গ্রীসে আটকাপড়া অভিবাসীরা অনেকে দেহব্যবসায় বাধ্য হচ্ছে

ইউরোপে নতুন জীবন শুরু করার আশায় যে অভিবাসীরা নৌকায় সাগর পাড়ি দিয়ে গ্রীসে এসেছিল তাদের মধ্যে অনেক পুরুষকেও দেহব্যবসা করে অর্থ আয় করতে হচ্ছে।

বিবিসির এক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, যে হাজার হাজার লোক মধ্যপ্রাচ্য এশিয়া এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে গ্রীসে ঢুকেছিল – তাদের অনেকেই সেদেশে আটকা পড়েছে।

অভিবাসী অনেক তরুণ এখন এথেন্সে পাঁচ-দশ ইউরোর বিনিময়ে বয়স্ক গ্রীক পুরুষদের বিনোদনের সামগ্রী হচ্ছে। কারো কারো বয়েস ১৫ বছরও হবে কিনা সন্দেহ।

migrants_resorting_to_prostitution_in_athens

অন্তত ৬০ হাজার অভিবাসী গ্রীসের রাজধানী এথেন্সসহ মূলভুমির নানা জায়গায় এবং ছোট ছোট দ্বীপগুলোতে শরণার্থী শিবিরে বাস করছে।

এথেন্স শহরের পার্কগুলোতে প্রতিনিয়তই দেখা যায়, বেঞ্চে হেলান দিয়ে তরুণ ছেলেরা বসে আছে। এরা অনেকেই মাদকাসক্ত বা মাদক বিক্রেতা।

অন্য অনেকে ‘পুরুষ দেহব্যবসায়’ জড়িয়ে পড়েছে।

migrants_resorting_to_prostitution_in_athensImage copyrightBBC
Image captionএথেন্সের পার্কগুলোয় নিয়মিতই এমন দৃশ্য দেখা যায়

বিবিসির সংবাদদাতা টমাস ফেসি এদের কয়েকজনের সাথে কথা বলেছেন। এরা কয়েক ইউরোর বিনিময়ে পার্কের ভেতরে ঝোপঝাড়ের মধ্যেই দেহদান করে।

টমাস ফেসি বলছিলেন, ঝোপঝাড়ের মধ্যে পড়ে থাকা ব্যবহৃত কনডম থেকে স্পষ্টই বোঝা যায় এখানে কি চলছে।

একজনের নাম আজাদ – যে ইরান থেকে এসেছিল জার্মানি যাবার আশায়। সেই আশা শেষ হয়ে গেছে, জার্মানি যাবার পথ এখন বন্ধ।

কিন্তু তার এখন দরকার চারশো ইউরো – যা দিলে মানবপাচারকারীরা তাকে ইরানে ফিরে যাবার ব্যবস্থা করে দেবে। সেই টাকা রোজগারের জন্য সে দেহদানের পথ নিয়েছে।

migrants_resorting_to_prostitution_in_athens

আজাদ বলছিল, “আমি দেশে কখনো এ কাজ করিনি। প্রথমবার এই অন্যায় কাজ করার জন্য লজ্জাবোধ হয়েছিল। আমি এজন্য দু:খ বোধ করছি।”

আরেকজনের নাম আমির – সে এসেছে আফগানিস্তান থেকে। তার কথা – “আমি অনেকবার আত্মহত্যা করার কথা ভেবেছি। কিন্তু আমার মায়ের কথা ভেবে পারি নি।”

এই অভিজ্ঞতার পর আমির মনে করছে, ইউরোপে এভাবে আসাটা তার ভুল হয়েছিল।

 

এরা সবাই উত্তর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যেতে চায় কিন্তু সেসব দেশে যাবার সীমান্ত পথ এখন বন্ধ হয়ে গেছে।

এই অভিবাসীদের এখন দেশে ফিরে যাবারও পথ নেই, আবার গ্রীসে বৈধপথে টাকা উপার্জনেরও পথ নেই।

ফলে তাদের মধ্যে জন্ম নিয়েছে ব্যাপক হতাশা এবং টিকে থাকার জন্য তারা এখন যে কোন কিছু করতে তৈরি।

 

সুত্র: বিবিসি বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *