মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ড কার্যকরে আগে জামায়াতে ইসলামীর আমীর মতিউর রহমান নিজামীর সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যরা সাক্ষাৎ করেছেন। মঙ্গলবার রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রায় দেড় ঘণ্টা নিজামীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পান তার স্ত্রী, সন্তান, ভাই ও নাতিসহ ২১ জন। পরে তারা রাত ৯টা ২৩ মিনিটের দিকে কারাগার থেকে বের হয়ে গাড়িতে চলে যান।
কারা সূত্রে জানা গেছে, শেষ মুহূর্তে পরিবারের সদস্যদের কাছে পেয়ে নিজামী আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তিনি সবাইকে নিয়ে তিনি মোনাজাত করেন এবং সেটি দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে। সূত্রের দাবি, নিজামী তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। সবার খোঁজ-খবর নেন। নিজের জন্য সবার কাছে দোয়া চান। পরিবারের সদস্য ও দলের নেতা-কর্মীদের নিজামী ধৈর্য ধরার পরামর্শ দেন।
এদিকে, নিজামীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ফেরার সময় তার পরিবারের দুই নারী সদস্য সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘চাচা শক্ত আছেন।’ এ সময় তারা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের মূল ফটকের ডান দিক দিয়ে বের হয়ে পায়ে হেঁটে চকবাজারের দিকে চলে যান। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তারা নিজামীর ভাতিজি বলে পরিচয় দেন। তারা আরও জানান, সাক্ষাতে গিয়ে তারা চাচাকে (নিজামী) নামাজ পড়তে দেখেন। নামাজ শেষে সবার সঙ্গে তিনি সাবলীলভাবে কথা বলেন। এ সময় তিনি খুব শান্ত ছিলেন।
সব শেষে তিনি বলেন, ‘আমি শক্ত আছি, তোমরা শক্ত থেক।’ কারা সূত্র জানায়, সকালে নাস্তার পর ও দুপুরে একবার মেডিকেল চেকআপ করা হয়েছে নিজামীর। ডা. বিপ্লব কান্তি ও আহসান হাবিব এ পরীক্ষা করেন। চেকআপে তার শরীরে কোনো অসুস্থতা পাননি চিকিৎসকরা। তিনি সুস্থ ও স্বাভাবিক রয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে কারা সূত্র জানিয়েছে, দিনভর নিজামী অনেকটাই নিশ্চুপ ছিলেন।
সকালে ডিআইজ প্রিজন গোলাম হায়দার ও সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির তার কাছে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার বিষয়ে জানতে চান। এ সময় তিনি প্রাণভিক্ষা চাইবেন না বলে জানান। নিজামী সারাদিনই রজনীগন্ধা সেলে ছিলেন। পরিবারের সদস্যরা যাওয়ার পর তাকে সেখান থেকে বের করা হয়। সেই সেলে নিজামীর দায়িত্বে ছিলেন ডেপুটি জেলার মো. লাভলু। আজ বাইরে থেকে কোনো খাবার যায়নি নিজামীর কাছে। তিনি কারাগারের খাবার খেয়েছেন। সকাল ৭টায় রুটি-সবজি দেয়া হয়েছিল। দুপুর ১২টায় তাকে কারা কেন্টিন থকে দুপুরের খাবার দেয়া হয়। সন্ধ্যা ৭টায় রাতের খাবার দেয়া হয়। রাতে পরিবারের পক্ষ থেকে যে খাবার নিয়ে আসা হয়েছিল, সেটা খাবেন না বলে জানান নিজামী। এছাড়া রাজধানীর নাম করা রেস্টুরেন্ট থেকে পোলাও, মুরগী ও খাসির মাংস সরবরাহ করে কারা কর্তৃপক্ষ। সেগুলোও খাননি নিজামী। নিয়মিত ও স্বাভাবিক খাবার মাছের ঝোল, সাদা ভাত ও ডাল খেয়েছেন তিনি। ফ্রেশ পানি পান করেছেন।
পরিবারের লোকদের সঙ্গে কথা বলার ফাঁকে তসবিহ গুণছিলেন জামায়াতের এই নেতা। আর আল্লাহ বাঁচাও, আল্লাহ বাঁচাও বলে উচ্চস্বরে শব্দ করছিলেন।
Abdul Mannan Mannan liked this on Facebook.
Atikur Rahaman liked this on Facebook.
Shah Nawaz liked this on Facebook.