আজ তুষারাবৃত সমস্ত শহর। শ্বেত খ্রীষ্টমাস। এটাই সবাই প্রত্যাশা করে । সাড়া বিশ্বের পুঁজিপতিরা প্রচুর মুনাফা করার মাধ্যমে মহা ধূমধামে যীশুখ্রিষ্টের জন্মদিন পালিত হতে যাচ্ছে। সেদিনের সেই কুমারী মরিয়মের সন্তানলাভের আগে ও পরে তাকে কি নির্মম অবস্থার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছিল সে খবর আমরা কেউ জানিনা। সেটা নিয়ে কেউ ভাবেনা । কাজ থেকে ছুটি পাওয়া গেছে দুইদিন। সেটা একটা বড় ব্যাপার। ধর্ম যার যার ছুটি সবার। কুমারীর সন্তানলাভে পুরুষদের ভেতর যে প্রতিক্রিয়া হবে স্বাভাবিকভাবে পুরুষ শাসিত বিশ্বে তা গ্রহণযোগ্য হবার কথা নয় । যাই হোক যা হয়ে গেছে তা হয়ে গেছে । তা হবার ফলে তখন কি ঘটেছিল আমরা জানিনা। বিভিন্ন বাইবেলে বিভিন্ন রকমের কথা দিয়ে সাজানো হয়েছে ঘটনা। পবিত্র কোরআনের একটি সুরা আছে ১৯ – সুরা মরিয়াম
সবাইকে শুনে নেবার আহ্বান রইল।
এবারে খ্রিষ্টমাসের আগে বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য বেশ ভাল লাগলো। উনি খুব সত্য কথা বললেন। সহজ সরল্ভাবে স্বীকার করলেন যে দেশের সর্বস্তরে ঘুষের আদানপ্রদান চলছে যা তিনি ইচ্ছা করলেই অস্বীকার করতে পারেন না এবং করার চেষ্টাও করবেন না। তবে সবার কাছে অনুরোধ করেছেন যাতে রয়ে সয়ে ঘুষের আদান প্রদান করেন। শিক্ষামন্ত্রীকে ধন্যবাদ।
এখন আসুন আমরা ব্যক্তিগত পর্যায়ে প্রতারণা সেক্টর থেকে ঘুরে আসি। ঘুষ দিয়ে এসে যেমন কেউ কারুকে বলেনা তেমনি কেউ কারু দ্বারা প্রতারিত হলেও বলেনা। ঘুষ দেওয়া বা প্রতারিত হওয়া একটা লজ্বার ব্যাপার। ঘুষ নেওয়া বা কারুকে মিথ্যা বলে তার থেকে ঋন হিসাবে টাকা নিয়ে নানা বাহানাতে তা ফেরত দিতে টালবাহানা করাতে কোন লজ্বা নেই। ধর্ষন যেমন ধর্ষিতার লজ্বা এবং ধর্ষকের জন্য সন্মানের সাথে সমাজে প্রতিষ্টা ঠিক তেমনি কেউ কারু দ্বারা প্রতারিত হলে প্রতারণার শিকারের উচিৎ আত্মহত্যা করা। মিথ্যাবাদীর সংগীসাথীরা এটাকে বলে মিথ্যাবাদীর ব্যক্তিগত ব্যাপার। সংগীসাথীরা নির্দোষ। যতক্ষণ পর্যন্ত ওদের কোন ক্ষতি হচ্ছেনা ততক্ষ্ণ পর্যন্ত ওরা প্রতারকের বন্ধু থাকছে। তবে ওদের ক্ষতি হবেনা এব্যাপারে কোন গ্যারান্টি নাই। কারণ শিক্ষামন্ত্রী ধীরে সুস্থে ঘুষ নেবার জন্য অনুমতি দিয়ে দিয়েছেন ফলে প্রতারণা করে যারা খায় বা যারা প্রতারকদের বন্ধু হিসাবে সাথে থাকে তারা সবাই এই ঘুষ প্রদানের আওতাভুক্ত। কেউ প্রতারিত হলে যারা সেই শিকারদের ধিক্কার দেয় – তাদেরকেও ঘুষ দিয়েই কাজ করিয়ে নিতে হবে। চালাক, বোকা, স্মার্ট, আনস্মার্ট, শিক্ষিত, অশিক্ষিত, নারী পুরুষ হিজড়া সমকামী উভকামী (bi-sexual) সবাই – সাড়া বাংলাদেশ এখন বৈধভাবে চাহিবামাত্র ঘুষ প্রদানে বাধ্য থাকিবে।
এমন একটি সুখবর নিয়ে বাংলাদেশে নতুন বছর সুন্দরভাবে শুরু হতে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ও বাংলাদেশীদের জন্য রইল প্রাণঢালা ঘুষ আদানপ্রদানের শুভেচ্ছা।
ঘুষ আদান প্রদানের মাধ্যমে সবার ঘরেই চুলা জ্বলুক । ফেসবুকের মাধ্যমে আরো অনেক প্রবাসী নিঃসঙ্গ বয়স্কা মহিলাদের বেছে নিন , তাদের সাথে মিথ্যা দুঃখের গল্প বলে আপনার স্বপ্নের কথা বলে তাদের সহানুভুতিকে এক্সপ্লোয়েট করে ডলার, পাউন্ড, ইউরো, ইয়েন দেশে নিয়ে আসুন তারপর দেশে অপেক্ষারত আমলা ও বিভিন্ন সরকারকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্টানের কর্মকর্তাদের হাতে ঘুষ তুলে দিয়ে আপনার স্বপ্ন পূরণ করুন।
টাকা বিনিময়ের মাধ্যম । এক হাত দিয়ে আসে অন্য হাত দিয়ে যায়। সবাই একদিন ছয়ফুট কফিনে শুয়ে মাটির নীচে অদৃশ্য হয়ে যায় । কিন্তু অদৃশ্য হবার আগে দুনিয়ার মঞ্চে যারা কোন পরিশ্রম বা কাজ না করেই কারু থেকে টাকা নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে, ঘুরে বেড়িয়ে, আনন্দ, ফুর্তি করে খায় তারাই মুকাদ্দার কি সিকান্দার বলে সন্মানিত হয়!!
নতুন বছরে তারা আরো অনেক শিকার ধরুক এই শুভ কামনা রইল।
পুরানা শিকারদের ধরাসায়ী করে কবরে পাঠানের জন্যও অগ্রীম অভিনন্দন রইল।
দুনিয়াতে সফলভাবে যারা নানা মানুষের রক্ত চুষে সমাজে নিজেদের প্রতিষ্টিত করেছে, সন্মানিত করেছে, তাদের জন্য অভিনন্দনের পালা শেষ করে এবারে আসি শিকারদের প্রসঙ্গে।
শিকারেরা আসলে বারে বারে প্রতারণার শিকার কেন হয় ? অন্য শিকারদের কথা জানিনা। তবে আমি আমার নিজের কথা বলতে পারি। ২০১৫ সালের শেষের দিকে ২০১৬ সালের সুরুতে আমি যখন একটি অনেক দূরের অফিসে কাজ করতাম তখন আমার স্মার্ট ফোনে তিন গেগ ডাটা প্লান নিয়েছিলাম যাতে দুই ঘন্টা বাসে বসে ফেসবুকিং করতে পারি বা কিছু লিখতে পারি বা পড়তে পারি বা গান শুনতে পারি। যেহেতু আমার কানে সমস্যা আছে তাই ইয়ারফোন কানে রাখলে কান ব্যাথা করে তাই গান শোনা হয়নি। ফেসবুকেই আমি কবিতা পড়তাম বা লিখতাম। এইভাবে একদিন একজন কবি আমাকে তার কবিতার নীচে মন্তব্য করার জন্য ইনবক্সে আমাকে অনুরোধ করে।
আমি একদিন তার কবিতা পড়ি । বেশ ভাল লাগে। আমি তার কবিতার নীচে কবিতা লিখে মন্তব্য করি। এভাবেই তার সাথে আমার পরিচয় হয়। একদিন সে তার গানের একটি ক্লিপ পাঠায়। তারপর কবিতা আবৃতির অডিও ক্লিপ। আমি আমার ও তার তোলা ফটো দিয়ে সেইসব কবিতা ও গানের অডিও ক্লিপ বানিয়ে ইউটীউবে উঠিয়ে রাখি। এতে আমি বেশ সময় দিচ্ছিলাম। কাজের ফাঁকে ফাঁকে আমি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ছোটখাটো হিসাব দেখি। আমার একটা ছোট একাউন্টিং ফার্ম আছে। আমার ক্লাইন্টের সংখ্যা খুব কম । এতই কম যে তাতে আমার আধা মাসের খরচাও চলবেনা। সেজন্য আমি আমার আটটা পাঁচটা কাজ ছেড়ে দিতে পারিনা। যাই হোক এই কবির সাথে কথা বলতে বলতে জানতে পারি তার বাসার খবর তার পরিবারের সব সদস্যদের কথা। কে কি করে। সে নিজে কি করে ইত্যাদি।
এখানে মনে রাখতে হবে এই লোক যে উদ্দেশ্য আমার সাথে কথা বলছিল আমি সেই একই উদ্দেশ্যে তার সাথে কথা বলছিলাম না। কিছুদিন আগে অর্থাৎ এই লোকের সাথে পরিচিত হবার প্রায় তিন বছর পরে আমি জানতে পারি যে এইটাই তার পেশা। এভাবেই সে জীবিকা নির্বাহ করে। সেদিন আমি তার সাথে কথা বলছিলাম সময় কাটানোর জন্য পরে আমি জড়িয়ে গেলাম অন্য ভাবে। তার গল্প আমি বিশ্বাস করলাম। এখানে মনে রাখতে হবে যার হৃদয় আছে সে বিশ্বাস করে। আর যে হৃদয়হীন সে তার জীবিকা নির্বাহের তাগিদে গল্প বলে ফলে সে গল্পের ঘটনা তার মন স্পর্শ করেনা। মন না থাকলে আবেগ না থাকলে স্পর্শ করার প্রশ্ন উঠেনা। মানুষের জন্য যার ভালবাসা আছে তাকে যদি কেউ বোকা, নির্বোধ ইত্যাদি বলে ধিক্কার দেয় তাহলে সেটা নির্বুদ্ধিতা। মানুষের জন্য ভালবাসা আছে বলেই দুনিয়া টিকে আছে আর সে কথা এই হৃদয়হীন গল্পকার জানে বলেই এই পেশাতে সে সফলভাবে গল্প বলে শিকার ধরে খেয়েদেয়ে ফুর্তি করে বেড়াচ্ছে। এই লোকটির গল্প সত্যিও হতে পারতো। প্রথম দিকের গল্পে তেমন কোন অসংগতিও ছিলনা।
গল্প বিশ্বাস করার পেছনে গল্পকারের কোন কৃতিত্ব ছিলনা। যে শুনছিল সে বিশ্বাস করেছে। কারণ সে একজন মানুষ।
আমি নিজে এমন একটি পরিবার থেকে এসেছি যেখানে অনেক অর্ধনৈতিক উত্থান পতন ছিল। ফলে আমাকে যদি কেউ উত্থান পতনের গল্প বলে তাহলে স্বাভাবিকভাবেই আমি তার প্রতি সহানুভূতিশীল হবো। আমি আমার পরিবারের কথা আমার ছোটবেলার কথা তাঁকে বলেছি আর সেটা শুনে সে মনের মাধুরী মিশিয়ে আর একটি গল্প বানিয়েছে।
আমি আমার বাবামাকে অনেক ভালবাসতাম । অনেকেই তাদের বাবামাকে ভালবাসে। এটা স্বাভাবিক।
সুতারাং আমার জীবনের গল্পের সাথে মিল রেখে তার গল্পেও সে তার মাবাবাকে ভালবাসে ও যত্ন করে বা করেছে। কেউ কারু মাবাবাকে ভালবাসে তাতে অবিশ্বাস করার কিছু নেই। তার গল্পে সে বলে যে সে একজন আর্মী অফিসারের ছেলে। তার বাবার অঢেল সম্পত্তি ছিল যা তিনি তার বন্ধুদের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছেন বা বন্ধুরা তাকে প্রতারিত করে যার যার নিজেদের নামে লিখে নিয়েছেন ফলে তাদের জন্য তিনি কিছুই রেখে যাননি। তিনি ক্যান্সারে মারা যান এবং মৃত্যুর আগে তার গল্পকার অর্থাৎ তার বড় ছেলে তাকে সেবা করে। পরে জেনেছি তার বাবার আগের সংসারে একটি ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। যারা তার চেয়ে বয়সে বড়। যাই হোক গল্পকার তার গল্পে বলে যে, সে অনেকবার ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে তার বাবাকে নিয়ে যায় চিকিৎসার জন্য। এই কারনেই তার লেখাপড়া হয়না। সমস্যা হলো তখন যখন শুনলাম তার জীবনের প্রথম পাসপোর্ট তৈরি করতে টাকা দিয়েছে্ন অন্য একজন মহিলা তার বাবার মৃত্যুর অনেক পরে। সেটাই ছিল তার প্রথম বিদেশ যাত্রা। তার গল্পে সে তার বাবার অসুস্থতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করতে পারেনা। সেদিন আর একজনের কাছে শুনলাম সে নাকি.২০০৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন করেছে।
বাবার গল্প দিয়েই আমি লেখা শেষ করি। পরবর্তীতে আমি জেনেছি তার বাবা আর্মীতে ছিলেন না। একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। সে তার চাতুর্যময় গল্প বলে মানুষের সহানুভুতি আকৃষ্ট করে ; মানুষের থেকে টাকা নিয়ে জীবিকা নির্বাহের কৌশল সে শিখেছে তার মামাদের কাছ থেকে। ছোটবেলা থেকেই এই পরিবেশে সে বড় হয়েছে আর মানুষ ঠগানোর কৌশল শিখেছে। মানুষকে ফাঁদে ফেলে প্রতারিত করে তাকে নিঃস্ব করে ছেড়ে দেবার কৌশল শিখেই সে বড় হয়েছে। ২০১৬ সালে সুদূর কানাডার বাসে বসে অফিসে যাবার সময়ে যা আমার জানা বা বোঝা সম্ভব ছিলনা। হঠাৎ করে কোন কারণ ছাড়াই কোন মানুষকে কেউ সন্দেহ করেনা। সে তার গল্প বলেছে আমি আমার গল্প বলেছি। তার গল্প শুনতে শুনতে আমি আমার চোখে তার জীবনের যে ছবি এঁকেছি তার কারন হলো সেই গল্প শুনে আমি আমার বাবাকে স্মরণ করেছি – এইখানেই আমার ভুল ছিল। এটাই প্রতারকের প্রত্যাশিত ছিল।
সেই ভুলের জন্যেই সে অপেক্ষা করছিল।
আমার প্রাক্তণ স্বামী একবার দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে প্রায় তিনমাস বিছানায় থাকেন। আমি বিনা বেতনে অফিস থেকে সেই তিন মাস ছুটি নিই এবং স্বামীসেবা করি। একজন অসহায় মানুষ যে উঠতে পারেনা তাঁকে দেখাশোনা করার জন্য তার পাশে চব্বিশ ঘন্টা কারু থাকা লাগে। আমি ছিলাম । আমি জানি সে শিশুর মত মেঝেতে শুয়ে থাকতো।
সুদুর ঢাকাতে ক্যান্সারে ভোগা কারু বাবার সেবা করার গল্প শুনে আমি আমার অতীতের কথা ভেবেছি। এখানে আমি কত ভুল করেছি জানিনা। তবে পরবর্তীকালে যখন জানলাম গল্পের সেই বাবার ক্যান্সার ছিলনা তখনও আমি মনে কষ্ট পাইনি। তবে যখন জানলাম তিনি স্ট্রোক করে পঙ্গু ছিলেন। তিনি লাঠিতে ভর দিয়ে হাটতেন । বাইরে যেতেন। অসহায়ের মত এদিক অদিক ঘুরতেন। বাইরের মানূষের কাছে টাকার জন্য হাত পাততেন । সবাই তার রক্ত চুষা শেষে ছোবড়া করে ফেলে দিয়ে নিয়মিত অবহেলাই করেছে, তার সম্পত্তি তখন তার স্ত্রীর ভাইয়েরা চুরি করে নিয়েছে তারপর তার স্ত্রী ও সন্তানেরা অপেক্ষা করেছে তার মৃত্যুর। এইসব কিছু জানার পরেই আমি অনুভব করলাম আমার বিশ্বাস প্রতারিত হয়েছে।
বাবাকে অবহেলা করে হত্যা করা হয়েছে সেটা জানলে হয়তো আমি নিজেকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করতাম না। পরবর্তীকালে আমি শুনেছি মায়ের সাথে তার অসংলগ্ন ব্যবহার । সামনে বসে শুনেছি ও দেখেছি সম্পুর্ন অপ্রাসাংগিক কথা যার অর্থ হলো একজন প্রতারক ১০০% মেকাপ করতে পারেনা। সব ঠিক রাখতে পারেনা। ফলে এক ফাঁকে ভেতরের শূন্যতা দেখা যায়। খালি কলসের ভেতরে কি বিশাল শূন্যতা মরুভুমির মত খরা আর হাহাকার।
আমার আজন্ম নিঃসঙ্গ জীবনের চাইতেও হাজার গুন নিঃসঙ্গ আর অসহায় ক্ষুধার্ত এক অপরাধী সে, যে শৈশব থেকে ভালবাসা পায়নি, স্নেহ পায়নি, ফলে সে যা কিছু পেয়েছে তা তাকে ভিক্ষা করে পেতে হয়েছে, অনুনয় বিনয় করে পেতে হয়েছে পরে তা কেড়ে নিয়ে পেতে হয়েছে। খাবারও হয়তো সে পায়নি ঠিকভাবে। যা পেয়েছে তা হলো বঞ্চনা, যা শিখেছে তা হলো দুর্বলের থেকে কেড়ে নেওয়া, দুর্বলকে প্রতারিত করা আর সবল থেকে বিনয়ের সাথে ভিক্ষার মাধ্যমে চেয়ে নেওয়া। এইসব কৌশল সে রপ্ত করেছে। তার সব লেখাতেই একটা জিনিষ আছে তা হলো – হারিয়ে যাওয়া। যাকেই সে ধরতে যায় । সেটাই হারিয়ে যায়। কারণ একটাই – সে সবাইকে ধরতে চায় তার ক্ষুধা নিবারনের জন্য। সে মিলেমিশে খেতে জানেনা। সে যা কিছু করে নিজের জন্য করে। একদা জীবন ছিল বোঝার মত তারপর একদিন জীবন হয়ে গেল এক চকচকে মাকাল ফলের মত। বাইরে যার সুন্দর রং আর ভেতরে বমির মতো উচ্ছিষ্ট।
এভাবেই পুরানা বছরেরে শেষে প্রতারিত হয়েছে আমার বিশ্বাস এবং ভালবাসা।
শিকারের গল্প শেষ । এবারে দেখি বাকী বিশ্বের অবস্থা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের এমবেসী জেরুজালেমে করার সিদ্ধান্ত নেবার পরে সেখানে চলছে প্রতিবাদ আর পালেস্টাইনি নিধন ।
সিরিয়া এখন আর মানুষের বসবাসের উপযোগী নেই।
ইরাকের শিশুরা শীতে আর অপুষ্টিতে তাবুর ভেতর মারা যাচ্ছে।
ইয়ামেনের শিশুরাও মায়ের কোলে মারা যাচ্ছে অপুষ্টিতে আর ক্ষুধায়।
নববর্ষের শুভেচ্ছা জানানো বা না জানানোতে কিছু যায় আসেনা
প্রকৃতি তার নিজের নিয়মে চলতে না পারলে বিদ্রোহ করে , ঝর আসে, জলোচ্ছ্বাস আর ভূমিকম্প হয় । আমার ভালবাসা আর বিশ্বাস প্রতারিত হলে আমার শরীরে তা আঘাত করে। কারণ আমার হৃদয় আমার ব্রেইনকে প্রভাবিত করে। আমার ব্রেইন আমার শরীরকে চালায়। ওরা সবাই থেমে গেলে আমিও থেমে যাই।
মনটা তো আমার! তাই কারু গল্প শুনে যে ছবি আমার মনে আঁকা হয়েছিল সেই ছবিও আমার মনেরই আঁকা ছবি তাই সেখানে কোন খাদ ছিলনা। সেখানে কোন জুয়াচুরি নেই। সেখানে কোন লোভ নেই। সেখানে রয়েছে শুধু মঙ্গল কামনা। কোন মিথ্যাচার কোন লোভ কোন প্রতারণা কোন নোংরা কৌশল সে ছবিকে অপবিত্র করতে পারবেনা। কারণ আমার মনের ভেতর অসত্যের প্রবেশ নিষেধ।
আয়শা মেহের
সম্পাদিকা
প্রবাসনিউজ২৪
টরেন্টো, কানাডা ।