জঙ্গিনেতা বুরহানকে ধরিয়ে দিয়েছিল প্রেমিকা!

ঢাকা : যাকে নিয়ে উত্তাল ভূস্বর্গ কাশ্মির, বহু হতাহত; ক্রসফায়ারে মৃত সেই মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি বুরহান ওয়ানিকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছিল তারই প্রেমিকা! এর আগে রাজ্য সরকার বুরহানের মাথার দাম ঘোষণা করেছিল ১০ লাখ রুপি।

ভারতের একটি সংবাদমাধ্যম বলছে, কাশ্মিরের এই সুদর্শন জঙ্গির সঙ্গে বহু নারীর সম্পর্ক ছিল। আর সেই একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্কই কাল হলো বুরহানের! তারা বলছেন, বুরহানের এক প্রেমিকা তাকে অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে মোবাইলে চ্যাট করতে দেখে ফেলেন। সেটা সহ্য হয়নি তার। প্রতিশোধ নিতেই তিনি পুলিশকে বুরহানের গোপন ডেরার সন্ধান দেন।

সঙ্গে সঙ্গে বিশাল বাহিনী নিয়ে পুলিশ বুমডুরা গ্রাম ঘিরে ফেলে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়েই তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে বুরহান ও তার সঙ্গীরা। গুলির লড়াইয়ে বুরহানসহ তিন জঙ্গি নিহত হয়।

অনেক দিন ধরেই পুলিশ কাশ্মীরে সন্ত্রাসের নতুন মুখ বুরহান ওয়ানিকে খুঁজছিল। কিন্তু কোনোভাবেই তাকে বাগে আনা যায়নি। এমনকী তার গোপন ডেরারও সন্ধান পায়নি পুলিশ। কিন্তু শুক্রবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে কোকেরনাগের বুমডুরা গ্রামে তল্লাশি চালিয়ে বুরহানের খোঁজ পায় পুলিশ। এই গোপন সূত্রটি নিয়ে জোর খোঁজ চালালে বেরিয়ে আসে বুরহানের প্রেমিকার খবর।

ভারতের জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যে হিজবুল কমান্ডার বুরহান মুজাফ্ফর ওয়ানি নিহতের প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে এ পর্যন্ত অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২০০ জন।

শুক্রবার দক্ষিণ কাশ্মিরের অনন্তনাগ এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী হিজবুল মুজাহিদিনের তরুণ কমান্ডার ওয়ানি ও তার দুই সহযোগী নিহতের প্রতিবাদে পুরো কাশ্মিরজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার সেই উত্তাপ বেড়ে যায় আরও। এদিন কারফিউ উপেক্ষা করে হিজবুল নেতা বুরহানের মরদেহ নিয়ে রাস্তায় নামেন ৫০ হাজার মানুষ।

শনিবার নিজের এলাকা ট্রলে ২২ বছর বয়সী ওয়ানির জানাজায় বহু মানুষকে অংশ নিতে দেখা যায়। আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত বুরহান কাশ্মিরের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের নতুন পর্বের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন বলে মনে করেন জম্মু ও কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ।

ওমর আব্দুল্লাহ মনে করেন, কবরের মধ্যে থাকা বুরহান অনেক বেশি শক্তিশালী। জীবিত বুরহানকে ছাপিয়ে যাবে মৃত এই জঙ্গির ক্ষমতা।

বিচ্ছিন্নতাবাদী লড়াইয়ে তরুণ কাশ্মিরিদের উদ্বুদ্ধ করতে নিজের যোদ্ধা জীবনের ভিডিও করে সেগুলো ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে পোস্ট করতেন তিনি। তিনি স্থানীয় তরুণদের অস্ত্র হাতে তুলে নেয়ার অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছিলেন বলেও বলা হচ্ছে।

এক সময়ের উঠতি ক্রিকেটার ওয়ানি সম্পন্ন পরিবারের সন্তান। তার বাবা ট্রলের একটি সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক।

২০১৪ সালে সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্দুক হাতে বুরহানসহ বেশ কয়েকজন কাশ্মিরি যুবককে দেখা গিয়েছিল। বুরহান নিহতের ঘটনাকে সেনা ও জম্মু-কাশ্মির পুলিশের সাফল্য বলে দাবি করেছেন ভারতীয় সেনার এক মুখপাত্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.