ঢাকা: প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঐতিহাসিক সফরে জাপানের শহর হিরোশিমায় পৌঁছেছেন বারাক ওবামা। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের ফেলা পারমাণবিক বোমায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল এই শহরটি। এরপর আর কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট স্থানটি পরিদর্শনে যাননি।
জি-সেভেন সম্মেলন শেষ করে জাপানে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি আইওয়াকুনি থেকে হিরোশিমায় পৌঁছেন ওবামা। সেখানে পৌঁছে তিনি তার সফর সম্পর্কে বলেন, ‘কীভাবে সবচেয়ে বেদনাদায়ক বিভক্তি জোড়া লাগানো যায় এটা তার একটা প্রমাণ।’ তবে এই সফরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন ঘটনার জন্য ক্ষমা চাইবেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
টেলিভিশন ফুটেজে দেখা যায়, ওবামা বিমান থেকে হিরোশিমায় অবতরণ করেছেন এবং হিরোশিমা পিস মেমোরিয়াল জাদুঘরে প্রবেশ করেছেন। এরপর সেখান থেকে হেঁটে জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবের সঙ্গে হিরোশিমা পিস মেমোরিয়াল পার্কে যান। তারা সেখানে হিরোশিমায় নিহতদের স্মরণে প্রজ্জলিত শিখার সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন।
ওবামা প্রথমে সেখানে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। পরে করেন শিনজো অ্যাবে। এর আগে ওবামা তার হিরোশিমা সফরকে ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রাণ হারানো সবার প্রতি সম্মান জানানোর একটি সুযোগ’ বলে মন্তব্য করেন। গত ১০ মে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দপ্তর হোয়াইট হাউজ থেকে জানানো হয়েছিল, ২৭ মে হিরোশিমা পরিদর্শন করবেন তিনি।
ওবামার প্রেস সচিবের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয় ‘পরমাণুমুক্ত একটি বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চেষ্টার অংশ হিসেবে শিনজো অ্যাবের সঙ্গে হিরোশিমায় এক ঐতিহাসিক সফরে যাবেন প্রেসিডেন্ট।’
পৃথিবীর ইতিহাসে কলঙ্কিত অধ্যায়গুলোর একটি জাপানের হিরোশিমা ট্রাজেডি। আধুনিক সভ্যতার ইতিহাসে মার্কিন অসভ্যতার নজির বললেও ভুল হবে না এটিকে। প্রায় ৭১ বছর আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট সকালে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী জাপানের হিরোশিমা শহরের ওপর ‘লিটল বয়’ নামের বোমটি ফেলে। এর তিন দিন পর নাগাসাকি শহরের ওপর ‘ফ্যাট ম্যান’ নামের আরেকটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীতে শান্তি, নিরাপত্তা আর মানবাধিকারের কথা বললেও আজ পর্যন্ত স্থানটি পরিদর্শনে যাননি ক্ষমতাসীন কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাদের ধারণা, স্থানটি পরিদর্শন তাদের অপরাধ স্বীকারের মধ্যে পড়ে যাবে। মার্কিনিরাও হিরোশিমার ঘটনাটিকে ‘প্রয়োজনীয় অপরাধ’ বলে মনে করে।
অনুমান করা হয়, ১৯৪৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বোমা বিস্ফোরণের ফলে হিরোশিমাতে প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার লোক মারা যায়। নাগাসাকিতে মারা যায় প্রায় ৭৪ হাজার লোক। পরবর্তীতে এই দুই শহরে বোমার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় আরো দুই লাখ ১৪ হাজার লোক। ইতিহাসের ভয়বহতম হত্যাযজ্ঞ ছিল এটি।
Md Nazim Uddin liked this on Facebook.
Jaynal Abedin liked this on Facebook.
Moin Ahmed liked this on Facebook.
Saleh Ahmed Sajib liked this on Facebook.
Atikur Rahaman liked this on Facebook.
Khandakar Mamun liked this on Facebook.