ঢাকা: প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টই কেবল নয়, বিশ্বজুড়ে আরও অনেক সংবাদপত্র তাদের প্রিণ্ট ভার্সন প্রকাশ হয় বন্ধ করেছে নয়তো কমিয়ে দিচ্ছে। অব্যহত গতিতে কাটতি পড়ে যাওয়া, বিজ্ঞাপনের হার কমে যাওয়া আর সাধারণের মাঝে ছাপা সংবাদপত্র পড়ার আগ্রহ কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এমনটা ঘটছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী ক্রিস্টিয়ান সায়েন্স মনিটর সংবাদপত্রটি তার শতবর্ষের ঐতিহ্যও আজ আর বয়ে নিতে পারছে না। ২০০৮ সাল থেকেই শুরু হয় এই পত্রিকার প্রিন্ট ভার্সন ছাপানো কমিয়ে আনার প্রক্রিয়া। পরে অনেক ম্যাগাজিন একটি পথ ধরে যারই ধারাবাহিকতায় ২০১২ সালের শেষভাগে বন্ধ হয় সাপ্তাহিক নিউজউইক। ৮০ বছরের দীর্ঘ সাফল্যের ইতিহাস টেনে এনেও ছাপা সংখ্যার যাত্রায় ইতি টানে এই ঐতিহ্যবাহী ম্যাগাজিনটি।
স্যাটায়ারধর্মী সংবাদপত্র দ্য ওরিয়নের ছাপাকপির ভক্ত এক সময় কে না ছিলো! অথচ ২০১৩ সালের শেষভাগে ব্যাপক জনপ্রিয় এই পত্রিকা শতভাগ ডিজিটালে রূপ নেয়।
ঠিক একই পথে হেঁটে রাজনৈতিক ম্যাগাজিন ন্যাশনাল জার্নাল ২০১৫ সালে আর এবছরের শুরুতেই যৌনউত্তেজক ম্যাগাজিন পেনথাউজ তাদের ছাপা সংখ্যা বন্ধ করে পুরোই ডিজিটাল হয়ে ওঠে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমেরিকান ম্যাগাজিন জগতের আরও যেগুলো তাদের ছাপাখানার পাট চুকিয়ে দেয় তার মধ্যে রয়েছে এক্সএক্সএল, অ্যামেরিকান ফটো ম্যাগাজিন, ভাইব, স্মার্টমানি ম্যাগাজিন ও অটো ট্রেডার।
এর ঝাপটা কানাডায়ও লেগেছে। সেখানে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে প্রিন্ট ভার্সন বন্ধ করে দেয় লা প্রেসি আর এবছরের গোড়াতেই গুলেফ মারকারি তার দীর্ঘ দেড়শ’ বছরের ইতিহাসের ইতি টানে। যার জন্মই হয়েছিলো ১৮৬৭ সালে।
ফ্রান্সে গত পাঁচ বছরে তিনটি ছাপা সংবাদপত্রের ইতি ঘটেছে। ২০১৫’র মে মাসে টিএফওয়ান তার দৈনিক মেট্রোনিউজ ছাপানো বন্ধ করে দেয় আর ৬০ শতাংশ কর্মী ছাঁটাই করে। আর টিএফওয়ানের বক্তব্য ছিলো, বিজ্ঞাপনের বাজার পড়ে যাওয়ায় আর কোনও গত্যান্তরই তাদের ছিলো না।
এর আগে ২০১১ সালে ফ্রান্সের সংবাদপত্র ফ্রান্স সোইর বড় কঠিন সময় পার করছিলো। আর কোনওরকম বেঁচে থাকে ৭০ বছরের পুরোনো পত্রিকাটি অবশেষে ইন্টারনেট ভার্সনে ভর করে। আর ২০১২ সালের জানুয়ারিতে বাণিজ্য বিষয়ক দৈনিক লা ট্রিবিউনও একই সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে ট্রিবিউনের ছিলো ২৬ বছরের গৌরবময় ইতিহাস।
তবে ডিজিটালে রূপ নিয়ে এই পত্রিকাগুলো তাদের নামের ঐতিহ্যটি টিকিয়ে রাখতে পারছে।
যারা এখনো তাদের ঐতিহ্যের ভাবনায় ছাপা পত্রিকা রেখে দিচ্ছে তাদের গুনতে হচ্ছে বড় ক্ষতি। কারণ গত ২০১২ থেকে হরবছর ৮ থেকে ১০ শতাংশ হারে রেভিনিউ কমছে এসব সংবাদপত্রে।
MD Uzzol Baruniya liked this on Facebook.