আজ কাল বৈশাখী নিজেই দাঁড়িয়ে আছে ধবংসের মুখোমুখি

কয়লা বিদ্যুৎ এর হুমকীর মুখে দাঁড়িয়ে আছে আজকের পহেলা বৈশাখ। শুভেচ্ছা জানাতে পারছিনা । দুঃখিত। অনেক কারণেই বুক ভারী হয়ে আছে। বুক ভারী হয়ে আছে বাংলাদেশের ধবংস দেখে । বুক ভারী হয়ে আচ্ছে বাংলাদেশীদের নিশ্চুপ বসে থাকা দেখে। সারা বিশ্বের কোথাও নেই সুন্দরবন যা বাংলাদেশে আছে। অথচ বাংলাদেশের মানুষ সুন্দরবনের খবর রাখেনা। বাংলাদেশের গনআন্দোলন এখন হয় ক্ষমতায় যাবার জন্য। নেতা নেত্রীরা দলের কর্মীদের লেলিয়ে দেন পদের লোভ দেখিয়ে আর এভাবেই ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল হত্যা করে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের। প্রতিদিন চলছে খুন, ধর্ষন, লুট, ধবংসের মুখে দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ।

রামপালে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি খুব শীঘ্রই উৎপাদন শুরু করতে যাচ্ছে।
রামপালের কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন শুরু হলে ধ্বংস হয়ে যাবে সুন্দরবন।
রামপালের কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ভারতের রাস্ট্রিয় মালিকানাধীন প্রতিষ্টান।

বাংলাদেশের গণআন্দোলন এখন রুপকথা।
বাংলাদেশীরা এখন আর দেশের সম্পদ বাঁচাতে আন্দোলন করেনা।
বাংলাদেশে এখন পুলিশ, র‍্যাব, আর ভারতের রাজ্য সরকারকে বাংলাদেশীরা ভয় করে।
বাংলাদেশীদের মুখে তালা, বুকে ঠেকানো রয়েছে বন্দুক।
কেউ নড়াচড়া করেনা। ভয়ে মুখ খোলেনা। এত ভয় এত নিশ্চুপ তবু প্রতিদিন গুম হচ্ছে মানুষ। লাশ পাওয়া যাচ্ছে পথে ঘাটে নদীনালাতে।
সাড়া বাংলাদেশে প্রতিদিন পাওয়া যাচ্ছে ধর্ষিতা মেয়ের লাশ।
সাধারণ মানুষ যারা পড়ালেখা জানেনা, বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়নি, আইফোন চেনেনা, ফেসবুকে লগ ইন করতে জানেনা, ইউটিউবে পর্ণ দ্যাখেনা, তারা সেই আগের মতই মাটি ভালবাসে। পরিবেশ রক্ষা করার জন্য প্রতিবাদ করে, প্রান দেয়। এই তো সেদিন পরিবেশযোদ্ধাদের হত্যা করে বাঁশখালীকে রক্তাক্ত করা হলো । রামপালের মতই বাঁশখালীর গন্ডামারার পশ্চিম বড়ঘোনাতে ব্যক্তিগত মূলধনে নির্মিত হচ্ছে সাইফুল আলম মাসুদের কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র। গ্রামের মানুষেরা প্রতিবাদ করলে মাসুদের ভাড়া করা পুলিশ ও গুন্ডারা হামলা চালায়। গ্রামের মানুষ হত্যা, গ্রেফতার ও ভুয়া মামলার মধ্য দিয়ে উদ্বোধন করা হয় এস আলম গ্রুপের কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র।  চিকিৎসা নিচ্ছে এমন আহত গ্রামবাসীকে হাসপাতালে হাতকড়া পড়িয়ে পুলিশ পাহাড়াতে রাখার মত অমানবিক নির্যাতন চালায় পরিবেশ সন্ত্রাসী এস আলমের ভাড়া করা পুলিশ।

পদ্মা পাড়ের কথা মনে পড়লো , তিতাসের কথা মনে পড়লো, এমনি মরুভুমি হবে সুন্দরবন। জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাবে সবকিছু।
পরিবেশযোদ্ধা বলে তাদের যারা পরিবেশ রক্ষা করার জন্য সংগ্রাম করে ও আত্মহুতি দিতে দ্বিধা করেনা ।
দেশপ্রেমিক বলে তাদের যারা দেশকে ভালবাসে আর সেই ভালবাসার জন্য জীবন দিতে কুন্ঠাবোধ করেনা।
রাস্ট্রদ্রোহী বলে তাদের যারা দেশ বিক্রি করে ও দেশের সম্পদ লুট, পাচার ও ধ্বংস করে।
পরিবেশ সন্ত্রাসী বলে তাদের যারা ঘনবসতিপূর্ন  ছোট্ট একটুখানি বাংলাদেশে কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে বিষাক্ত কেমিক্যাল গ্যাস দিয়ে মানুষকে শ্বাসরোধ করে মারার পরিকল্পনা করে ।

আজকের পহেলা বৈশাখ শোকের দিন শুভেচ্ছা জানাবার দিন নয়।
বিষাক্ত কেমিক্যাল গ্যাস বাতাসে মিশবে আর সেই বাতাসে যারা শ্বাস নেবে তারা আক্রান্ত হবে নানা রকম জটিল রোগে।
আমার শুভেচ্ছা তাদের কোন কাজে আসবেনা।

এবারের পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশের সন্তানদের রক্তে রঞ্জিত পহেলা বৈশাখ।
এবারের পহেলা বৈশাখ মোনাজাত করে উন্নতমানের জেলখানা উদ্বোধন করার পহেলা বৈশাখ।
এবারের পহেলা বৈশাখ  লাশ, ধর্ষন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ লুট, আর কার্বণের বিষাক্ত কেমিক্যাল গ্যাসের পহেলা বৈশাখ।
এবারের পহেলা বৈশাখ জেলখানা ভর্তি নিরীহ মানুষের ঠাসাঠাসি করা পহেলা বৈশাখ
এবারের পহেলা বৈশাখ ভারতের রাজ্যসরকারের স্বৈরাচারের সফলতা ও নির্বিকার নাগরিকের চুপচাপ তামাশা দেখার পহেলা বৈশাখ
এবারের পহেলা বৈশাখ ধর্ষিতা আইন আদালত ও আইন রক্ষাকারী বাহিনীর কলংকের পহেলা বৈশাখ

তারা অমানুষ যারা চোখ কান বন্ধ করে মুখোশ পড়ে রং মেখে সং সেজে নেচেকুদে এই পহেলা বৈশাখ উৎযাপন করে।
এবারের পহেলা বৈশাখ অমানুষ প্রদর্শনীর পহেলা বৈশাখ।

উৎসব আর উৎযাপন করার আর কিছু কি বাকী রয়ে গেছে??

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.