ছাত্রলীগের ভাঙচুর, এমসি কলেজের ছাত্রাবাস বন্ধ

সিলেটের শতবর্ষী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমসি কলেজের ছাত্রাবাস আজ বৃহস্পতিবার ছাত্রলীগ ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর জেরে কলেজ ছাত্রাবাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া ভাঙচুরের ঘটনায় ছাত্রাবাসের পক্ষ থেকে শাহপরান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের আধিপত্য বিস্তারের জেরে ছাত্রাবাসের নয়টি কক্ষ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পাঁচ বছর আগে ছাত্রশিবিরের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের জের ধরে ছাত্রাবাসের ৪২টি কক্ষ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। পোড়া ছাত্রাবাস সংস্কারের পর এবার এ ঘটনা ঘটল।

কলেজের অধ্যক্ষ নিতাই চন্দ্র চন্দ  বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ জরুরি বৈঠকে বসে। দুপুরে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এমসি কলেজের ছাত্রাবাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত হয়। আজ সন্ধ্যার মধ্যে আবাসিক ৩০০ ছাত্রকে ছাত্রাবাস থেকে চলে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গতকাল বুধবার রাতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে আজ বেলা ১১টার দিকে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ধাওয়া করে। আধা ঘণ্টা পর ছাত্রাবাসের শ্রীকান্ত ব্লকের চারটিসহ নয়টি কক্ষ ভাঙচুর করে একটি পক্ষ।

জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার সামাদ এমসি কলেজে ছাত্রলীগের দুই পক্ষে ‘ঝামেলা হয়েছে’ বলে জানান। তবে কারা কী কারণে ছাত্রাবাস ভাঙচুর করেছে, এ বিষয়ে তিনি জানেন না বলে দাবি করেন। তিনি  বলেন, ‘কলেজে ছাত্রলীগের কমিটি না থাকায় কোনো কিছু ঘটলে তাৎক্ষণিক বোঝা যায় না। আমরা খোঁজ নিচ্ছি।’

ভাঙচুরের ঘটনায় করা জিডিতে ছাত্রাবাসের কয়েকটি কক্ষ তছনছ করার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা ছাত্রাবাসে হামলা করেছেন।

২০১২ সালের ৮ জুলাই এমসি কলেজে ছাত্রশিবির ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষের জের ধরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ছাত্রাবাসের ৪২ কক্ষ। এ ঘটনার জন্য ছাত্রলীগের একটি পক্ষকে দায়ী করা হয়েছিল। পাঁচ বছর পরও অগ্নিসংযোগকারী চিহ্নিত না হওয়ায় বর্তমানে ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত চলছে।

এমসি কলেজ ১৮৯২ সালে রাজা গিরিশচন্দ্র রায় তাঁর পিতামহ মুরারি চাঁদের (এমসি) নামে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। টিলাগড় এলাকায় ৬০০ শতক জায়গার ওপর ১৯২০ সালে ব্রিটিশ আমলে আসাম ঘরানার স্থাপত্য রীতির সেমিপাকা ঘরের মাধ্যমে ছাত্রাবাস নির্মাণ করা হয়েছিল। আগুনে পোড়ানোর ঘটনার পর শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের নির্দেশে দুই বছরের মাথায় পোড়া ছাত্রাবাস আগের কাঠামোয় সংস্কার করা হয়। গত বছর থেকে আবাসিক ছাত্র ভর্তি করার পর সচল হয় ছাত্রাবাস।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *