বাংলাদেশে যারা দিনরাত মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে তারা যদি আধা ডজন মানুষকে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ফাঁসি দেয় তাহলে সেই ফাঁসী দেবার কারণ আর যাই হোক মানবতাবিরোধী অপরাধ নয় সেটা অনুধাবন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর হওয়া লাগেনা। যেকোন অশিক্ষিত মানুষই সেটা বুঝতে পারে।
কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরোধীতা করার জন্য গন্ডামারায় সাজোয়া বদর বাহিনী বাংলাদেশ পুলিশের উর্দি পড়ে গ্রামের ভেতরে যেভাবে মানুষ হত্যা করছে আর ধরপাকড় হয়রানী, তান্ডবলীলা চালাচ্ছে সেই একই তান্ডবলীলা চালিয়েছিল ১৯৭৩-৭৫ সালে শেখ মুজিবের রক্ষীবাহিনী আর ১৯৭১ সালে ইয়াহিয়ার হানাদার বাহিনী । ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধ কারা করেছিল সেটা সবার মনে আছে কিন্তু রক্ষীবাহিনী কি কি করেছিল সেটা সবাই ভুলে গেছে (? ) বাংলাদেশের সুশীল সমাজের স্মরণ শক্তি হ্রাসবৃদ্ধি ঘটে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের থেকে পাওয়া সুযোগ সুবিধার তারতম্যের উপর।
আল বদর বাহিনী বা রক্ষীবাহিনী বা বাংলাদেশ পুলিশ এখন কি করছে গন্ডামারায়? এই গ্রামের মানুষেরা কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে। তারা চায়না তাদের গ্রাম ধ্বংস হোক আর এই দাবী করার জন্যই কি তাদেরকে গুলি করে হত্যা করা হবে? আওয়ামীলীগের এস আলম গন্ডমারা গ্রামে যে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি প্রতিষ্টিত করার জন্য গ্রামের মানুষের জমি হরফ করেছে, গ্রেফতার, গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করছে, সেই কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আসল মালিক আসলে আল বদর বাহিনীর নেত্রী আর সেকারনেই বাংলাদেশে পুলিশ বা রক্ষীবাহিনী বা আল বদর বাহিনী গ্রামের ভেতরে ঢুকে গ্রামের মানুষকে গুলি করে হত্যা করছে। আর সেকারনেই ছেলেকে না পেয়ে ছেলের ৯০ বছর বয়সি পিতাকে গ্রেফতার করেছে।
পাকিস্তানের সামরিক সরকার ১৯৭১ সালে শেখ মুজিব ও তার পরিবারকে রক্ষা করে, পূর্ন নিরাপত্তা দেয় এর বিনিময়ে পাকিস্তানের প্রতি কৃতজ্ঞ শেখ মুজিব ও তার পরিবার পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেনি। ১৯৭২ সালে যখন ভারত শেখ মুজিবকে বাংলাদেশে তাদের রাজ্য সরকার হিসাবে প্রতিষ্টিত করে তখন শেখ মুজিবকে রক্ষা করার জন্য রক্ষীবাহিনী পাঠায়। ভারত থেকে আর্মী এসে এই রক্ষীবাহিনীর স্থানীয় সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেয়। শেখ মুজিবের বিরোধিতা করলে এই রক্ষীবাহিনী গ্রামের ভেতর এসে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের হত্যা করতো। ঠিক একইভাবে শেখ হাসিনার কয়লা বিদ্যুতের বিরোধিতা করার জন্য এখন বাংলাদেশ পুলিশ গ্রামে এসে গুলি করে গ্রামবাসীদের হত্যা করছে, গ্রেফতার করছে, হয়রানি করছে।
১৯৭৩-৭৫ সাল বা ১৯৭১ সালের সাথে আজকের ২০১৬ সালের কোন পার্থক্য নেই। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী বাংলাদেশে এসে গুলি করে মানুষ হত্যা করেছে আর ১৯৭২-৭৫ সালে ভারতের রাজ্য সরকার বাংলাদেশে গুলি করে মানুষ হত্যা করেছে, যেহেতু বাংলাদেশ ভারতের অংগরাজ্য তাই ভারতের রাজ্যসরকার এখন ২০১৬ সালেও বাংলাদেশে মানুষ হত্যা করছে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মানুষ কোন অপরাধ করেছিল?
– ওরা স্বাধীনতা চেয়েছিল
১৯৭২-৭৫ সালে বাংলাদেশের মানুষ কি অপরাধ করেছিল?
– ওরা দিল্লীর প্রতিষ্টিত ভারতের রাজ্য সরকার মুজিবের বিরোধিতা করেছিল
২০১৬ সালে গন্ডমারা গ্রামের মানুষ কি অপরাধ করেছে?
– ওরা শেখ হাসিনার মালিকানাধীন কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র চায়না
কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র একটি জনপ্রিয় ব্যবসার নাম। যারা এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিক তারা এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আশেপাশে বাস করেনা। যারা এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আশেপাশে বাস করে তারা যদি বিষাক্ত কেমিক্যাল গ্যাসে নিঃশ্বাস নিয়ে না মরে তাহলে গুলি করে তাদের মারা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের কোটি কোটি ডলার লুট করেও টাকার নেশা মেটেনি। সুন্দরবন ধ্বংস করে বিদ্যুৎ বিক্রি করে মুনাফা করতে হবে। গ্রামের পর গ্রাম উজার করে বিদ্যুৎ বিক্রি করে মুনাফা করতে হবে।
বাংলাদেশকে যারা জাহান্নাম বানিয়েছে তাদেরকে কি মানবতাবিরোধী অপরাধের কাটাগোরিতে গন্য করা হবে?
Moin Ahmed liked this on Facebook.
Addul Nur liked this on Facebook.