ঢাকা : শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জন্মদিন আজ। বাংলাদেশী ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদ এই অধ্যাপক ১৯৪০ সালের এ দিনে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
মুহাম্মদ ইউনূসের বাবার নাম হাজী দুলা মিয়া ও মা সুফিয়া খাতুন। তার প্রথম বিদ্যালয় মহাজন ফকিরের স্কুল। সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময় বয়েজ স্কাউটসে যোগ দেন তিনি। স্কাউটসের হয়ে ১৫ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন ইউনূস। চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ১৬তম স্থান অধিকার করেন ও চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি হন। সেখানে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। সে সময় নাটকে অভিনয় করে প্রথম পুরস্কার পান।
সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা ও দৈনিক আজাদীতে ইউনূস নিয়মিত কলাম লিখতেন। ১৯৫৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের সম্মান শ্রেণীতে ভর্তি হন। সেখান থেকেই স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
স্নাতকোত্তর শেষে গবেষণা সহকারী হিসেবে ব্যুরো অব ইকোনমিক্সে যোগ দেন ইউনূস। ১৯৬২ সালে চট্টগ্রাম কলেজের প্রভাষক হন। ১৯৬৫ সালে ফুলব্রাইট স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যান। ১৯৬৯ সালে ভেন্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি লাভ করেন। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত মিডল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় টেনেসির ন্যাশভিলে নাগরিক কমিটি গঠন করেন। ‘বাংলাদেশ নিউজলেটার’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বাংলাদেশীদের সঙ্গে ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ তথ্য কেন্দ্র চালু করেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রতি অন্যদের সমর্থন আদায় ও পাকিস্তানকে সামরিক সহযোগিতা প্রদান বন্ধ করতে মার্কিন কংগ্রেসে লবি করার উদ্দেশে তিনি এ সব উদ্যোগ নেন।
মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৭২ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। বিভাগের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে অধ্যাপক পদে উন্নীত হন এবং ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত এ পদে কর্মরত ছিলেন।
১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝতে পারেন স্বল্প পরিমাণ ঋণ দরিদ্র মানুষের জীবন-মান উন্নয়নে কার্যকরী হতে পারে। সে সময়ে গবেষণার লক্ষ্যে গ্রামীণ অর্থনৈতিক প্রকল্প চালু করেন। ১৯৭৪ সালে তেভাগা খামার প্রতিষ্ঠা করেন, যা সরকার প্যাকেজ প্রোগ্রামের আওতায় অধিগ্রহণ করে। নিজে জামিনদার হয়ে ১৯৭৬ সালের ডিসেম্বরে স্থানীয় জনতা ব্যাংক থেকে প্রকল্পের মাধ্যমে জোবরা গ্রামের গরিব মানুষদের ঋণ দেওয়া শুরু করেন। এভাবে যাত্রা শুরু গ্রামীণ ব্যাংকের। ১৯৮৩ সালের ২ অক্টোবর তার গ্রামীন প্রজেক্ট পূর্ণাঙ্গ ব্যাংকে রূপ নেয়।