ইয়াবা বা ইয়ে বাবা তৈরি হয় কিভাবে সেটা জানা দরকার তাদের যারা এখনো ইয়াবা গ্রহণ করেন নাই। যারা নিয়মিত ইয়াবা গ্রহণ করে থাকে তারা জানেনা তারা ক্ষতিগ্রস্থ । ইয়াবা নেবার পরে আর সেটা জানার অবস্থা থাকেনা। ইয়াবাতে তারা ঝুলে আছে বাঁদুরের মত। হিটলার তার সৈন্যদের ইয়াবা দিতেন দীর্ঘ সময় জাগিয়ে রাখার জন্য। তখন ইয়াবার নাম ছিল পার্ভিটিন। এখনো অনেক অঞ্চলে এই পিলগুলোকে নাজী স্পীড বলে ডাকা হয়।
ইয়াবার মাধুর্য সম্পর্কে আগে বলিঃ
ইয়াবা যারা গ্রহণ করেন তাদের কি কি সমস্যা হতে পারেঃ
প্রতি মুহুর্তে আমরা শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে বাইরে থেকে নানা রকমের ভাইরাস গ্রহণ করি। দেহের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি দুর্বল থাকে তাহলে বাইরে থেকে আসা ভাইরাসগুলো সহজেই দেহে প্রবেশ করে আর নানা রকমের অসুখ ও জটিলতার সৃষ্টি করে। ইয়াবা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয় । ফলে যারা ইয়াবা নেয় তারা বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ও মানসিক রোগ ও জটিলতাই ভুগে।
যারা নিয়মিত ইয়াবা পিল গ্রহণ করে (হতে পারে দশটা বা তার বেশী পিল ব্যবহার করে) তাদের ভেতর যেসব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় সেগুলো হলোঃ
সিদ্ধান্তহীনতাই ভুগা, স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলা,
দীর্ঘ সময়ে জেগে থাকার ফলে স্বাভাবিক ঘুম প্রতিহত হয়, দেহ এলিয়ে যায় এবং অসময়ে চোখে ঘুম নেমে আসে কিন্তু তখনও যেহেতু ইয়াবার প্রভাব থেকে যায় সেহেতু চোখে ঘুম না এসে স্বপ্ন আসে। স্বপ্নগুলো বাস্তবের মত মনে হয়। স্বপ্নে স্বপ্নেই ঘুম হয়ে যায়।
দেহে ও মনে এক ধরনের অস্থিরতা অনুভূত হয়।
তীব্র শিড়পীড়া, মাথা ব্যাথা , মাথা ঝিম ঝিম করা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার উপক্রম হতে পারে
বিষন্নতা অর্থাৎ ডিপ্রেশন হতে পারে এবং আত্মহত্যা করার তীব্র ইচ্ছা জাগতে পারে
ইয়াবা সরাসরি নার্ভ সিস্টেমকে প্রভাবিত করে ফলে ইয়াবাসক্তেরা সাধারনত নার্ভাস থাকে (ভিত ও দুর্বল মন, সহজেই আতকে উঠে কিন্তু ঠান্ডা থাকে বাইরে বুঝতে দেয়না আর ভেতরে ঘামতে থাকে)
খুব বেশী দুঃশ্চিন্তা হতে পারে
দীর্ঘ সময়ে যারা ইয়াবা পিল গ্রহন করে আসছে তাদের ভেতর psychosis হতে পারে অর্থাৎ তারা তাদের মনের ভেতর এক ধরণের চিন্তার পাটার্ন তৈরি করে নেয় । উদাহরন — মনে মনে সে একজন নিয়ন্ত্রক হতে চায়, অন্যের মন ও দেহকে সে নিয়ন্ত্রন করতে চায় তার নিজের জন্য, তখন সে তার প্রতিদিনের স্বপ্নে স্বপ্নে ড্রামা স্ক্রিপ্ট ড্রাফট করে, মগজের ভেতর সেই ড্রামা মঞ্চায়িত করে, এককভাবে অভিনয় করে বারে বারে, তারপর তার আশেপাশে যারা আছে যারা তার নেশা সম্পর্কে অজ্ঞাত তাদেরকে সে নানা ভাবে নিয়ন্ত্রন করে তার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করে। কারু কারু কাছে সে নিজেকে অনেক ধনী বলে উপস্থাপিত করে তার ভেতরের হীনমন্যতা ঢাকার জন্য। তার আসল অবস্থাকে সে নিজেই গ্রহণ করতে পারেনা । ফলে সে তার কাল্পনিক ইচ্ছাকে গল্প বানিয়ে সেটাই বাস্তব হিসাবে সবাইকে বুঝাতে চায়, বলতে চায়, দেখাতে চায়, সে যে গল্প বলছে সেটাই সত্য আর যে সত্যে সে বসবাস করে সেসব কিছুই সত্য নয়।
সমাজের প্রচলিত নিয়মে যারা ক্ষমতাশালী ও অর্থশালী তাদেরকেই সচরাচর বেশীরভাগ মানুষ মেনে চলে বা সন্মান করে।
তার মগজের ভেতর বসত করা হীনমন্যতা তাকে বারে বারে হতাশ করে এই ভেবে যে এই বুঝি সবাই বুঝে ফেলছে যে সে একজন কপর্দকহীন, দুর্বল মনের ইয়াবাসাক্ত মানুষ। যেভাবেই হোক সে স্বপ্নে স্বপ্নে তার বর্তমান আর্থিক ও সামাজিক অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ খোঁজে। বাস্তবিকভাবে যেহেতু সে কোন লেখাপড়া জানেনা, তার কোন ডিগ্রী নাই অথবা লেখাপড়া জানলেও চাকুরী খুঁজে পাচ্ছে না সেজন্য সে মিথ্যার আশ্রয় নেয়। নিজের আর্থিক দারিদ্রতা, দুরাবস্থার কথা অন্যরা যাতে বুঝতে না পারে সেজন্য সে নানা ধরনের আজগুবী গল্পের মুখোশ তৈরি করে তার নীচে লুকিয়ে থাকে। এক এক মানুষের কাছে সে এক এক গল্প ফাঁদে। মানুষ বুঝে সে এগুতে থাকে শিকারের খোঁজে।
ইয়াবা বিবেককে খেয়ে ফ্যালে ফলে ইয়াবার প্রভাব সহজেই তাকে সত্যের মত করে মিথ্যা বলতে সহায়তা করে। ইয়াবা যারা গ্রহণ করে তাদের ভেতর বিবেক, লাজ লজ্বা কিছু থাকেনা। তারা যেকোন মানুষকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করতে পারে এবং রক্তাক্ত মৃত ব্যক্তির রক্ত সেই মৃত ব্যক্তির পোষাকে মুছে তার লাশের পাশে বসে সহানুভূতি জানাতে পারে। লাশের পাশে বসে গান গাইতে পারে, কবিতা আবৃতি করতে পারে। এমনকি মৃত ব্যক্তির লাশের পাশে লিখে রাখতে পারে “বন্ধু পরপাড়ে কেমন ছিলে জানাবে, শুভ কামনা রইল”
যারা ইয়াবা নেয় তাদের মধ্য অন্যের জন্য দুঃখবোধ, পরিতাপ, কষ্ট এসব “বোধ” থাকেনা । তারা যা পেতে চায় তা পাবার জন্য তারা নির্বিকারভাবে যেকোন পদক্ষেপ গ্রহন করতে পারে।
দীর্ঘ সময়ে যারা ইয়াবা নেয় তাদের শরীর ক্ষীনকায় হয়। তাদের অভিব্যক্তি হয়ে যায় শান্ত ও নিষ্টুর পাথরের মত । অনেকটা জীবিত লাশের মত। ইয়াবার প্রভাবে দাঁত নষ্ট হয়ে যায়। ব্রণ হয়। নখে ফ্যাংগাস হয়। ঘন ঘন জ্বর আসে। সর্দি, কাশি, গলা ব্যাথা, মাথা ব্যাথা ইত্যাদি লেগেই থাকে।
একজন ইয়াবাসাক্ত মানুষ প্রতিদিন একই কাজ করতে পারেনা। যেমন ভোরে উঠে অফিসে যাওয়া (যেকোন অফিসেই সেই অফিসের নিয়ম অনুযায়ী কাজ করতে হয়, একজন ইয়াবাসাক্তের জন্য দীর্ঘ সময় কোন নির্দ্দিষ্ট নীতি ও নিয়ম মেনে সুশৃঙ্খলভাবে কাজ করা সম্ভব হয়না ব্রেইনের ভেতর ইয়াবার প্রভাব তাকে অস্থির করে রাখে। একজন ইয়াবাসাক্ত মানুষ স্বাভাবিক মানুষের মত কোন ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে অক্ষম হবে এবং প্রতিদিন কোন কিছু বিক্রি করতে যে কৌশল ও দক্ষতার প্রয়োজন, তেমন ব্যবস্থাপনা করার মত অবস্থা ইয়াবাসেবীর থাকেনা। ইয়াবার শক্তিশালী কেমিক্যাল ব্রেইনকে নিয়ন্ত্রন করে ফলে তার দেহের সব অরগান বা অঙ্গই স্বাভাবিক মানুষের মত স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারেনা। একজন ইয়াবাসেবী একটি জড় পদার্থের মত।
সে অস্থির এবং মিথ্যুক। সে যতক্ষণ জেগে থাকে ততক্ষন চেষ্টা করে স্বপ্নে দেখা তার ইচ্ছাগুলোকে পুরণ করার জন্য। তার হীনমন্যতাকে লুকাবার জন্য। তার দারিদ্রতা, তার অভাব তার প্রয়োজনগুলোকে লুকিয়ে নিজেকে স্বচ্ছল ও ধনী ব্যক্তি হিসাবে কিছু মানুষের চোখে ধুলা দেবার জন্য। যারা তার প্রতি সহানুভুতিশীল সে তাদের কাছে ভিক্ষুকের মত হাত পাতে, তাদেরকে তার আর্থিক দৈন্যদশার কথা খুলে বলে এবং তাদের সহানুভুতির পূর্ন সুযোগ নেয়। নিজের আর্থিক দৈন্যদশা খুলে বলাটা তার কাছে খুব সহজ নয়। সে সাময়িকের জন্য সত্য কথা বললেও পরে যখন সে আর্থিক সহায়তা পেয়ে যায় তখন সেই অর্থ সে নিজের অর্জন হিসাবে ভাবতে শুরু করে । পরের ধণে পোদ্দারী করে অর্থের আসল মালিককে অস্বীকার করা শুরু করে। দীর্ঘ সময়ে সমাজের সবার কাছে নিজেকে মিথ্যা ধনী বলে বলে যে ইমেজ সে সৃষ্টি করেছে নিজের ভেতর আর বাইরে সেই ইমেজ থেকে ক্ষনিকের জন্য বাস্তব অবস্থায় বের হয়ে আসতে সে অপমানবোধ করে। যে তার প্রতি সহানুভূতিশীল, তাকে সে এমনভাবে গল্প বলে যেন (তার এই খারাপ আর্থিক অবস্থা আগে ছিলনা) আগে অবস্থা ভাল ছিল এখন কোন এক কারণে ভাল নেই – যেমন বাবার অসুখ হবার কারণে , অসুস্থ বাবাকে সেবা করার কারণে সে স্কুলে যেতে পারেনি, সে লেখাপড়া শেষ করতে পারেনি বা আর দশজন ছেলের মত পথে ঘুরে খেলা করে বেড়াতে পারেনি, মুভি দেখতে পারেনি, বাইক নিয়ে ঘুরতে পারেনি, ঘুড়ি উড়াইতে পারেনি, তার কৈশর পেড়িয়ে গেছে অসুস্থ বাবাকে সেবা করতে করতে (সব সত্য সে এসব কিছুই করতে পারেনি, কিন্ত সেটা দারিদ্রতার কারণে, অসুস্থ বাবাকে সেবা করার কারণে নয়), বাবা অনেক সম্পদশালী ছিলেন কিন্তু তার দীর্ঘ অসুস্থার জন্য সব হারিয়েছেন – যাকে এইসব গল্প শুনাচ্ছে সে অনেক সহানুভুতিশীল হয়ে ভাবে যে এই ছেলেকে যদি আর্থিক সহায়তা দেওয়া যায় তাহলে সে তার অবস্থার পরিবর্তন করতে পারবে।
আর ইয়াবাসেবী ভাবে যে আমি এই গল্প “তোমাকে বলেছি শুধু মাত্র তোমাকে ব্যবহার করার জন্য”। আমার দৈন্যদশা আমি কারুকে বলিনা। আমি সবাইকে বলি আমি বিশাল ধনী ব্যক্তি। সহানুভূতি যে জানিয়েছে তার থেকে আর্থিক সহায়তা নেওয়া হয়ে গেলে ইয়াবাশক্ত তাকে এড়িয়ে চলে । আর একটি নতুন গল্পের জন্ম হয় তাকে এড়িয়ে যাবার জন্য বা তাকে সম্পুর্নভাবে ইয়াবাসাক্তের জগৎ থেকে বিতারিত করে ফেলার জন্য।
আর্থিক সহায়তা পেয়ে ইয়াবাসাক্তের বৃহস্পতি এখন তুংগে সে যাদের বলেছিল যে সে কোটিপতি তার সাততলা বাড়ী আছে , বিশাল ব্যবসা আছে তাদেরকে সে কিঞ্চিৎ নমুনা দেখাতে পেরে গর্বিত হয়। এইভাবে বেশ চলছিল। হঠাৎ একদিন এক অতি সহানুভূতিশীল একজন শ্রমিক দরিদ্র যে তাকে ঋন হিসাবে আর্থিক সহায়তা দান করে এবং ঋন ফিরে পেতে চাইলে ইয়াবাসাক্তের চারিপাশে খুঁজে পায় মিথ্যা গল্পের এক বিশাল লাইব্রেরী। ইয়াবাসেবীকে খুলে খুলে এক শত এক আরব্য রজনীর গল্পের চাইতেও ভয়াবহ গল্প বেড়িয়ে আসে একে একে । আর সবচাইতে ক্ষতিকর যা তা হলো ইয়াবা নেবার ফলে সে না পারে স্বাভাবিকভাবে কাজ কর্ম করতে না পারে বাস্তবতা অনুভব করতে । সে বুঝতে পারেনাঃ
কোন রকম যোগ্যতা ছাড়াই সে কি পেয়েছে,,
সে কি করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং
সে কি হারাতে যাচ্ছে।
ইয়াবাসাক্তের কথা লিখতে যেয়ে রবীন্দ্রনাথের একটি কবিতা মনে পড়ে গেল
কিছু লাইন লিখছি –
একদা শুধাল তারে গ্রামবাসী ছেলে,
“সন্ন্যাসীঠাকুর, এ কী, কাঁকালে ও কী ও দেখি,
সোনার শিকল তুমি কোথা হতে পেলে।’
সন্ন্যাসী চমকি ওঠে শিকল সোনার বটে,
লোহা সে হয়েছে সোনা জানে না কখন।
একি কাণ্ড চমৎকার, তুলে দেখে বার বার,
আঁখি কচালিয়া দেখে এ নহে স্বপন।
কপালে হানিয়া কর বসে পড়ে ভূমি-‘পর,
নিজেরে করিতে চাহে নির্দয় লাঞ্ছনা;
পাগলের মতো চায়– কোথা গেল, হায় হায়,
ধরা দিয়ে পলাইল সফল বাঞ্ছনা।
কেবল অভ্যাসমত নুড়ি কুড়াইত কত,
ঠন্ ক’রে ঠেকাইত শিকলের ‘পর,
চেয়ে দেখিত না, নুড়ি দূরে ফেলে দিত ছুঁড়ি,
কখন ফেলেছে ছুঁড়ে পরশ-পাথর।
আয়শা মেহের
সম্পাদিকা
প্রবাসনিউজ২৪
টরেন্টো, কানাডা।
ইয়াবা বা ক্রেজি মেডিসিন Yaba means “crazy medicine”
It is a synthetic mixture of approximently 25-35 mg of methamphetamine and 45 to 65 mg of caffeine. The round, colored (mostly red or orange) tablet also contain household cleaning agents and heroin.
The tablet is often burned over foil and inhaled using a straw; however it can also be swallowed. Unfortunately, many people who abuse yaba were misled into believing that it could help them to lose weight, it is no worse than coffee or it has no side effects or potential of addiction. Unfortunately, this is not the case. Within a few days of consistent use, an individual can become hooked on YABA.