শিক্ষার্থীদের বর্ধিত ফি দিয়ে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের নতুন গাড়ি!

ঢাকা : রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায়কৃত বর্ধিত ফি দিয়ে নতুন মডেলের গাড়ি কিনেছেন ওই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মানিক হোসেন মানিক। গত কয়েকদিন ধরে এই বর্ধিত ফি নিয়ে ব্যাপক গোলযোগ চলছে কলেজটিতে। এরকম প্রেক্ষাপটে ছাত্রলীগের এই নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগটি করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মানিক।

সাধারণ ছাত্রদের অভিযোগ মঙ্গলবার বর্ধিত ফি বাতিলের দাবিতে তাদের আন্দোলনে পুলিশ সহানুভূতিশীল থাকলেও বুধবার তারা ছাত্রলীগ ও অধ্যক্ষের পক্ষে অবস্থান নেয়। এদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের গোপালগঞ্জ অংশ বলে পরিচিত নেতাকর্মীরা।

জানা গেছে, বুধবার সকালে শিক্ষার্থীরা অনার্সের ফরম পূরণে বর্ধিত ফি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা করে। এতে রহমত, রিয়াজুল, রাজ্জাকসহ অন্তত ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়। এদের মধ্যে দু’জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সকালে এ ঘটনার পর তিতুমীর কলেজের হোস্টেল থেকে ১০ জন ছাত্রকে আটক করে পুলিশ। এ নিয়ে ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানায়, সকাল ৯টা থেকে বর্ধিত ফি আদায় বন্ধে তিতুমীর কলেজের ভেতরে ফেস্টুন ও ব্যানার নিয়ে মানববন্ধন করছিলাম। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ঢল নামে। পরে তা কলেজের প্রধান গেট থেকে বিজ্ঞান ভবন পর্যন্ত মানববন্ধন বিস্তৃত হয়। সকাল ১০টার দিকে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ডলার, সাধারণ সম্পাদক মানিক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া গ্রুপ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মানববন্ধনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। কলেজ ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা সানি, অপু, দিদারও দা-চাপাতি নিয়ে হামলায় যোগ দেয়। ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষে অন্তত ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়।

শিক্ষার্থীরা আরো জানায়, গত শনিবার থেকে বর্ধিত ফি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছি। এতোদিন পুলিশ আমাদের পক্ষে থাকলেও আজ কলেজ অধ্যক্ষ আবু হায়দার আহমেদ নাসের ও ছাত্রলীগের ভূমিকা পালন করে পুলিশ। এদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে গোপালগঞ্জ গ্রুপ ছাত্রলীগ। শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে বর্ধিত ফি বাতিলসহ কলেজ অধ্যক্ষ নাসেরের পদত্যাগ ও হামলায় অংশ নেয়া ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা ও বিভিন্ন বিভাগের সেমিনার ফি নির্ধারিত হারের চেয়ে অনেক বেশি আদায় করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। অন্য সরকারি কলেজের তুলনায় এই ফি ১ হাজার ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বেশি। ইতোমধ্যে কলেজ কর্তৃপক্ষ বর্ধিত ফি আদায়ের মাধ্যমে ৮৬ লাখ টাকা হাতিয়েও নিয়েছে। এই টাকার একটি অংশ দিয়ে কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মানিক নতুন মডেলের একটি প্রিমিও গাড়ি কিনেছেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মানিক জানান, প্রতিক্ষরা তার সুনাম নষ্ট এবং কলেজে অরাজকতা সৃষ্টি করতে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আমি কেবল একজন ছাত্রনেতা। আমার একটি মোটরবাইক আছে। আমার মতো একজন ছাত্রনেতার পক্ষে প্রাইভেট গাড়ি ক্রয় করা কখনোই সম্ভব নয়।’

সুত্র- বাংলামেইল

One thought on “শিক্ষার্থীদের বর্ধিত ফি দিয়ে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের নতুন গাড়ি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *