হাসিনার পদতলে ১৭ কোটি মানুষের বেহেস্ত

বাংলাদেশে ভারতের রাজ্যসরকার হিসাবে যেহেতু ভারত আওয়ামীলীগকেই মনোনিত করেছে যেহেতু দালাল হিসাবে ও রাস্ট্রদ্রোহী হিসাবে আওয়ামীলীগই ভারতের প্রথম প্রেম কিন্তু তবুও যেহেতু ভারত রাজনীতি রাজনীতি খেলার জন্য বাংলাদেশে কিছু বিরোধীদলও রাখতে চায় আওয়ামীলীগ যাতে মনোপলি না করতে পারে বা দেশ বিক্রিতে দরদাম বেশী উঠিয়ে না দেয় তাই বিএনপি এবং নানা রঙ্গের বিরোধীদলের সার্কাস পার্টি দেখা যায়।

ভারতের দালালী করা, দেশ বিক্রি, দেশের সম্পদ লুট, পাচার ইত্যাদি করা ছাড়া আওয়ামীলীগের কোন কাজ কাম নাই। অন্যদিকে বিরোধীদলের সদস্যরা সাহস করে মাঝে মাঝে নির্বাচনে অংশ নেয়, মাইর খায়, এইবার সাক্কু জিতেছে ফলে সাক্কু কৃতজ্ঞ, সেই কৃতজ্ঞতার কারণে সাক্কু শেখ হাসিনার পা ছুঁয়ে সালাম করে বলেছে – মা জননী আমাকে গুম, খুন, জেল, ও চোদ্দটা মামলা দিয়ে কাশিমপুরে না পাঠানের জন্য আপনের পা ধরে সালাম করছি। আপণের পদতলেই সাক্কু ও বিএনপিসহ সতেরো কোটি বাংলাদেশের দাসেদের বেহেস্ত।

ইলিয়াস আলীকে যখন গুম করা হয় তখন ইলিয়াস আলীর স্ত্রী লুনা বিশ্বাসই করতে পারেনি যে এই গুম খুন আওয়ামীলীগের কেউ করতে পারে। লুনা ভেবেছিল হয়তো শেখ হাসিনা দুষ্টামী করে ইলিয়াস আলীকে লুকিয়ে রেখেছিল তাই শেখ হাসিনার পা এর উপরে মাথা রেখেছিল লুনা। মা জননীর যদি প্রানে দয়া আসে। তাহলে যদি গুন্ডা ও ধান্দাবাজী করে প্রচুর সম্পদের পাহাড়গড়া ক্ষমতাবান স্বামীকে ফিরে পায়। হাসিনার পায়ে লুনার মাথা রাখাকে বিএনপির সদস্যরা জায়েজ হিসাবে ধরে নিয়েছে। স্বামীকে ফিরে পেতে লুনা এটা করতেই পারে। কোন ব্যাপার না।

হাসিনার দুইটা মাত্র চরণ তাই ইলিয়াস আলীর বউ হাসিনার যে দুই চরণে মাথা  রেখেছিল ঠিক সেই দুই চরণেই সাক্কুও মাথা রেখেছে। ইলিয়াস আলীর বউ লুনার মাথা হাসিনার চরণে এই দৃশ্যতে ভুল কিছু দেখতে পায়নি বিএনপির কোন সদস্য তবে সাক্কু যখন হাসিনার চরণে মাথা ছুইয়েছে তখনই সবাই রেগে আগুন। হাসিনার পদতলে বিএনপি ও সকল বিরোধীদলের বেহেস্ত। সারাদিন সবাই হাসিনা ও তার পুলিশ, আইনজীবী, গুন্ডা, র‍্যাবের ভয়ে অস্থির থাকে। ইলিয়াস আলীকে ফিরে পেতে হাসিনার পায়ে মাথা রাখা আর যাতে ইলিয়াস আলীর অবস্থা না হয় সেজন্য হাসিনার পায়ে মাথা রাখাতে কোন পার্থক্য আছে বলে আমি মনে করিনা।

অবশ্য আমি কিছু মনে করাতে বা না করাতে কিছু যায় আসেনা।
জিয়াউর রহমানের হত্যার কথা সবাই ভুলে গেছে। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর জন্য যাদেরকে দায়ী করে হত্যা করা হয়েছিল তারাই জিয়ার মৃত্যুর জন্য আদৌ দায়ী ছিল কিনা কেউ এটা নিয়ে আর মাথা ঘামায়নি । তবে জিয়াউর রহমানের অযোগ্য পুত্র তারেক জিয়া যখন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় তখন শেখ হাসিনার আশীর্বাদ ছাড়া বিয়ে করাকে সমীচিন মনে করেনি। তারেকের বিয়েতে শেখ হাসিনা আসে একটি কালো চাদর পরিধান করে। বিয়েতে কেউ কালো চাদর পরিধান করেনা। হাসিনা ইচ্ছা করেই কালো চাদর পরিধান করে প্রতীকী – হিসাবে সেদিন শেখ হাসিনা একটি বিশেষ আশীর্বাদ রেখে যায় – তাহলো শুধু জিয়া নয় সাড়া বাংলাদেশকে ধ্বংস করেই শেখ হাসিনা স্বাভাবিকভাবে বিদায় নেবে।

শেখ মুজিবের কবরেও ফাতেহা পাঠ করতে দেখা যায় তারেক জিয়াকে। আহা!! কত প্রেম ভালবাসা কত শ্রদ্ধা। শেখ মুজিবের গুন্ডা ও রক্ষীবাহিনীরা যেমন জিয়াউর রহমানের জন্য কোন সমস্যা ছিলনা ঠিক তেমনি  তারেক বা খালেদা জিয়ার জন্য হাসিনা কোন সমস্যা ছিলনা। এক সাথে চলতে ফিরতে, মিটিং করতে, দুজনে পাশাপাশি বসে হাসতেও দেখা গেছে।

এখন খালেদা জিয়ার হাতে অফুরন্ত সময়। উনি বাংলাদেশের জন্য একটি স্বপ্ন দেখেছেন যা বই আকারে প্রকাশ পেয়েছে। উনার দলের কিছু সদস্য গুম হয়ে আছে, কিছু সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে, কিছু সদস্য কাশিমপুর জেলে উপচে পড়ছে, এগুলা কারু জন্য কোন সমস্যা না । যাদের পরিবারের সদস্য গুম, খুন হয়েছে সমস্যা সেই পরিবারের, যাদের ছেলেরা জেলে আছে তাদের পরিবারের সমস্যা এইসব সমস্যার সাথে খালেদা জিয়ার স্বপ্নের কোন সম্পর্ক নাই।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দেরা শুধু ক্ষমতায় যেতে চায় যাতে সম্পদের পাহাড়ে অবস্থান করতে পারে। ক্ষমতায় যাবার স্বপ্নের সাথে জনগনের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণের দায়িত্ব ও কর্তব্যের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। রাজনীতিবিদেরা জনগণের জন্য রাজনীতি করেনা যার যার ব্যক্তিগত লাভের জন্য রাজনীতি করে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে জনগণ একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা।

আগামীকাল সাক্কুর লাশ নদীতে ভাসতে পারে। তখন হয়তো দুষ্টু কেউ বলেও ফেলতে পারে – পা ধরে কি কি পাইলিরে সাক্কু যেমন বলেছিল – পা ধরে কি ইলিয়াস আলী ফিরছেনি লুনা?

আয়শা মেহের
সম্পাদিকা প্রবাসনিউজ২৪
টরেন্টো, কানাডা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *