মূক, বধীর, কানা বাংলাদেশে নিঃশব্দে মানুষ হত্যা চলে। কেউ দ্যাখেনা। কেউ শোনেনা। কেউ কিছু জানেনা। তাই কেউ কিছু বলেনা। হাজার হাজার রাউন্ড গোলাবারুদ বাতাসে উবে যায় কেউ মরেনা। সেদিন সবাই রং মেখে শুয়ে ছিল। পুলিশ দেখে দৌড়ে পালাতে গেলে পুলিশেরা তাদের ধরে যার যার বাসার বিছানাতে লেপের তলায় পৌছে দিয়া আসে ঘুমপাড়ানি মাসিপিসি গান শুনিয়ে। এমন গান শুনেছে তারাও মাছের বদলে যাদের লাশ নদীনালাতে প্রতিদিন ভেসে উঠে। এমন ঘুমপাড়ানি মাসিপিসি গান শুনে কেটে যায় বাংলাদেশের মূক, বধীর, কানা, পঙ্গু, প্রতিবন্ধী জনগণের দিনরাত্রি।
বাংলাদেশে গণহত্যা শুরু হয় ২৫শে মার্চ ১৯৭১ সাল থেকে। গণহত্যা চলছে এখনো। গণহত্যার কারণ ছিল ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করা, বা মানুষের মনে ভয় ঢুকিয়ে দিয়ে লুটপাট বজায় রাখা। খুনী ও লুটেরাদের চেহারা ও ভাষা বদল হয়েছে শুধু, লুট বন্ধ হয়নি, খুন বন্ধ হয়নি, সুন্দরবন জ্বলছে, পাচার চলছে, চলবে যতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশে এক ফোটা সম্পদ অবশিষ্ট থাকে। মে ৫-৬, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বর গণহত্যা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষ মাথা ঘামায়না। ভুয়া মামলাতে গ্রেফতার, ক্রসফায়ার, জেলভর্তি নিরীহ মানুষ, নিরীহ মানুষের ফাঁসি এইগুলা নিয়া কেউ মাথা ঘামায় না। কাজ হয়েছে। সবাই ভীত । সফলতার সাথে সবাইকে মূক, বধীর ও কানা করে ফেলা হয়েছে। খুনী ও লুটেরাদের অভিনন্দন।
মহানবী হজরত মোহাম্মদ সাঃ কে কটুক্তি করে যে ব্লগ তৈরি করা হয়েছিল সেই ব্লগ আমি পড়েছি। ব্লগগুলা পরিকল্পিতভাবে এবং বেতন দিয়ে তৈরি করানো হয়েছিল। বেতনভোগী ব্লগারদের পরে একে একে জবাই করা হচ্ছে। এই ব্লগের যারা বিরোধিতা করেছিল প্রথমে তাদের হত্যা করা হয় পরে হত্যা করা হয় তাদের যারা বেতন নিয়ে এই ব্লগগুলো তৈরি করে। গণজাগরণ মঞ্চ, মহানবীকে কটুক্তি করে তৈরি ব্লগ, বিভিন্ন জাগাতে মানববন্ধন, মিছিলে পুলিশের গুলি, পেটানো, ইত্যাদি সবকিছুই হলো প্রজেক্ট। উদ্দেশ্য একটাই, তা হলো – জনগণকে ব্যস্ত রাখা, বিভ্রান্ত রাখা, লুটপাট থেকে দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে রাখা। বাংলাদেশের মূক, বধীর, কানা মানুষেরা সবাই যার যার জীবন বাঁচানোর জন্য দৌড়াচ্ছে আর ঘুরে ফিরে এসে দাঁড়াচ্ছে বন্দুকের নলের মুখে। ছোট্ট একটি বদ্বীপ বাংলাদেশ আর কোটিকোটি মানুষের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে বুলেট না থাকার কারণে সনাতন পদ্ধুতিতে ফিরে এসেছে “কোপাকুপি”। এখন চলছে কোপাকুপি।
গণহত্যার সফলতার পরে বাংলাদেশের পরবর্তী সফল কর্মসূচী হলো – পরিবেশ হত্যা।
এখন চলছে সুন্দরবন ধবংসের কাজ। রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনের জন্য কাঁচামাল আসছে জাহাজ বোঝায় করে। সুন্দরবন জ্বলছে। বুলেট ও কোপাকুপি থেকে বাঁচার পরে বাংলাদেশের মানুষ শ্বাস নেবে বিষাক্ত কেমিক্যালযুক্ত বাতাসে। বুলেট ও গোলাবারুদ ব্যবসায়ীরা অনেক মুনাফা করেছে এইবারে ওষুধ ও চিকিৎসা ব্যবসায়ীদের মুনাফার সুযোগ করে দেওয়া হবে।
মূক, বধীর, ও কানা হয়ে বাঁচতে চাইলেও বাঁচার উপায় রইলোনা। কারণ মূক, বধীর ও কানারা বাঁচার জন্য যে বাতাসে শ্বাস নেবে সেই বাতাসে থাকবে বিষাক্ত কেমিক্যাল গ্যাস। বুলেটে বা কোপাকুপিতে জীবন রক্ষা করে বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিয়ে বা শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মরে যেতে হবে। জন্মিলে মরিতে হবে। সে মরণ বুলেটে হোক বা কোপে, বা বিষাক্ত কেমিক্যাল গ্যাসে।