ঢাকা: মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের একটি মসজিদে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করেছে সেখানকার একদল উগ্রপন্থী লোক। ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় বৌদ্ধপ্রধান এই দেশটিতে দ্বিতীয়বারের মতো এ ধরনের হামলার ঘটনা ঘটল। শুক্রবার মিয়ানমারের হাপকান্ত শহরের ওই মসজিদে হামলাকারীরা লাঠি, ছুরি ও অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে হামলা করে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম।
মিয়ানমারের ‘দ্য গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার’ নামের রাষ্ট্রীয় একটি পত্রিকা জানায়, আক্রমণকারীদের নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তারা মসজিদ ভবনে হামলা করে এবং এতে অগ্নিসংযোগ করে। এর আগে গত ২৩ জুন দেশটির ইয়াঙ্গুন শহরের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় বাগো এলাকায় মুসলিমদের একটি মসজিদ ও একটি কবরস্থান ধ্বংস করে ফেলে একদল হামলাকারী।
ওই পত্রিকাটি জানায়, মিয়ানমারের স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মুসলিম নেতাদের বিরোধের জেরে হামলার ঘটনাগুলো ঘটছে। বৌদ্ধ ধর্মের সঙ্গে সঙ্গতি স্থাপনে ইসলামের কিছু নিয়ম কানুন পরিবর্তনে মুসলিম নেতাদের আদেশ দিয়েছিল স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। তবে তা মেনে নেয়নি মুসলিম নেতারা।
তখন জানিয়ে দেয়া হয়েছিল, ৩০ জুনের ভেতর আদেশ মেনে না নিলে মসজিদে হামলা করা হবে। মুসলিম নেতারা ওই আদেশ মেনে না নেয়ায় স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে মসজিদে হামলা চালায়। বিষয়টি তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে পুলিশ এখনো হামলাকারীকে শনাক্ত করতে পারেনি।
এদিকে মসজিদে হামলার ওই ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ধর্মীয় সহিংসতা বন্ধে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। মিয়ানমারে সংস্থাটির বিশেষ মানবাধিকার দূত ইয়াংগি লি বলেন, ‘এটা স্পষ্ট যে মিয়ানমারে বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ছে।’
২০১২ সাল থেকেই সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ভয়ানক রূপ ধারণ করেছে মিয়ানমারে। এর শিকার হয়ে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্য থেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে এক লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম। রোহিঙ্গাদের প্রতি সব সময়ই বৈষম্য প্রদর্শন করে এসেছে মিয়ানমার সরকার।
ধারণা করা হয়েছিল, মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরে এলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। তবে দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি’র দল ক্ষমতায় আসার পরও এ ইস্যুতে তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমালোচিতও হয়েছেন সু চি।