জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, বিদ্যমান আদেশ অনুযায়ী জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবিরোধী কমিটি গঠনে দলীয় পরিচয় বিবেচনা করা হচ্ছে না। এখানে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি থাকবেন; তিনি সরকার দলীয় নাকি বিরোধী দলীয় তা বিবেচনার বিষয় হবে না।
আজ বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের তৃতীয় দিনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে সংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি ও জামায়াত থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা স্থানীয় পর্যায়ের সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদবিরোধী কমিটিতে থাকতে পারবেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘অবশ্যই। যে দলেরই হোক নিজের এলাকার জনগণের নিরাপত্তার জন্য তাকেই ওই কমিটিতে নেতৃত্ব দিতে হবে। তিনি জনগণের ভোট নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাই সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে তাকেই জনগণের নিরাপত্তায় কাজ করতে হবে।’
২০১৩ সালে জেলা পর্যায়ে ডিসি এবং উপজেলা পর্যায়ে ইউএনওদের নেতৃত্বে ওই কমিটি গঠন করা হয়। এখানে ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও ওয়ার্ড পর্যায়ে ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে কমিটি গঠনের কথা বলা আছে। এ ছাড়া সাধারণভাবে উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়ররা এ কমিটির সদস্য।
পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় এখন আওয়ামী লীগ ছাড়াও বিএনপি-জামায়াতের কিছু মেয়র, চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, চলমান সন্ত্রাস ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার দলের নেতা কর্মীরা জামায়াত ও বিএনপিকে দায়ী করছেন।
বৈঠকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক এবং সিনিয়র সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এতে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক শেষে সৈয়দ আশরাফ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে মাঠপর্যায়ে সন্ত্রাস ও নাশকতাবিরোধী কমিটি গঠন করছে। এটা আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্ত। কিন্তু প্রশাসনিকভাবে যে কমিটি হবে,সেগুলো দলীয় হবে না।’
তিনি বলেন, ‘প্রশাসন যাতে সব সময় গতিশীল থাকে, সে জন্য জেলা প্রশাসকদের কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ করে না। তবে প্রশাসনের কর্মকর্তারা বিভিন্ন কাজে নেতৃত্ব দেন এবং জনমত সৃষ্টি করেন। এটাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’
সৈয়দ আশরাফ ডিসিদের বর্তমান পরিস্থিতিতে সতর্ক থেকে দৃঢ়ভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ‘মনে রাখবেন আমাদের সবার সব কিছুর আগে দেশ, দেশের জনগণ। মানুষ যেন সরকারি দফতরে এসে কোনো ভাবে হয়রানি শিকার না হয়। সরকারের পক্ষ থেকে সেবা মানুষের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে সম্ভাব্য সব ধরণের চেষ্টা অব্যাহত আছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৯ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ডিসিদের উদ্দেশে জঙ্গি বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতার আহ্বান জানান তিনি।