জম্মু-কাশ্মিরে ভারত-পাকিস্তান ফের গুলি বিনিময়, নিহত ২, আহত ১৩

আবারও জম্মু-কাশ্মিরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। শনিবার নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারি গোলা বর্ষণ করা হয়েছে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গুলি বিনিময় হয়। এতে ভারতে ২ জন নিহত ও পাকিস্তানে কমপক্ষে ১৩ জন আহত হয়েছে বলে দাবি করছে দু’দেশ। অন্যদিকে ভারত সীমান্ত এলাকা থেকে প্রায় ১১০০ মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে। এ ঘটনায় পরস্পরকে দায়ী করছে দুটি দেশ। ভারত দাবি করেছে, একতরফাভাবে জম্মু-কাশ্মিরের রাজৌরি সেক্টরে চিটি বকরি এলাকায় নিয়ন্ত্রণ রেখায় গুলি বর্ষণ করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। পাকিস্তানের এমন গুলি বর্ষণের সমুচিত জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ওদিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী সমরাস্ত্রে সজ্জিত কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভুল করে কোন এডভেঞ্চার চালানোর বিষয়ে ভারতকে কড়া সতর্কতা দিয়েছে। তারা দাবি করেছে ভারতীয় সেনারা নিয়ন্ত্রণ রেখার উভয় পাশে সম্প্রতি বেসামরিক লোকজনকে টার্গেট করেছে ভারতীয় সেনারা। নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারতীয় সেনাদের ভুল কোন এডভেঞ্চারের হিসাব হবে ভুল। পূর্ণ শক্তি দিয়ে এর জবাব দেয়া হবে। এর ফলে নেমে আসতে পারে অকল্পনীয় পরিণতি। এমনটা বলা হয়েছে পাকিস্তানের ইন্টার সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) থেকে। ওদিকে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল মানিষ মেহতা বলেছেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাছবিচারহীনভাবে গুলি ও গোলা বর্ষণ শুরু করে। এতে তারা ছোট অস্ত্র, স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ও মর্টার ব্যবহার করছে। আমাদের সেনারা এর কার্যকর জবাব দিচ্ছেন। এ খবর দিয়েছে ভারতের অনলাইন জি নিউজ ও পাকিস্তানের অনলাইন ডন। জি নিউজ লিখেছে, রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৬ টা ৪৫ মিনিটে ইসলামাবাদ যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। তারা সীমান্তে ৭টিরও বেশি গ্রামকে টার্গেট করেছে। এতে সংখ্যালঘু এক বালিকা সহ কমপক্ষে দু’জন নিহত হয়েছেন। চার সেনা সদস্য সহ ৯ জন আহত হয়েছেন। পাকিস্তানিরা শনিবার সীমান্তের ৩৫টি গ্রাম ও ভারতীয় পোসেনট মর্টার হামলা চালানোর ফলে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের নওশেরার সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট হরবানস লাল শর্মা বলেছেন, এতে অনেক পশুও মারা গেছে। আহত হয়েছে অনেক। শনিবার দিবাগত রাতে প্রশাসন ওইসব এলাকা থেকে নারী শিশু সহ প্রায় ১১০০ মানুষকে সরিয়ে এনেছে। তাদেরকে রাখা হয়েছে বিভিন্ন রিলিফ ক্যাম্পে। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে নওশেরা এলাকার ৫১টি ও মানজাকোতে, ডোঙ্গি জোনের ৩৬টি স্কুল। ওদিকে অনলাইন ডন লিখেছেন, নিয়ন্ত্রণ রেখায় কোটলি জেলার নাকিয়া সেক্টর পরিদর্শনে যাওয়ার কথা পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার। স্থানীয় কর্মকর্তা ও আইএসপিআর বলেছে, কোটলি জেলার খুইরাত্তা ও চারহোই সেক্টরে ভারতীয় সেনাদের গুলিতে আহত হয়েছেন ৫ জন। এ ছাড়া ভারতীয়রা গুলি করেছে ভিমবার জেলার সামাহনি ও বরোহ সেক্টরে। বিনা প্ররোচণায় ভারত এমন গুলি ছুড়েছে বলে দাবি করছে আইএসপিআর। সঙ্গে তারা আরো বলেছে, উচিত জবাব দেয়ার জন্য প্রস্তুত আছে পাকিস্তানের সেনারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *