজ। তখন সবাই তার সাথে সম্পর্ক রিফর্ম করলাম, তার ব্লক খুলে দিলাম। সেতো মহাখুশিতে বাকবাকুম করা শুরু করলো, আরো একধাপ সরস কথাবার্তা শুরু করলো সবার সাথে, প্রেমের ডায়ালগে তার কোনই ক্লান্তি নেই, বুঝলাম এই ২ বছরে আরো ম্যাচিউরড হয়েছে।
গতকাল ছিল সেই বিশ্বপ্রেমিকের মুখোশ খোলার দিন। আগেই তার সাথে দেখা করার দিন ঠিক করলাম-কোথায়, কয়টায় আমরা বসবো। ঠিক হলো ধানমন্ডি মীরপুর রোডের হটহাটে। সবাইকে বলে দিলাম আমি আগে যাব, ১০/১৫ মিনিট পরে তারা গ্রুপে আসবে। যাদের যাদের সে নাজেহাল করেছে পারলে তাদেরও নিয়ে আসবে।?
আমি অফিস থেকে বেরিয়ে সোজা বাসে করে হটহাটে চলে গেলাম, দেখি রোমিও নেই। সে আবার ফুটব্রিজের কাছে তীর্থের কাকের মত ১৫ মিনিট ধরে অপেক্ষা করছিল আমারই তাতো জানিনা ! আমি সিগনালে আগেই নেমে রাস্তা ক্রস করে চলে এসেছিলাম। ফোন দিলাম, সে ২ মিনিটে ঢুকে বললো আরে আমিতো ব্রিজেই দাঁড়িয়েছিলাম, তুমি কোনদিক দিয়ে এলে?
যাক আমরা কথা বলছি , সে খুব স্ট্রংলি বলছে, জীবনে এই বয়সে এসে প্রেমে পড়ে যাব ভাবিনি। তুমি ছাড়া আমি কখনই আর কারো সাথেই প্রেম করিনি, তোমাকে ২ বছর ধরে আমি খুব পছন্দ করি। তোমার সব লেখা আমি দেখি।
আমি বললাম আসলে আমি তো তোমাকে কখনো বলিনি আমি তোমাকে পছন্দ করি , বলেছি?
বললো না বলোনি কিন্তু আমি বুঝি। আমি বললাম কিভাবে? এমন কোন কথা কি কখনো বলেছি যে সেটাতে প্রেমের ছোঁয়া আছে?
ইতোমধ্যে দেখি তার সব নায়িকারা এসে হাজির, এর মধ্যে একজন আবার তার মেয়েও নিয়ে এসেছে যাতে সে ভাবে এরা অকস্মাৎ এসে দেখা হয়েছে। আমিও ভান করলাম তাই। তখন সবাই মিলে আরো টেবিল যুক্ত করা হলো । আমরা স্যূপ আর মম নিয়েছিলাম শুরুতেই। তখন সবাইকেই তাই দিতে বললাম। আসলে প্ল্যান ছিল এই প্রেমিক যদি পালিয়েও যায় লজ্জায় তাহলে আমরা নিজেরাই পেমেন্ট করবো।
এইবার আমি বললাম Shaheed Shaheen ভাই অনেকদিন ধরে প্রেম করতে চাচ্ছে তাই আমি তার সাথে প্রথম আজ দেখা করতে এলাম। তখন একে একে সবাই একই কথা বললো , এবং সবার স্ক্রিনশন দেখালাম। তার মুখে সাঁই করে কে যেন কালি মেখে দিল, মমর জায়গায় মম পড়ে রইলো। বিশাল ধরা। জীবনে এই প্রথম পরম শান্তি পেলাম এক চিটার বনাম বিশ্বপ্রেমিকের মুখোশ খুলতে পেরে, বয়স হয়ে গেছে তার কিন্তু প্রেমরোগ সারেনি।
বেশ কিছুদিন আগে এক মেয়ে তার বয়স্ক প্রেমিকের স্ক্রিনশট দিয়েছে বলে ফেবুতে তার পক্ষে সাফাই গাওয়ার চেয়ে তার বিরুদ্ধে নানান মন্তব্য পড়ে খুবই মর্মাহত হয়েছিলাম। আমি তার হয়েই এই মহান দায়িত্বটা পালন করলাম।
এই বয়স্ক প্রেমিকদের সাথে কিছু বিবাহিত/ সিঙ্গেল নারীও ফেসবুকে এই ধরণের কাজ করে এটাও নিশ্চিত তবে তার সংখ্যা সীমিত। আর এই মেয়েরা করে আসলে প্রেমের চেয়েও টাকার জন্য। এটা অবশ্যই খুবই গর্হিত কাজ। যার কারণে তাদের সাথে আমার বন্ধুত্বই ভেঙ্গে গেছে যখন তাদের এই চরিত্র জানতে পারলাম।
তবে কিছু মেয়ে এই কাজ করলে আমাদের ভেতর কিছু নারী সেই মেয়ের মুন্ডুপাত করে, সংসারে অশনি সংকেত বাজে । তাদের জন্যও আমি মর্মাহত, তবুও আমি বলি কি এই মেয়ে উপলক্ষ্য শুধু, তার মানে তোমার স্বামীরও যে বন্ধন শিথীল এটা কি বোঝ??
ওহ যেটা বলা হয়নি এই বিশ্বপ্রেমিক বাসায় ফিরে সবাইকে ব্লক করেছে কাকের মত। সেকি ভেবেছে নিজের মুখ ঢেকে ফেললেই সব ধুয়ে যাবে?
বেনুবর্ণা অধিকারী
ঢাকা
[লেখিকা বেনুবর্ণা অধিকারী একজন সাহসী মেয়ে। এই পুরুষ পতিতার মুখোশ উন্মোচিত করার জন্য বেনুকে স্যালুট। সাড়া বাংলাদেশের সবাইকে বেনুবর্ণা হতে হবে আর মুখোশ উন্মোচিত করতে হবে সকল নষ্ট পুরুষ পতিতাদের যাতে এরা নানা রকমের ফাঁদ পেতে কারু আবেগ, সময়, শক্তি, সৌন্দর্য নষ্ট করতে না পারে ]
Srf Khan আর একজন পুরুষ পতিতা । যে ফেসবুকের মাধ্যমে ফাঁদ পেতে বসে থাকে বিভিন্ন বয়সী মেয়েদের থেকে নানা ধরনের গল্পের মাধ্যমে টাকা নিয়ে সংসার চালায়, ইয়াবা নেয়, পুরুষ পতিতা Srf Khan এর বোন Munny Khan ও একজন দেহব্যবসায়ী । ভাই Arif Khan একজন ছিনতাইকারী। মামা রব একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী। সাভারের পথে পথে ওদের বাবা ভিক্ষা করতো। এখন Srf Khan বিভিন্ন মহিলাদের থেকে নানা ধরনের কথা বলে টাকা নিয়ে খায় আর সমাজের উচু মহলের আরো কিছু মহিলাদের সাথে ফটো এক্সিবিশন করে ।