বার্মিজ সরকার যা বলেছে সবই মিথ্যা

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বার্মিজ সরকার এ পর্যন্ত যা বলছে তা সবই মিথ্যা বলে মন্তব্য করেছেন একজন রোহিঙ্গা নেতা।
ব্রিটেনে বসবাসরত রোহিঙ্গা নেতা নুরুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, “বার্মিজ সরকার এ পর্যন্ত যা বলেছে সবই মিথ্যা কথা, বিশ্বাসযোগ্যই না”।
মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সেনা অভিযানের প্রেক্ষাপটে সৃষ্ট পরিস্থিতির পেছনে আরএসও’র বিদ্রোহী তৎপরতা অনেকাংশে দায়ি বলে মিয়ানমারের সরকার দাবি করছে। তবে আরাকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল অর্গনাইজেশনের চেয়ারম্যান মি. ইসলাম বলেন, ওই সংগঠন বিলুপ্ত। এর কোনও কার্যক্রমই নেই। বার্মার কর্তৃপক্ষের এ বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য না।
রোহিঙ্গা এই নেতা বলেন, “আরাকানে নতুন করে সংকট সৃষ্টির পর কমপক্ষে পাঁচশো মানুষ মারা গেছে। দেড়শোর বেশি নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ধর্ষণকে তারা ব্যবহার করছে অস্ত্র হিসেবে”।
এদিকে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীদের নজরদারির মাঝেও মিয়ানমার থেকে গত কয়েকদিনে বহু রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশু কক্সবাজারের টেকনাফে ঢুকে পড়েছে। হাজার হাজার রোহিঙ্গা ঢোকার জন্য নাফ নদীর ওপারে জড় হচ্ছে বলে জানা গেছে।

অক্টোবর মাসে রাখাইন প্রদেশে সেনা অভিযান শুরু হবার পর থেকে জাতিসংঘের হিসেবে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজারের বেশী মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে। তবে মি. ইসলাম বলেন, ” বাংলাদেশের প্রশংসা করতে হবে। সেখানে অনেক রোহিঙ্গা ইতোমধ্যেই আছে। প্রায় ৪/৫ লাখ রোহিঙ্গা আছে সেখানে। সেখানকার লোকজনের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ”।
তিনি বলেন, ২০১২ সালে যখন রোহিঙ্গারা আসতে চেষ্টা করেছিল, বাংলাদেশ সীমান্ত বন্ধ করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশ কিন্তু পারেনি। পরে কিছু লোক ঠিকই ঢুকে গেছে এবং মানবপাচারের শিকার হয়ছিল।
রোহিঙ্গাদের সর্বসাম্প্রতিক সঙ্কট নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা নিয়েও কথা বলেন এই রোহিঙ্গা নেতা। “বার্মিজ সরকার রোহিঙ্গাদের যেখানে জুলুম নির্যাতন করছে সেখানে তাদের আভ্যন্তরীন কোনও সুরক্ষা নাই। এখন আভ্যন্তরীন নিরাপত্তা নাই, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাদের পূর্ণ নিরাপত্তা দিতে হবে। নিরাপত্তা পরিষদে এটা আলোচনা করে এ বিষয়ে বাধ্য-বাধকতা তৈরি করতে হবে”।
“বাংলাদেশেও আসতে দিচ্ছেন না, বার্মাতে থাকতে পারছে না। তাহলে যাবে কোথায় তারা?” প্রশ্ন তুলে রোহিঙ্গা এই নেতা বলেন, মংডু জেলায় তাদের জন্য একটি নিরাপদ জায়গা তৈরি করে দিতে হবে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *