জারিফ এখনও জানে না তার মায়ের মৃত্যুর খবর

১০ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে চলে গেলেন উত্তরায় অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূ সুমাইয়া বেগম। গতকাল চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। অগ্নিদগ্ধের ঘটনায় এ নিয়ে চারজনের মৃত্যু হলো। মর্মান্তিক এ ঘটনার সাক্ষী হয়ে বেঁচে আছেন সুমাইয়ার মেজো সন্তান জারিফ বিন নেওয়াজ। রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জারিফ এখনও জানে না তার মায়ের মৃত্যুর খবর। জারিফ এও জানে না এখন সে ছাড়া তার পরিবারের আর কেউ বেঁচে নেই।

রোববার বিকালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় সুমাইয়ার মৃত্যু হয়। তিনি রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সিটি হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ২৬শে ফেব্রুয়ারি উত্তরার বাসায় গ্যাসের আগুনে তার শরীরের ৯০ ভাগ পুড়ে গিয়েছিল। একই আগুনে পরিবারের অন্য চার সদস্য দগ্ধ হন। ওই দিনই মারা যায় তার বড় ছেলে সারলিন বিন নেওয়াজ (১৫) ও ১৪ মাসের ছোট ছেলে জায়ান বিন নেওয়াজ। পরদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মারা যান তার স্বামী শাহনেওয়াজ (শাহীন)।
সুমাইয়ার বড় জা ফরিদা জামান বলেন, মৃত্যুর আগে তিনি বার বার পোড়া শরীরের তীব্র যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চেয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘এত কষ্ট তো সহ্য করা যায় না। এত কষ্ট কেন? আমি কষ্ট থেকে মুক্তি চাই। কাউকে যেন আল্লাহ এত কষ্ট না দেন। আমি বাঁচতে চাই।’ অগ্নিকাণ্ডের পর ঢামেক হাসপাতালে বড় ছেলে সারলিনকে তিনি বলেছিলেন, ‘বাবা আমি মরে যাই। তোরা বেঁচে থাক।’

গত ১লা মার্চ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাকে সিটি হাসপাতালে নেয়া হয়। পরদিন থেকে তার ড্রেসিংয়ের পরও অবস্থার অবনতি হতে থাকে। গত শনিবার থেকে তার অবস্থা খুবই খারাপের দিকে যায়। অবনতি হতে থাকলে গতকাল দুপুরে তাকে লাইফ সাপোর্টে দেয়া হয়। তাতেও কাজ হয়নি। বিকাল সোয়া তিনটায় তার মৃত্যু হয়। এরপর বিকাল পাঁচটার দিকে লাশ নিয়ে বরিশাল সদরের কাছে নবগ্রাম রোডে তার পিতার বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা দেন স্বজনরা। সেখানে নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার পিতা-মাতার কবরের পাশে তাকে সমাহিত করার কথা রয়েছে।

আতিক/প্রবাস

৬ thoughts on “জারিফ এখনও জানে না তার মায়ের মৃত্যুর খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *