বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে শরীয়তপুরে জাজিরায় অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে শরীয়তপুর-১ আসনের এমপি বিএম মোজাম্মেল এক মুক্তিযোদ্ধার উদ্দেশে অশালীন ও কুরুচিপূর্ন ভাষায় কথা বলেন। তিনি ঐ মুক্তিযোদ্ধাকে, ‘বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে’ বলে হুমকি দেন। বাকবিতণ্ডা চলার এক পর্যায়ে তাকে ‘… মুক্তিযোদ্ধা’ বলেও গালি দেন এমপি মোজাম্মেল। বাকবিতণ্ডার সেই ভিডিও চিত্রটি সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্য মাধ্যমে ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। লাঞ্ছিত হয়া সেই মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় জানা যায়নি।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শরীয়তপুরে সংসদ সদস্য (এমপি) ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হকের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে শরীয়তপুরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে জেলা মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়। পরে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন তারা। এ সময় ডিসির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন মুক্তিযোদ্ধারা। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, এমপি মোজাম্মেল সম্প্রতি জাজিরায় মুক্তিযোদ্ধাদের এক সমাবেশে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ ভাষা ব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করেছেন। যা দেশের সব মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করার শামিল। আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদকের কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ অত্যন্ত দুঃখজনক। যা মুক্তিযোদ্ধাদের চরমভাবে ব্যথিত ও মর্মাহত করেছে। সমাবেশে মুক্তিযোদ্ধারা এমপি মোজাম্মেলের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ সহ বিচার দাবী করেন। এসময় এমপি মোজাম্মেলের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা।
শরীয়তপুর যুবলীগের নেতা রনী ঢালী প্রবাস নিউজে তার পতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, কয়েক মাস পরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং আসছে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেখানে আমাদের সবাইকে এখন আরো বেশী করে দেশ ও দলের সেবা করার কাজে নিয়োজিত হতে হচ্ছে। সেখানে বিএম মোজাম্মেল প্রকাশ্যে এক জনসভায় একজন মুক্তিযোদ্ধাকে গালাগালি করেছে। এটি কোন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষের পক্ষে সম্ভব না। তার এহেন আচরণের ভিডিও ফুটেজ আজ ভাইরাল হয়েছে ফেসবুক সহ সামাজিক যোগাযোগের অন্যান্য মাধম্যে। এতে করে আওয়ামীলীগের সম্মান সুনাম ক্ষুন্য হয়া সহ জেলার সকল মুক্তিযোদ্ধা ও সুশীল সমাজ চরমভাবে ব্যথিত, মর্মাহত এবং অপমানিত হয়েছে। এহেন ঘটনায় আমি বিএম মোজাম্মেলের পদত্যাগ দাবী সহ দলের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচারের দাবী জানাই।
বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবদুর রব মুন্সী, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসসদের সাবেক কমান্ডার আ. জলিল হাওলাদার, জাজিরার যুদ্ধকালীন কামান্ডার আ. রহমান খান, মুক্তিযোদ্ধা আ. রাজ্জাক মাস্টার, আলীম উদ্দিন শেখ, আবুল কাশেম, হাবিবুর রহমান, হেলাল উদ্দিন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহসম্পাদক মানিক ব্যানার্জি, জেলা যুবলীগের সভাপতি এম এম জাহাঙ্গীর, সাধারণ সম্পাদক নুহুন মাদবর, সদর উপজেলার সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা, শরীয়তপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র বাচ্চু ব্যাপারি, জাজিরার মূলনা ইউনিউওন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল আমিন হাওলাদার, সদর উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হোসেন সরদার, সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন দিপু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক তাইজুল ইসলাম সরকার, পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক জাহাঙ্গীর বেপারী, জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক রাশেদ উজ্জামান, যুবলীগ নেতা রনী ঢালী, সাবেক ছাত্রনেতা পারভেজ মোল্লা প্রমুখ।