সৌদি আরব থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাংলাদেশি মোবাইল ব্যবসায়ীদের নোটিশ !

সৌদি সরকার ঘোষিত সকল মোবাইল ফোন শিল্পকে শতভাগ দেশীয়করণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই লক্ষ্যে বিদেশি মোবাইল ফোনের দোকানগুলোকে নিজ নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুটিয়ে নিতে সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। তবে বেঁধে দেয়া সময় শেষ হতে না হতেই শুরু হয়েছে অভিযান।

আর এতে করে বন্ধ হচ্ছে বিশ্বে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরবের বাংলাদেশি মোবাইল দোকানগুলো। আর এ দোকানগুলো বন্ধ হওয়াতে যেমন বিপাকে পড়েছেন সেদেশে কর্মরত বাংলাদেশি মোবাইল ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মীরা, তেমনি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের।

বিশ্বে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরব। এদেশে রয়েছে ১৫ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি। যারা মেধা, দক্ষতা ও শ্রম দিয়ে সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন সৌদি আরাবে। এখানে বিপুল সংখ্যক কর্মী মোবাইল ফোনের দোকানে কাজ করেন। আবার অনেকে উপার্জন জমিয়ে কিংবা বাংলাদেশ থেকে টাকা আনিয়ে কফিলের (মালিক) নামে নিজেই দিয়ে বসেছেন দোকান। এসব দোকানে মোবাইল ফোনের পাশাপাশি থাকে মোবাইল সার্ভিসিং, বিকাশ, ব্যালেন্স লোডসহ নানা সুবিধা।

আর সৌদি নাগরিকের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে আগামী ০২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সৌদি আরবের মোবাইল ফোন শিল্পকে শতভাগ দেশীয়করণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়। তবে সেপ্টেম্বর এর বাকি এখনো দুই মাস। আর এ দুই মাস আগ থেকে শুরু হয়েছে অভিযান। এ অভিযানের কারণে যেমন বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা, তেমনি সাধারণ প্রবাসীরাও।

এদিকে শ্রম বিভাগের কর্মকর্তারা মার্কেটে গিয়ে দেখেন, রমজানের শুরু থেকেই দেশটির বাণিজ্যিক এলাকাগুলোতে অর্ধেকের মতো মোবাইল ফোনের দোকান বন্ধ। কেউ ভয়ে সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রেখেছে, আবার কেউ একেবারে গুটিয়ে নিচ্ছে। শ্রম বিভাগের পরিদর্শন দল ১৩৬টি মোবাইল ফোনের দোকান পরিদর্শন করেন। যার মধ্যে ১০৮টি দোকান সাময়িকের জন্য বন্ধ ছিল। আবার নির্ধারিত সময়ের পরও মোবাইল ফোনের দোকানে কাজ করার অপরাধে ১২৮ জন বিদেশিকে আটক করেছে দেশটির শ্রম ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

রিয়াদে শ্রম মন্ত্রণালয়ের শাখা অফিসের পরিচালক আলী বিন আহমেদ আল-হারবী বলেছেন,
‘পরিদর্শকরা যেন কোনো অনিয়ম ধরতে না পারে সেজন্য দোকানগুলো সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করে রাখা হয়েছিল।’

এর অর্থ দাঁড়ায়, দোকানগুলো অথবা দোকানের মালিকেরা সৌদি আরবের মোবাইল ফোন খাতের শ্রম বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের সিদ্ধান্তের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে। এমনকি শ্রম মন্ত্রণালয়ের এই পরিদর্শনের খবর কোনো না কোনোভাবে আগেই জেনে গিয়েছিল দোকান মালিক এবং তাদের বিক্রয়কর্মীরা।

পরিদর্শনে এমন ঘটনা দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করে আল-হারবী বলেন, ‘সরকারি সিদ্ধান্তের বিপরীতে অবস্থান নিয়ে কোনো কাজ হবে না। কারণ এমন অপরাধ যারা করবে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়ার নির্দেশ আছে।’

অর্থাৎ সাময়িকভাবে বন্ধ করে কোনো লাভ হবে না। এমনকি এটা নিয়ে লুকোচুরি কিংবা সরকারি সিদ্ধান্তের বিপরীতে অবস্থান নিলে শাস্তি ভোগ করতে হবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *