হত্যা বা অস্বাভাবিক মৃত্যু – বাংলাদেশে একটি স্বাভাবিক ব্যাপার

রাস্ট্রদ্রোহী কাপুরুষদের যেদিন নেতা ও দেশপ্রেমিক বলে বাংলাদেশের মানুষ বরন করে নেয় সেদিন থেকে বাংলাদেশের মায়েরা বীর প্রসব করা বন্ধ করে দিয়েছে তাই সুমাইয়া ও তার পরিবার যখন সমস্ত শরীরে আগুন নিয়ে সাত তলা থেকে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসে চিৎকার করে সাহায্য চায় তখন সবাই দরজা খুলে আবার দরজা বন্ধ করে দেয়। কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনা।

পিলখানার গেটে সব সৈন্যরা অপেক্ষা করে। ভেতরে হত্যা চলে। এঁকে এঁকে সব দেশপ্রেমিক যোয়ানদের হত্যা করা হয়। তাদের পরিবারকে ধর্ষন করা হয়। সাহায্যের জন্য কেউ এগিয়ে যায়না।

একজন প্রতিবন্ধি নারীকে রাস্তায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়, চারিপাশে ভীর করে সবাই দ্যাখে, সাহায্য করার জন্য কেউ এগিয়ে যায়না।
যেকোন মানুষকে যখন রাস্তায় পিটিয়ে হত্যা করা হয় , চারিপাশে ভীর করে মানুষে তা দ্যাখে, ভিডিও করে, ফেসবুকে পোস্ট করে কিন্তু সেই অসহায় মানুষকে সাহায্য করার জন্য কেউ এগিয়ে আসেনা।

ইসলাম বিরোধী ব্লগারদের বিরুদ্ধে হেফাজতে ইসলামের সদস্যরা বিক্ষোভ করে। সাড়া বাংলাদেশ থেকে ঢাকাতে আসে প্রতিবাদ মিছিল করে, সমাবেশ করে, মিছিল থেকে বের করে নিয়ে সদস্যদের পিটিয়ে হত্যা করা হলে সাংবাদিকেরা ছবি উঠায়, পোস্ট করে, পিটিয়ে লাশ বানিয়ে গার্বেজের টুকরার মত মানুষের লাশ পুলিশ ভ্যানে পুলিশেরা ছুঁড়ে মারে, সাংবাদিকেরা গর্বভরে তা পত্রিকাতে প্রকাশ করে। হেফাজতে ইসলামের সদস্যদের সমাবেশ ঘিরে ফ্যালে পুলিশ, আলো নিভিয়ে দেয়, গুলি চলে, হাজার হাজার হেফাজতে ইসলামের সদস্যরা ঢাকাতে এসেছিল সবাই দেখেছে কিন্তু কেউ তাদের ফিরে যেতে দ্যাখেনি, সময় লেগেছিল ৪৫ মিনিট, সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করে — আলো নিভে গেল তাহলে মানুষকে যে হত্যা করা হয়েছে তা আপনি দেখলেন কিভাবে ? ঢাকা শহরের সবাই ঘুমিয়ে ছিল – কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে যায়না। খুনিরা বললো — ওরা সবাই রং মেখে শুয়ে ছিল। পুলিশেরা সবাইকে যার যার বাসাতে পৌছে দিয়ে এসেছে। আবার সবাই ঘুমিয়ে গেল। মিউনিসিপালিটির ট্রাক এসে রক্ত ধুয়ে পরিচ্ছন্ন করে ফেললো। ১৫৫,০০০ রাউন্ড আর্মস এ্যামুনিশন খরচা করা হয়েছে কিন্তু খুনীরা চ্যালেঞ্জ করলো দেখো বাণিজ্যিক এলাকার বড় বড় বিল্ডিং এ একটা গুলির দাগ লাগেনি। কাছ থেকে বুকে গুলি করা হয়েছে নিশানা ঠিক ছিল বিল্ডিং বেঁচে গেছে সবাই যার যার বিছানায় পৌছে গেছে। ঘুম থেকে উঠে ঢাকার মানুষেরা যার যার পাছার কাপড় ঠিক করে আবার ঘুমিয়ে গেছে।

বাংলাদেশ একটি ঘনজনবসতিপূর্ন এলাকা। ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে নেমে চলতে শুরু করলে মনে হয় মিছিল যাচ্ছে আসলে মিছিল নয় রাস্তায় মানুষ হাটছে। এত মানুষের ভীর থেকে মানুষকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, পিটিয়ে হত্যা করা হয়, গুলি করে হত্যা করা হয়, ক্রসফায়ারের রুপকথা লেখা হয়, কেউ সাহায্য করার জন্য এগিয়ে যায়না। ব্যাঙ্ক থেকে টাকা উঠাতে গেলে পুলিশ এসে উঠিয়ে নিয়ে যায়, টাকা দাবী করে, পিটিয়ে আধমরা করে তারপর পুলিশের কাজে বাঁধা দেবার কারনে পিটানো হয়েছে বলে ফাইল বন্ধ করে দেয়। যেকোন সময় যেকোন পুলিশকে যেকোন নাগরিক টাকা দিতে বাধ্য থাকিবে না হলে মামলা খাবে বা আগুনে পুড়িয়ে বা পিটিয়ে হত্যা করা হবে অথবা টাকার জন্য পরিবারকে ব্ল্যাকমেইল করা হবে, টাকা না পেলে হত্যা করে ক্রসফায়ারের গল্প বলা  হবে সাথে হাজার পিস ইয়াবা সাজিয়ে রেখে ছবি উঠানো হবে। আর ইয়াবা রাজা বদি ও তার সংগীদের ফুলের মালা গলায় দিয়ে জেল থেকে খালাস করে দেওয়া হবে। কেউ টূ শব্দ করবেনা।

এটাই নিয়ম। খালে বিলে পথে ঘাটে ধর্ষিতা মেয়ের লাশ পাওয়া যায়। নদীতে এখন মাছ নাই, লাশ ভাসে, ছোট্ট একটি দেশে কোটি কোটি মানুষের বসবাস – কেউ কিছু জানেনা। কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনা তাই খুনীরা নিরাপদ।

বর্ষবরণ অনুষ্টানে হাজার মানুষের মাঝে মেয়েদের কাপড় খুলে ফেলা হয়। সবাই তাকিয়ে তাকিয়ে দ্যাখে। কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনা।
বাংলাদেশের সীমান্তে ভারতের বর্ডার গার্ডরা আসে, বাংলাদেশীদের উঠিয়ে নিয়ে যায়, নির্যাতন করে, হত্যা করে, কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে যায়না।
বাংলাদেশ সরকার ভারতের রাজ্য সরকার সুতারাং কেন্দ্রীয় সরকারের কাজে বাঁধা সৃষ্টি করেনা।

অস্বাভাবিক মৃত্যু বাংলাদেশে একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। তাই খুনীদের কেউ বাঁধা দেয়না। স্বাভাবিক কাজে স্বাভাবিক সমাজের স্বাভাবিক মানুষেরা বাঁধা দেবেনা সেটাই স্বাভাবিক। নয় কি?

৪ thoughts on “হত্যা বা অস্বাভাবিক মৃত্যু – বাংলাদেশে একটি স্বাভাবিক ব্যাপার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *