শিক্ষক হত্যা চেষ্টা: রিমান্ডে নেয়া ‘জঙ্গি’ ফাহিম ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

মাদারীপুর: জেলার সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজের শিক্ষক রিপন চক্রবর্তী হত্যা চেষ্টায় ‘জড়িত’ গোলাম ফাইজুল্লাহ ফাহিম পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে। ফাহিম এ ঘটনায় ১০ দিনের রিমান্ডে ছিল।

শনিবার (১৮ জুন) ভোরে সদর উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়েনের মিয়ারচরে এ ‘বন্দুকযুদ্ধ’ সংঘটিত হয়।

গত বুধবার (১৫ জুন) ওই শিক্ষককে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে ‘ফাহিমসহ’ কয়েক যুবক। শিক্ষকের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা দৌড়ে পালানোর সময় জনতার হাতে ধরা পড়ে গোলাম ফাইজুল্লাহ ফাহিম। পরে তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে জনতা।

পুলিশ ফাহিমকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শুক্রবার মাদারীপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৫ দিনের রিমান্ড চায়। শুনানি শেষে বিচারক মো. সাইদুর রহমান জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ডের নেয়ার কয়েকঘণ্টা পর শনিবার ভোরে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ফাইজুল্লাহ ফাহিম নিহত হন। সকালের দিকে ফাহিমের মৃতদেহ মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ। উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা সংবাদকর্মীদের বলেছেন, ভোরে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ফাহিমের মৃত্যু হয়েছে।

নিহত ফাহিম ঢাকার উত্তরার একটি কলেজ থেকে এবছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সদস্য ছিলেন বলে পুলিশের দাবি। রাজধানীর উত্তরার দক্ষিণ খানে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন ফাহিম। তারা বাবা গোলাম ফারুক একটি তৈরি পোশাক কারখানার কর্মকর্তা, মা গৃহিনী।

ফাহিম গত ১১ জুন সকালের পর থেকে নিখোঁজ বলে দক্ষিণ খান থানায় তার বাবা গোলাম ফারুক একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন। বাবার মোবাইল ফোনে সর্বশেষ এসএমএস করে ফাহিম জানিয়েছিলেন, ‘বিদেশ চলে গেলাম, এছাড়া কোনো উপায় ছিল না। বেঁচে থাকলে আবারও দেখা হবে।’

এরপর গত বুধবার মাদারীপুরে শিক্ষক রিপন চক্রবর্তী হত্যাচেষ্টার সময় ধরা পড়ার পর ছেলের খবর পান ফারুক। পুলিশ জানায়, ফাহিমের দেয়া প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে ওই হামলায় সম্পৃক্ত ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। মামলার অপর ৫ আসামিরা হলো, সালমান তাসকিন, শাহরিয়ার হাসান, জাহিন, রায়হান ও মেজবাহ। এরপর শুক্রবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়েছিল পুলিশ।

সম্প্রতি লেখক, প্রকাশক, ব্লগার, শিক্ষক, বিদেশি নাগরিক, ইমাম, পীর, পুরোহিত, যাজক, ভিক্ষু হত্যার মতো একই কায়দায় ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করা হয় মাদারীপুরের শিক্ষক রিপনকেও। হামলার ধরন দেখে এতে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার সন্দেহ হয় পুলিশের। এরপর ঢাকায় গিয়ে ফাহিমের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

জঙ্গি সমস্যা নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে সরকার ও প্রশাসন। কিন্তু এর নেপথ্য শক্তিকে বুঝে ওঠার আগেই একের পর এক আটক জঙ্গি পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হচ্ছে। গত ৯ জুন পর্যন্ত তিন দিনে অন্তত পাঁচজন জেএমবি সদস্য নিহত হয়েছে পুলিশের গুলিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *