ঢাকা: বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ফোন রয়েছে। এর মধ্যে গ্রাহকরা কোনটি বেছে নেবেন তা নিয়ে বেশ দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভুগছে হয়। বিশেষ করে যাদের বাজেট কম তাদের চিন্তাটা আরও বেশি। কেননা, চীনের ব্র্যান্ডহীন, মানহীন ফোনে বাজার সয়লাব। এদের মধ্য থেকে সঠিক ফোনটি বেছে নেয়া রীতিমতো দুষ্কর। এই সমস্যার সমাধান দিতে সাশ্রয়ী দামের ফোন আনলো স্যামসাং। ফোনটির মডেল গ্যালাক্সি জে১ নেক্সট। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফোনটি আন্তর্জাতিক বাজারে উন্মুক্ত হয়। এর ঠিক কিছুদিন পর এটি বাংলাদেশের বাজারে আসে।
বাজারে কেউ ফোন কিনতে গেলে প্রথমেই জেনে নেন ডিসপ্লের আয়তন। ফোনের ডিসপ্লে ফোনের বড় অংশ না হলেও এর আকর্ষণ কম নয়। গ্যালাক্সি জে ১ নেক্সট ফোনটির ডিসপ্লের আয়তন ৪ ইঞ্চির। ডিসপ্লের রেজুলেশন ৪৮০x৮০০ পিক্সেল। এই ডিসপ্লেতে গ্লাস প্রটেকশন নেই। তবে ডিসপ্লের উজ্জ্বলতা ভালই। ডিসপ্লের উজ্জ্বলতা কমিয়ে বাড়িয়ে সহনশীল করে নেয়া যায়। টিএফটি ডিসপ্লেতে ক্যাপসিটিভ টাচস্ক্রিন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। ডিসপ্লের কালার ২৫৬ কে।
ফোনটির র্যাম ১ জিবি। এই ১ জিবি র্যামই ফোনটিকে যথেষ্ট দ্রুতগামী করেছে। যেকোনো অ্যাপ এতে অনায়াসেই চালানো যায়। ফোনটি অন-অফ হয় দ্রুত। র্যামের পরে ফোনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্রসেসর। গ্যালাক্সি জে১ নেক্সটে ব্যবহার করা হয়েছে ১.২ গিগাহার্টজ কোয়ার্ড-কোর প্রসেসর রয়েছে। যা দ্রুত এবং সহজতর কর্মক্ষমতা নিশ্চিত করে। আছে মালি ৪০০ এমপি২ জিপিইউ। ফলে ভিডিও দেখা যাবে নিখুঁত ভাবে।
এর বিল্টইন মেমোরি ৮ জিবি। বিল্টইন মেমোরি মাইক্রো এসডি কার্ডের মাধ্যমে ১২৮ জিবি পর্যন্ত বাড়ানো যাবে।
ফোনটির রিয়ার ক্যামেরা ৫ মেগাপিক্সেলের। রিয়ারে কুইক লঞ্চ ফিচার রয়েছে। এর এফ ২.২ অ্যাপারচার উজ্জ্বল ছবি তুলতে সহায়তা করে। কুইক লঞ্চ ফিচারের জন্য দ্রুততম সময়েই মধ্যেই ফোনের ক্যামেরা চালু করা যায়। ফোনটিতে একটির পর একটি ছবি তুলে যায় চোখের পলকেই। তবে রিয়ারে কোনো এলইডি ফ্লাশগান নেই। ক্যামেরায় ফ্লাশ নেই বলে অন্ধকারে এই ক্যামেরায় ভাল ছবি পাওয়া যাবে না। অন্যদিকে সেলফি ক্যামেরা ভিজিএ মানের। সেলফি ক্যামেরাও এলইডি ফ্লাশ নেই। সাশ্রয়ী দামের ফোনে এতসব সুবিধা আশা করাও যায় না।
ফোনটির আকর্ষণীয় একটি ফিচার হলো এর আল্ট্রা ডাটা সেভিং মোড। ফলে এটি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ডাটা সাশ্রয় করতে পারে। ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ১৫০০ অ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি। এই ব্যাটারি সম্পূর্ণ চার্জ দিলে একটা দিন খুব ভাল ভাবে চলে যাবে। ব্যাটারিতেও দ্রুত চার্জ নেয়।
ফোনটির ব্যাটারি সম্পূর্ণ চার্জ দিয়ে থ্রিজি নেটওয়ার্কে ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত টক টাইম পাওয়া যাবে। একটানা ২৯ ঘণ্টা পর্যন্ত অডিও গান শোনা যাবে।
সাশ্রয়ী দামের ফোন হলেও এটি দিয়ে ১০৮০ পিক্সেলের ফুল এইচ ডি’তে মাল্টিমিডিয়া ভিডিও দেখা যাবে। এতে অনেক গেমই খেলা যাবে। সম্প্রতি দেশে অবমুক্ত হওয়া, হিরোজ অব ৭১ রিটেলিয়েশন খুব ভালো ভাবে খেলা যায়। খেলা যায় রেসিং সিরিজের গেম গুলোও।
এই স্মার্টফোনটির অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহার করা হয়েছে ললিপপ ৫.১.১.।
ফোনটির ফিনিশিং এক কথায় অসাধারণ। অনায়াসেই এটি হাতের মুঠোয় ভরে নেয়া যায়। এতে ফিজিক্যাল হোম বাটন আছে। ফোনটির ডান পাশে আছে ডিসপ্লে লক এবং আনলক বাটন। বামপাশে ভলিউম বাটন রয়েছে। এই ভলিউম বাটন দিয়ে সেলফি তোলা যায়।
ফোনটিতে ৩.৫ মিলিমিটার অডিও জ্যাক এবং মাইক্রো ইউএসবি ভার্সন ২.০। যা চার্জিং পোর্ট হিসেবেও ব্যবহৃত হবে।
নেটওয়ার্ক কানেকটিভিটি হিসেবে ফোনটিতে আছে ওয়াইফাই, ৮০২.১১ বি/জি/ এন, ওয়াইফাই ডিরেক্ট, হটস্পট, ব্লুটুথ ভার্সন ৪.০, এ২ডিপি, জিপিএস, এ-জিপিএস, গ্লোনাস ইত্যাদি। এছাড়াও শেয়ার ইটের মাধ্যমে এই ফোন থেকে অন্য ফোনে তথ্য আদান-প্রদানের সুযোগ আছে।
বিশেষ ফিচার হিসেবে ফোনটিতে আছে এফএম রেডি, এক্সিলেরোমিটার, ফটো/ভিডিও এডিটর, এমপি থ্রি, ডাব্লিউএভি প্লেয়ার। এছাড়াও এতে ডকুমেন্ট ভিউয়ার আছে।
ফোনটিতে সহজেই অ্যাপ ইনস্টল এবং আনইনস্টল করা যায়। ডিসপ্লের উপরিভাগের অংশে অ্যাপ এবং ফিচার চালু করার জন্য কুইক ভিউ আছে। এই ভিউতে ওয়াইফাই, সাউন্ড, লোকেশন, স্ক্রিন রোটেশন, ব্লুটুথ সহ আরো অনেক ফিচার আছে। এগুলো পছন্দ অনুযায়ী সংযোজন কিংবা বিয়োজন করা যায়।
ফোনটির পুরুত্ব ১২৬.৬ x৬৩.১ x১০.৮ মিলিমিটার। ওজন ১২৩ গ্রাম। ডুয়েল সিমের এই ফোনটিতে মাইক্রো সিম স্লট ব্যবহার করা হয়েছে। রিমুভেবল ব্যাটারির ঠিক নিচেই আছে সিম ট্রে এবং মেমোরি কার্ড ট্রে।
সাদা, সোনালী এবং কালো এই তিনটি রঙে দেশের বাজারে ফোনটি পাওয়া যাচ্ছে। এর খুচরা মূল্য ৬ হাজার ৯৯৯ টাকা। ফোনটিতে এক বছরের ওয়ারেন্টি রয়েছে।
দেখুন ভিডিওতে: