রাস্ট্রধর্ম ইসলাম চাই – বাংলাদেশে মুসলমানের অস্তিত্ব দেখতে চাই

বাংলাদেশের মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনগণের মন্তব্য পড়লে মাঝে মাঝে মনে হয় ইসলাম ধর্ম প্রবর্তন হয়েছে দুই সপ্তাহ আগে আর ইসলাম ধর্মের ঠিকা নিয়ে রেখেছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় দলগুলো। দাবী উঠেছে রাস্ট্রধর্ম ইসলাম চাই। আরো বলা হচ্ছে বাংলাদেশে বসবাসরত ৯০% মুসলমানের ধর্ম নাকি ইসলাম আর সেকারনেই সেইসব মানুষেরা যে ধর্মে বিশ্বাস করে সেই ধর্মই রাস্ট্র ধর্ম হওয়া উচিৎ । সেটা খুব সত্য কথা। কিন্তু প্রশ্ন হলো তাহলে কে কার কাছে দাবী করছে? বাংলাদেশের ৯০% মানুষ যদি ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করেই থাকেন তাহলে তারা তাদের রাস্ট্রের ধর্ম ইসলাম করবেন এটাই স্বাভাবিক, সেটা করতে পারছেন না কেনো? দাবী করতে হবে কেনো? কে বাঁধা দিচ্ছে?

কার কাছে দাবী করছেন?
রাস্ট্রধর্ম ইসলাম হবার জন্য কি তাহলে ৯০% মুসলমানরা  ১০% অমুসলিমদের কাছে দাবী করছেন?
তার অর্থ দাঁড়াবে মুসলমানরা সংখ্যাগুরু হলেও তারা ১০% অমুসলিম দ্বারা আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ও রাজনৈতকভাবে নিয়ন্ত্রিত ।
এই দাবী থেকেই জানতে পারলাম যে বাংলাদেশের ৯০% তথাকথিত মুসলমানেরা ঈমান হারিয়েছেন।
বাংলাদেশের ৯০% মুসলমানেরা বাংলাদেশের ১০% অমুসলিমদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।

শুনে খারাপ লাগলেও বারে বারে এই দাবীর ঝর দেখে বিশ্বাস করতে বাধ্য হলাম।  ধর্ম নিয়ে হা ডু ডু খেলার মৌসুম চলে সাড়া দিনমান ধরে। রাত্রের আঁধারে আলো নিভিয়ে আলেম মারে। সকালে উঠে বলে – সবাই রং মেখে শুয়ে ছিল। মুসলমানেরা সব যার যার বাসাতে যেয়ে ঘুমিয়েছে। পেছনে ফেলে রেখে গেছে রং মাখা তাজবিহ, টুপি, লাঠি, জায়নামাজ, পাজামা বা পাঞ্জাবীর ছেড়া অংশ। নিজের ধর্ম কি কেউ জানেনা অথচ রাস্ট্রধর্ম ইসলাম চায়।  ব্যাপারটা বেশ কৌতুককর ।

সব সময় কিছু নিয়ে নাচানাচি লেগেই থাকে। কিছু গুরুত্বপূর্ন লুট, পাচার, ধবংসকে আড়াল করতে। রামপাল উপজেলাতে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে শুরু করতে যাচ্ছে। কাঁচামাল এনে নদী্র  পাড় আর সুন্দরবনের আকাশ ধুলোধূসোরিত করা হবে। সব পাখী, সব ডলফিন, সব হরিন, সব মাছেরা চলে যাবে ভারতের সুন্দরবনে। যারা যেতে পারবেনা তারা মরে যাবে। দিনরাত চব্বিশ ঘন্টা কয়লা পুড়িয়ে বিষাক্ত গ্যাসে ভড়িয়ে ফেলা হবে আকাশ, মেঘ থম থম করবে তারপর নামবে এসিড বৃষ্টি। সব গাছ পুড়ে ঝলসে যাবে, ধীরে ধীরে রামপাল উপজেলা হবে সাব সাহারা মরু। তারপর উন্মুক্ত বিসাক্ত বাতাস বয়ে চলবে ডানাবায়ে উপর নিচে সব গ্রাম, জেলা, উপজেলা ছাড়িয়ে যাবে, বাংলাদেশের পরিবেশ দূষিত হবে, মানুষ অসুস্থ হবে, সবাই বিদ্যুতের ঝলমলে আলোতে বিভিন্ন রকমের জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে কাতরাবে। এইসব ইস্যু ঢাকার জন্য এখন পথে পথে দাবী উঠেছে “রাস্ট্রধর্ম ইসলাম চাই”

বাংলাদেশে ভারতের রাজ্য সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের ২৭ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ ধীরে ধীরে চুরি করে সাফ করে ফেলছে। সেটাও ঢাকা দিতে হবে। তাই এখন “রাস্ট্রধর্ম ইসলাম চাই”

ক্যান্টনমেন্টে সেনা পাহাড়াতে ধর্ষিতা তনুর গলা কাঁটা লাশ ফেলা হয়েছে। অনেক দিন পর সবার মনেই প্রশ্ন জেগেছে — বাংলাদেশে কি ধর্ষন হয় নাকি কোন দিন? তাও আবার আর্মীর পাহাড়াতে? তাহলে কি ১৯৭১ সাল এসেছে স্বাধীনতা দিবস উতযাপন করতে? তাহলে কি পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ক্যান্টনমেন্ট দখল করে ফেলেছে? তাহলে কি বদরুদ্দীন উমরের দ্বিতীয় মুক্তিযোদ্ধাদের যাওয়া উচিৎ নয় কি দেশের ক্যান্টনমেন্ট থেকে হানাদার বাহিনীকে হটাবার জন্য ?

বাংলাদেশে ধর্ষন হয়, খুন হয়,  লুট হয়, চুরি হয়, সব হয় আর ৯০% মুসলমানেরা ঘুমায়। তবে এবার জেগেছে । লুট, ধর্ষন, খুন, চুরি, ডাকাতির ঢাকনা হয়ে জেগেছে তবে ধর্মের জন্য জাগেনি, মুসলিম উম্মার জন্য জাগেনি, কারু ইজ্বত বাঁচাবার জন্য জাগেনি, এতিমদের রক্ষা করার জন্য জাগেনি, ক্ষুধার্তকে অন্ন দেবার জন্য জাগেনি, জেগেছে রাজনৈতিক দলের লুট, খুন, ধর্ষন ঢাকার ফালতু ঢাকনা হয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *