ঢাকা : রাজধানীর গুলশান ২ নম্বরের হলি আর্টিসান বেকারি নামের রেস্টুরেন্ট থেকে জীবিত অবস্থায় দুইজনকে বের করে আনা হয়েছে। এর মধ্যে একজন স্পেনিশ নাগরিক।
শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে তাদেরকে রেস্টুরেন্ট থেকে বের করে আনা হয়। উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে একজন দিয়েগো স্তেন। তিনি রেস্টুরেনটিতে শেফ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অপরজন বাংলাদেশি নাগরিক বেলারুশ। তিনি রেস্টুরেন্টের স্টাফ।
সোয়াত সদস্যরা তাদের রেস্টুরেন্ট থেকে বের করে নিয়ে আসে। তবে তারা মূল রেস্টুরেন্টের ভেতরে ছিলেন না, যেখানে অন্যরা অস্ত্রধারীদের হাতে জিম্মি হয়ে আছেন।
একজন পুলিশ সদস্য জানান, উদ্ধার করা দুজনের মধ্যে বাংলাদেশি ব্যক্তি কিছুটা আড়াল হয়ে গেটের কাছাকাছি আসা মাত্রই সোয়াত সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। অন্যদিকে স্পেনিশ নাগরিক ভবনের আড়ালে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাকে দেখে ইশারায় এগিয়ে আসতে বলে পুলিশ সদস্যরা। কিছুটা কাছাকাছি আসা মাত্র তাকেও কম্পাউণ্ডের ভেতর থেকে তুলে নিয়ে আসে পুলিশ।
এদিকে বিজিবি, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, র্যাব, সোয়াত, মহানগর ডিবি পুলিশের সমন্বয়ে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ফজরের আজানের সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় এ অভিযান। ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।
অস্ত্রধারীরা যাতে রেস্টুরেন্টের পাশে থাকা লেক দিয়ে পালিয়ে যেতে না পারে, সে জন্য নৌ বাহিনীর একটি কমান্ডো টিম মোতায়েন করা হয়েছে। সাথে রয়েছে ফায়ার সার্ভিসের টিমও। তাদের স্পট লাইট বসানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ডিবি (উত্তর) ডিসি শেখ নাজমুল আলম বাংলামেইলকে ঘণ্টাখানেক আগে বলেছেন, ‘আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি, জিম্মি হওয়া লোকদের উদ্ধারে ভোরের দিকে অভিযান শুরু হবে।’
এর আগে অস্ত্রধারীদের হামলায় ডিবির সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম এবং বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালাউদ্দিন নিহত হন। ওই রেস্টুরেন্টে গোলাগুলির সময় তারা গুলিবিদ্ধ হন। গুরুতর অবস্থায় ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হয় তাদের। সেখানেই প্রথমে ওসি সালাউদ্দিন এবং পরে এসি রবিউল ইসলাম মৃত্যুবরণ করেন। গোলাগুলির সময় তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে গিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, রাত সাড়ে ৯টার দিকে হলি আর্টিসানে হামলা করে কয়েকজন অস্ত্রধারী। এসময় তারা বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে রেস্টুরেন্টের অবস্থানকারীদের জিম্মি করে। সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পাশাপাশি আহত হয়েছেন প্রচুর সংখ্যক পুলিশ সদস্য।