সৌদি আরবে আটকা পড়া শতাধিক বাংলাদেশি খাদ্য সংকটে পড়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাই ও মাসের পর মাস ধরে বেতন না দেওয়ায় তারা মানবেতর জীবন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। শুধু বাংলাদেশি শ্রমিকরাই নন, ভারতের হাজার হাজার শ্রমিকও সংকটে পড়েছেন। এদিকে নয়াদিল্লি সরকার তাদের শ্রমিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করলেও বাংলাদেশিদের বিষয়ে এখনো তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি বলে অভিযোগ শ্রমিকদের। সৌদি আরবে আটকা পড়া শ্রমিকদের একজন ফরিদপুরের মিজানুর রহমান। আঠারো বছর ধরে তিনি সেখানে কাজ করছেন। কিন্তু হঠাৎ করে কাজ হারানোয় চরম বিপাকে পড়েছেন। তিনি বিবিসিকে বলেন, এখন তিন বেলার খাবারের জায়গায় দিনের মধ্যে একবেলা খাই। ভারতের কিছু বড় বড় কোম্পানি আছে তারা সাহায্য করছে। তারা মূলত ভারতীয়দের সাহায্য করছে, সেখান থেকে আমরাও কিছু কিছু পাই। বাংলাদেশের অভিবাসী শ্রমিকদের একটি বড় অংশই কাজ করে সৌদি আরবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ক্রমাগত পড়তে থাকায় সৌদিতে বহু কোম্পানিতে কাজ বন্ধ হতে শুরু করেছে গত বছর থেকেই। সবচেয়ে বেশি শোচনীয় অবস্থা নির্মাণ সংস্থাগুলোর। অনেক প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের হঠাৎ করেই ছাঁটাই করা হয়েছে। অনেকে মাসের পর মাসে বেতন পাচ্ছেন না, শ্রমিকদের জন্য নির্মিত শিবিরগুলোতে তাদের দিন কাটছে প্রায় অভূক্ত অবস্থায়। মিজানুর রহমান জানান, যেখানে তিনি কাজ করতেন সেখানে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ফিলিপাইন এবং শ্রীলংকার শ্রমিকরা কাজ করতো। এক বছর আগে কোম্পানির নিবন্ধন বাতিল হয়ে যায়। এরপর থেকে বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়। গত চারমাস ধরে খাওয়াও বন্ধ করে দেওয়া হয়। ইসলামী দাওয়াত সেন্টার নামে একটি প্রতিষ্ঠান রমজান মাসে খাবার দিয়েছিল। এরপর আরেকটি কোম্পানি কিছু চাল-ডাল দিয়ে যায়। পাকিস্তান এবং ভারতীয় কোম্পানি সাহায্য করেছে। এখন করুণ অবস্থা। কারও কাছে একটি টাকাও নাই। মিজানুর রহমান অভিযোগ করেন, দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু তারা ব্যবস্থা নিবেন কিভাবে? দূতাবাসের কোনও কর্মকর্তা এসে দেখেননি আমরা কি অবস্থায় আছি। খেয়ে আছি নাকি না খেয়ে আছি এসে কেউ দেখে নাই। শুধু বলে আসবো আসবো। তিনি আরও বলেন, কারও আকামা নাই। আকামা ছাড়া গেটের বাইরে যাওয়া যায় না। গেটের বাইরে গেলেই পুলিশ আক্রমণ করে। একবার পুলিশ ধরলেই ২০হাজার টাকা জরিমানা করে। আরেকজন বাংলাদেশি শ্রমিক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা এলাকার আব্দুল করিম জানান, ১৪০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক এখন এ অবস্থায় আছেন। কর্তৃপক্ষ বলছে, এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে আসা শ্রমিক, যারা সে দেশে বেকার রয়েছেন, তারা যাতে অন্য চাকরিতে ঢুকতে পারেন বা দেশ ত্যাগ করতে পারেন সে লক্ষ্যে বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে। ভারতীয় শ্রমিকদের মধ্যে প্রায় আট হাজার বেকার হয়ে পড়েছেন। তবে তাদের ভবিষ্যত নিয়ে কথা বলতে সে দেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ভিকে সিং এখন জেদ্দায় রয়েছেন।
Related Posts
জাহাঙ্গীর শিকদারের সুস্থ্যতা ও রোগমুক্তি কামনা করে হেরাম শরীফে নফল নামায ও নফল তাওয়াফ আদায়
- Ayesha Meher
- জুলাই ২৫, ২০১৬
- 0 min read
পবিত্র মক্কা আল মোকাররমা হেরাম শরীফে,, জেড ফোর্স নির্বাহী কমিটির সংগ্রামীয় সভাপতি, আলহাজ্ব মোঃ জাহাঙ্গীর…
যৌন নির্যাতন: ক্ষোভে-দুঃখে ৪ অ্যাথলেটের আত্মহত্যার চেষ্টা!
- Ayesha Meher
- মে ৭, ২০১৫
- 0 min read
ঢাকা: যৌন নির্যাতন এবং র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে ভারতে চারজন প্রশিক্ষণার্থী অ্যাথলেট আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ…
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে
- Ayesha Meher
- জানুয়ারি ১৬, ২০১৫
- 1 min read
ঢাকা: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলছে, আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা…