শহরের ৮০ শতাংশ বাসিন্দাই বায়ুদূষণের শিকার

ঢাকা: বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ছোট এবং বড় শহরগুলোতে বাস করা মোট জনসংখ্যার ৮০ ভাগেরও বেশি মানুষ বিপজ্জনক বায়ুদূষণের শিকার বলে সতর্ক করে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও)।

বায়ুদূষণের কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে যে বায়ু আমদের দেহে প্রবেশ করে তা ভয়ানক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। এতে প্রতি বছর বিশ্বে ৩০ লাখের বেশি লোককে অকালমৃত্যু বরণ করতে হয় বলে ডব্লিওএইচও’র গবেষণায় উঠে আসে।

সংস্থাটি জানায়, বায়ুদূষণে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যেও রয়েছে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য। উচ্চ আয়ের দেশগুলোর শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে ৫৬ শতাংশ লোক বায়ুদূষণের শিকার হয়। আর নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর ক্ষেত্রে এর হার ৯৮ শতাংশ।

২০০৮ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে প্রতি বছর বিশ্বে গড়ে আট শতাংশ করে বায়ুদূষণের শিকার লোকদের সংখ্যা বেড়েছে। তবে একই সময়ের মধ্যে অবস্থার উন্নতি ঘটিয়েছে ধনী দেশের শহরগুলো।

বায়ুদূষণের সর্বোচ্চ মাত্রা হিসেবে পরিচিত ‘পিএম টেন’ এবং ‘পিএম টু পয়েন্ট ফাইভ’ অবস্থা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় যথাক্রমে ভূমধ্যসাগরীয় এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে। এ অঞ্চলের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে বায়ুদূষণের মাত্রা বছরে গড়ে পাঁচ থেকে ১০ গুন বৃদ্ধি পায়।

ওই অঞ্চলগুলোতে সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণের শিকার শহরের মধ্যে রয়েছে নাইজেরিয়ার অনিতশা, পাকিস্তানের পেশওয়ার এবং রাওয়ালপিন্ডি, ইরানের জাবোল, ভারতের এলাহাবাদ এবং গোয়ালিয়র ও সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ এবং আল জুবাইল।

তবে ধনী দেশগুলোতেও বায়ুদূষণ একটি প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সপ্তাহে একদিন গাড়িমুক্ত দিবস ঘোষণা করেছে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস।

এ বিষয়ে ডব্লিওএইচও’র সুস্থ পরিবেশ বিষয়ক সমন্বয়ক ড. কার্লোস দোরা বলেন, ‘শহরের বাতাসের মান বাড়াতে বিষয়টিকে স্বাস্থ্য এবং উন্নয়ন অগ্রাধিকার খাতে অন্তর্ভুক্ত করা প্রত্যেক নগর এবং জাতীয় সরকারের জন্য অপরিহার্য।’

তিনি আরো বলেন, ‘বাতাসের মান বাড়লে বায়ুদূষণ থেকে সৃষ্ট রোগে মৃত্যুর হার কমে আসবে, শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতা বাড়েবে এবং জনগণের আয়ু বেড়ে যাবে। এছাড়া এটি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধেও ভূমিকা রাখবে।’

One thought on “শহরের ৮০ শতাংশ বাসিন্দাই বায়ুদূষণের শিকার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *