পবিত্র সংবিধানে ২০১১ সালে বাংলাদেশের সংবিধানে একটি সংশোধনী আনা হয়।তাতে দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রাষ্ট্র কর্তৃক পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষার বিষয়ে নির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত হয়।
ধারনা করা যায় , এর ভিত্তিতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘Champions of the Earth’পুরস্কার দেয়া হয়! এরপর শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সব কাজের লক্ষ্য হল বন্যা, সাইক্লোন থেকে মানুষের জীবন রক্ষার জন্য পরিবেশ পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলা যাতে দ্রুত নগরায়ণ এবং ক্ষতিকর শিল্পায়নের থেকে সৃষ্ট দূষণের থেকে পরিবেশকে রক্ষা করা যায়।’
২০০শত বছর আগে এই বনের আয়তন ছিল ১৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার । আর এখন মাত্র ১০ হাজার কিলোমিটার, যার ৬০% বাংলাদেশের সীমানায় ও ৪০ % ভারতের সীমানায়!
রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য জমি অধিগ্রহণের আদেশ জারি হয় ২০১০ সালের ২৭ ডিসেম্বর।
এভাবে পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই প্রকল্পের স্থান চূড়ান্ত করণ থেকে শুরু করে বিনিয়োগ চুক্তি সম্পন্ন করে ফেলার পর পরিবেশ ছাড়পত্রের জন্য তৈরী এই ইআইএর উদ্দেশ্য ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রথমেই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।
ভারতীয় কোম্পানি এনটিপিসির সাথে বাংলাদেশের পিডিবির জয়েন্ট ভেঞ্চার বা যৌথ বিনিয়োগ চুক্তি হয় ২৯ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে আর ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে “Final Report on Environmental Impact Assessment (EIA) of 2 × (500-660) MW Coal Based Power Plant to be constructed at the location of Khulna” নামে সেই কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইআইএটি পিডিবির ওয়েবাসাইটে ঝুলানো হয়েছে ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ এর মধ্যে মতামত চাওয়া হয়েছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংরক্ষিত বনভূমি ও বসতির ১৫ থেকে ২০ কিমি এর মধ্যে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয়না। প্রস্তাবিত ১৩২০ মেগাওয়াট রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পটি সুন্দর বন থেকে মাত্র ১৪ কিমি দূরে যা সরকার নির্ধারিত সুন্দরবনের চারপাশের ১০ কিমি এনভাইরনমেন্টালি ক্রিটিক্যাল এরিয়া(ইসিএ) থেকে ৪ কিমি বাইরে বলে নিরাপদ হিসেবে দাবী করা হয়েছে। অথচ যে ভারতীয় এনটিপিসি বাংলাদেশে সুন্দরবনের পাশে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ করতে যাচ্ছে সেই ভারতেরই ওয়াইল্ড লাইফ প্রটেকশান অ্যাক্ট ১৯৭২ অনুযায়ী, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৫ কিমি ব্যাসার্ধের মধ্যে কোন বাঘ/হাতি সংরক্ষণ অঞ্চল, জৈব বৈচিত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বনাঞ্চল, জাতীয় উদ্যান, বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য কিংবা অন্যকোন সংরক্ষিত বনাঞ্চল থাকা চলবে না। অর্থাৎ ভারতীয় কোম্পানি এনটিপিসিকে বাংলাদেশে সুন্দরবনের যত কাছে পরিবেশ ধ্বংস কারী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে দেয়া হচ্ছে, তার নিজ দেশ ভারতে হলে সেটা করতে পারতো না!
২০১৪ সালে Global Tiger Stocktaking সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনের বাঘ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে সাইক্লোন এবং অন্য বিপদ থেকে দক্ষিণ সমুদ্রকূলবর্তী অঞ্চলকে রক্ষার ক্ষেত্রে সুন্দরবন হল এক প্রাকৃতিক রক্ষক।’কিন্তু এসব কথা সত্ত্বেও তিনি রামপালে ভারতীয় কোম্পানির সঙ্গে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের চুক্তির মাধ্যমে সুন্দরবন ধ্বংসের নিশ্চিত শর্ত তৈরি করেছেন।
কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে ৬৬০ মেগাওয়াটের ২ টি বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট থাকবে।
প্রথম ইউনিট টি তৈরি করতে সারে চার বছর টাইম লাগবে । প্রথম ইউনিট টি নির্মাণের সাড়ে চার বছর সময় জুড়ে গোটা এলাকার পরিবেশ, কৃষি,মৎস ও পানি সম্পদের উপর অসংখ্য ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে।
ইআইএ রিপোর্ট অনুসারে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন প্রায় ১৪২ টন বিষাক্ত সালফারডাই-অক্সাইড ও ৮৫ টন বিষাক্ত নাইট্রোজেনডাই-অক্সাইড নির্গত হবে।
পশু রনদী থেকে প্রতি ঘন্টায় ৯১৫০ ঘনমিটার করে পানি প্রত্যাহার করা হবে। যতই পরিশোধনের কথা বলা হোক, কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পানি নির্গমন হলে তাতে বিভিন্ন মাত্রায় দূষণকারী উপাদান থাকবেই যে কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বেলায় ‘শূন্য নির্গমণ’ বা ‘জিরো ডিসচার্জ’ নীতি অবলম্বন করা হয়।
ক্ষতিকর প্রভাব-
১)বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ ও পরিচালনা পর্যায়ে বায়ুদূষণ, পানিদূষণ, শব্দদূষণ, ছাই দূষণ ইত্যাদির ক্ষতিকর প্রভাব
২)পারদ বা মারকারি দূষণের মতো গুরুত্বপূর্ণ দূষণ বিষয়ে ইআইএ রিপোর্টে উল্ল্যেখই না থাকা, দূষণ নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা তো দূরের কথা।
৩)পশুর নদীর তীরে ছাই এর পুকুরের উপস্থিতি ও এর ফলে ছাই দূষণ ও দুর্ঘটনার মাধ্যমে পশুর নদী দূষণের ঝুকি। যুক্তরাষ্ট্রের ডিউক এনার্জি ও কিংস্টোন প্ল্যান্টে ছাই এর পুকুরের দুর্ঘটনার উদাহরণ
৪)কয়লা পরিবহনের জন্য নিয়মিত ড্রেজিং এর মাধ্যমে পশুর নদী দূষণ
৫)কয়লার জাহাজ চলাচলের ফলে জাহাজ ঢেকে রাখা হলেও জাহাজের শব্দ, ঢেউ, আলো, জাহাজ নি:সৃত তেল-গ্রীজ-দূষিত-বর্জ্য দূষণ ও কয়লার জাহাজ দুর্ঘটনার ঝুকি।
৬)রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে ওরিয়ন বিদ্যুৎ কেন্দ্র সহ আরো বিভিন্ন দূষণকারী শিল্পের আগমনে সুন্দরবনের বাড়তি বিপদ। এসব প্রকল্পের কিউমেলিটিভ ইমপ্যাক্ট অ্যাসেমেন্ট না করার বিপদ।
৭)ইউনেস্কো, রামসার , বাংলাদেশের বনবিভাগ সহ দেশী বিদেশী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যাক্তির রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে আশংকা যা বাংলাদেশের আর কোন প্রকল্প নিয়ে এত বেশি দেখা যায় নি।
৮)ইনস্টিটিউট অব এনার্জি ইকোনোমিকস কর্তৃক বিপুল ভর্তুকি ও বিদ্যুতের বাড়তি দামের কথা উল্ল্যেখ।
৯)রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনাকারী এনটিপিসির বাজে এনভয়ারনমেন্টাল ট্র্যাক রেকর্ড: ভারতের সেন্টার ফর সায়েন্স এন্ড এনভায়রনমেন্ট(সিএসই) এর এক গবেষণায়ে এনটিপিসিকে ভারতের সবচেয়ে দূষণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত করণ
১০)বিদ্যুৎ কেন্দ্রে থেকে সুন্দরবনের দিকে বাতাস একেবারেই যাবে না- এই জাতীয় আজগুবি মিথ্যা তথ্যের জবাব।
১১)পরিবেশ রক্ষায় সরকারের অবহেলার উদাহরণ। বুড়ি গঙ্গা সহ ঢাকার চারপাশের নদী দুষণ নিয়ন্ত্রণে অপরিসীম ব্যর্থতা। তাহলে রামপালে কিভাবে তা নিয়ন্ত্রণ করা হবে?
১২)সর্বশেষ সরকারি মনিটরিং রিপোর্ট অনুসারে সুন্দরবন ইতিমধ্যেই বিপদের মধ্যে আছে: সুন্দরবনের নদীতে সীসা, তেল ইত্যাদি বেশি,বাতাসে ক্ষদ্র কণার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, প্রকল্প এলাকয় দ্রবীভূত অক্সিজেন কম থাকা, আকরাম পয়েন্ট হিরণ পয়েন্ট প্রকল্প এলাকায় শব্দ দূষণ বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি।
১৩)প্রকল্পের মাটি ভরাটের কাজে ধুলা দূষণের বিষয়টি ১ বছর আগে চিহ্নিত হলেও তার প্রতিকার না হওয়া ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে কি ঘটবে তার ইঙ্গিত বহন করে।
কার্টেসিঃ জাতিয় তেল গ্যাস রক্ষা কমিটি ১৯/০৬/২০১৬, জ্বালানি প্রতিমন্ত্রির সাথে সাক্ষাত শেষে সাংবাদিক দের বলেন।
বৈজ্ঞানিক হিসাবে কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উতপাদন করতে প্রতি ৫০০ মেগাওয়াট এর জন্য পানির প্রয়জন ২.২ বিলিয়ন গ্যালন।
পশুর নদী মিঠা ও নোনা পানির যে ভারসম্য রক্ষা করে কয়লা ভিত্তিক রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য তা বড় রকম ব্যাহত হবে, তার প্রভাব বেশিটা পড়বে সুন্দরবনের উপর।
পশুর নদের পানির ব্যবহার, কয়লা মজুদ ও খালাসের জন্য নদটির পাড় ঘেঁষে তৈরী অবকাঠামো এবং নদ থেকে মাত্র ১২০ মিটার দূরে বিশালাকার ছাইয়ের পুকুর সুন্দরবনকে বিপদে ফেলবে, কিংস্টনের অভিজ্ঞতায় এটা বুঝতে রকেট বিজ্ঞানের প্রয়োজন হয়না।
এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ছড়ানো আর্সেনিক, পারদ, সীসা, নিকেল, রেডিয়ামসহ নানা বিষাক্ত উপাদান, প্রতিদিন ১৪২ টন সালফার ডাই অক্সাইড ও ৮৫ টন বিষাক্ত নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড এর উদগিরণ আর বিপুল পরিমাণ উড়ন্ত ছাইয়ের দূষণের প্রথম শিকার হবে পশুর নদ। আর ছড়িয়ে পড়বে সমগ্র বন জুড়ে।
পশুরনদ, সীবশা এবং এদের সংলগ্ন মেদারা এবং চিংকুরার মোহণায় ইলিশ, পারশে, ভেটকী, তাপসী, তুলারডাণ্ডীসহ যে ১২০ রকম প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়, তার সবই ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাবে। এতে এই অঞ্চলের দরিদ্র মৎস্য জীবিদেরও জীবিকা নির্বাহের আর কোন উপায় থাকবেনা।
ইরাবতী ডলফিনের নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবার শঙ্কাও বাদ দেওয়া যায়না কোনোভাবে।
১৮৩০ একর ধানী জমি অধিগ্রহণের ফলে রামপাল উপজেলার সাপমারী ও কৈকরদাস কাঠী মৌজার মোট ৮টি ইউনিয়নের ৭০০০-৮০০০ পরিবার উচ্ছেদ হয়ে যাবে।
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্ম সংস্থান হতে পারে সর্বোচ্চ ৬০০ জনের, ফলে উদ্বাস্তু এবং কর্মহীন হয়ে যাবে প্রায় ৭৫০০ পরিবার।
আর সাথে সাথে আমরা প্রতি বছর হারাবো কয়েক কোটি টাকার কৃষিজ উৎপাদন।
ইআইএ রিপোর্ট অনুসারে প্রস্তাবিত ১৩২০ মেগাওয়াট রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পটি সুন্দরবন থেকে মাত্র১৪কি.মি. দূরে! আবার সুন্দরবন থেকে দূরত্ব আসলেই ১৪কি.মি. কিনা সেটা নিয়েও বিতর্ক আছে।
খোদ ইআইএ রিপোর্টের এক জায়গায় বলা হয়েছে প্রকল্পের স্থানটি একসময় একেবারে সুন্দরবনেরই অংশ ছিল।
কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বছরে ৭,৫০,০০০ টন ফ্লাই অ্যাশ ও ২ লক্ষ টন বটম অ্যাশউৎপাদিত হবে। এতে বিভিন্ন ভারী ধাতু যেমন আর্সেনিক, পারদ, সীসা, নিকেল, ভ্যানাডিয়াম,বেরিলিয়াম, ব্যারিয়াম, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম, সেলেনিয়াম, রেডিয়াম মিশে থাকে।
কিন্তু আরো ভয়ংকর ব্যাপার হলো, একদিকে বলা হয়েছে এই বিষাক্ত ছাই পরিবেশে নির্গত হলে ব্যাপক দূষণ হবে অন্যদিকে এই ছাই দিয়েই প্রকল্পের মোট ১৮৩৪ একর জমির মধ্যে ১৪১৪ একর জমি ভরাট করার পরিকল্পনা করা হয়েছে!
এই বর্জ্য ছাই এর বিষাক্ত ভারী ধাতু নিশ্চিত ভাবেই বৃষ্টির পানি সাথে মিশে, চুইয়ে প্রকল্প এলাকার মাটি ও মাটির নীচের পানির স্তর দূষিত করবে যার প্রভাব শুধু প্রকল্প এলাকাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না।
১৩২০ মেগাওয়াটের জন্য প্রতিদিন প্রায় ১৩ হাজার টন কয়লা লাগবে।অর্থাৎ দ্বিতীয় পর্যায়ের শেষে ২৬ হাজার টন কয়লা লাগবে দ্বিগুন।
আর এর জন্য সুন্দর বনের ভেতরে হিরণ পয়েন্ট থেকে আকরাম পয়েন্ট পর্যন্ত ৩০ কিমি নদী পথে বড় জাহাজ বছরে ৫৯ দিন এবং আকরাম পয়েন্ট থেকে মংলা বন্দর পর্যন্ত প্রায় ৬৭ কিমি পথ ছোট লাইটারেজ জাহাজে করে বছরে ২৩৬ দিন হাজার হাজার টন কয়লা পরিবহন করতে হবে!
এটা ভুললে চলবেনা যে, সুন্দরবনের পানি প্রবাহের অন্যতম উৎস এই পশুর নদ এবং এর সকল জলাধার।
মূলত সুন্দরবনের চারদিকে বিস্তৃত নদীগুলোই তার প্রাণ-ভোমরা। এর যে কোন একটির ক্ষতি মানে সুন্দরবনেরই ক্ষতি!
এই প্রকল্পের দ্বারা সরাসরি অর্থনৈতিক ক্ষতির সাথে ভর্তুকিও দিতে হবে ।
প্রকল্পে মাত্র ১৫% বিনিয়োগে ভারতীয় মালিকানা পাচ্ছে ৫০ ভাগ।
বিদ্যুতের দাম পড়ছে দ্বিগুণেরও বেশী।
উচ্ছেদ হচ্ছে ৭৫০০ পরিবার। কৃষিজ সম্পদ হারাচ্ছে দেশ। পরিবেশ বিপর্যয় হচ্ছে বাংলাদশে, কিন্তু ৫০% শতাংশ মালিকানা ভারতীয় কোম্পানির!!
ভারত মধ্যপ্রদেশে যে প্রতিষ্ঠানকে কাজের অনুমতি দেয়নি, বাংলাদেশ সেই এনটিপিসিকেই সুন্দরবনের উপর ১৩২০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের সুযোগ করে দিচ্ছে পরিবেশের উপর সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব তোয়াক্কা না করেই।
অচল পয়সা বাংলাদেশের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এমনকি ভারতীয় কোম্পানিকে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র লাভের জন্য করও দিতে হবে না।
• সুন্দরবনের পাশে ওরিয়নের ৫৬৫ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিনিয়োগ করার কথা মার্কিন এক্সিম ব্যাংকের। জুলাই মাসেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত পাকা হওয়ার কথা। মার্কিন জনগণের করের টাকায় যেন এই সুন্দরবন ধ্বংসী প্রকল্পে বিনিয়োগ না হয়, তার আহবান জানিয়ে দেড় লক্ষাধিক স্বাক্ষর জমা পড়েছে।
• সুত্র: The daily star ৩০/০৬/২০১৬
সর্বোপরি সুন্দরবন এলাকার পরিবেশের ভারসাম্য নস্ট হলে পুরো অঞ্চলের বৃস্টিপাতের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে কমে যাবে যার পরিণতিতে সুন্দরবন অঞ্চলে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয় হতে পারে।
বাংলাদেশ অঞ্চলের সভ্যতার সাথে মিশে থাকা সুন্দরবনকে পরিকল্পিত মানব সৃষ্ট সঙ্কটের নিমজ্জিত করার মাধ্যমে যেন আঞ্চলিক অকৃত্তিম সভ্যতার জন্মলগ্নের পূর্বাভাসাকেই ভুলিয়ে দেবার চেষ্টা হচ্ছে।
সুন্দর বনের প্রাণ প্রকৃতির বিনাশের মাধ্যমে যেন বাংলাদেশের তারুণ্যের সবুজ রূপকে মুছে ফেলে তাদের রাজনীতির মত নেক্কারজনক পরিস্থিতি তৈরি না হয়, তাঁর জন্য দল মত, ধর্ম বর্ন ,কর্ম পেশা , নারী পুরুষ , ধনী গরীব আবালবৃদ্ধবনিতা নির্বিশেষে সকলকে মুষ্টি বদ্ধ হাতে প্রতিরোধ করতে হবে।
শহীদ জিয়ার স্বনির্ভর বাংলাদেশ ও সবুজ বিপ্লবের জন্য সুন্দর বন একটি শ্রেষ্ঠতম প্রাকৃতিক সুরক্ষা ব্যুহ।
(লেখাটি সংগ্রহ ক্যাপ্টেন নিমোর ওয়াল থেকে)