পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যবান ত্বক সবারই কাম্য। পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যবান ত্বক রাখার জন্য সুষম খাদ্য গ্রহণের সাথে সাথে নিয়মিত ব্যয়াম করতে হবে। ভিটামিন এ এবং সি’ রয়েছে এমন সব তাজা ফল, আর শাক সবজী খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে । গমের ভুষিসহ রুটি, হোল্গ্রেইনস আর সিরিয়াল বি ভাইটামিন ও জিঙ্ক এর জন্য চর্বিহীন মাংশ, মুরগী, আর মাছ (জিঙ্ক এর জন্য)।
সব মানুষই কোন না কোন বয়সে ব্রণের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। যেকোন বয়সেই ব্রণ হতে পারে তবে ৮৫% মানুষ কিশোর বয়সে ব্রণের অভিজ্ঞতা অর্জন করে থাকেন। ব্রণ সম্পর্কে বিভিন্ন চর্ম রোগ বিষেজ্ঞরা বলে থাকেন যে যৌন কার্যকলাপ, অপরিচ্ছন্নতা, বা খাদ্যাভ্যাস ব্রণের জন্ম দেয়না। ভাজা, পোড়া, মিস্টি, চকোলেট, ইত্যাদি খাবার খাওয়ার কারনে ব্রণ হয়না। এইসব খাবার খেলে ব্রণের স্থায়িত্ব দীর্ঘায়িত হতে পারে। অনেকেই ডায়েট করার জন্য বাজার থেকে সাপ্লিমেন্ট বা বিকল্প খাদ্য ক্রয় করেন বা আয়োডিন যুক্ত লবন খান আর সে থেকেই ব্রণ বৃদ্ধি পায় এবং দীর্ঘ সময় ধরে চামড়াতে থেকে যায়। বেশীরভাগ ব্রণের জন্য দায়ী হলো হরমোণ।
The surge of androgens (male sex hormones) that occurs during puberty prompts the skins oil (sebaceous)glands to enlarge and increases the production of sebum, the oily substance that lubricates the skin. কিশোরেরা যখন বয়স্প্রাপ্ত হতে থাকে তখন ত্বকের লোমকূপ প্রসারিত হয়ে তৈলাক্ত সাবস্টান্সেস বের হয়ে ত্বককে তেল তেলে করে ফ্যালে। মেয়েদের চেয়ে ছেলেরাই বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে ব্রণের অভিজ্ঞতা অর্জন করে। বিভিন্ন বয়সে হরমোন বদলের সাথে সাথে যেমন মাসিক হবার সময়ে, সন্তান সম্ভবা হলে বা মাসিক শেষ হবার সময়ে মেয়েদের মুখে ব্রণ হতে পারে।
বয়স্প্রাপ্তির সাথে সাথে শরীরের বিভিন্ন অংশে চুল গজায়, লোমকূপগুলার এক পাশ বন্ধ হয়ে গেলে তৈলাক্ত সাবস্টান্সেস বেরুতে পারেনা ফলে সেখানে সাদাটে মাথা বা হোয়াইট হেড বের হয়। লোমকূপের একপাশ খোলা থাকলে কালো মাথা বা ব্লাকহেড বের হয় যা অনেকের নাকের উপরে দেখা যায়। এইগুলো থেকে যদি দগ্ধ প্রবাহ বা ইনফ্লেমেশন হয় তাহলেই ব্রণ হয় । বন্ধ হয়ে থাকা লোমকূপে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা ইনফেকশন বা ঘা সৃষ্টি করে তা ত্বকে দীর্ঘ সময়ে থাকে এবং ব্রণে ব্রণে ভরে যায়।
পরিবারের মাবাবার ব্রণ থেকেও শিশুর বয়স্প্রাপ্তির পরে ব্রণ হতে পারে। বিভিন্ন ধরনের অষুধ থেকে ব্রণ হতে পারে। যেমন আয়োডিনযুক্ত অষুধ বা লবন, হোরমোন এজেন্ট স্টেরোয়েড, লিথিয়াম, এন্টিকনভালসান্টস, আর যেসব ওষুধ যক্ষা রোগ নিয়ন্ত্রনে ব্যবহার করা হয় তা সেবনের ফলেও ব্রণ হতে পারে। তৈলাক্ত মেকআপ মুখে লাগানোর ফলে ত্বকের লোমকূপ বন্ধ হয়ে গেলে ব্রণে দগদ্গে হয়ে উঠতে পারে। কারখানার তেল ও কেমিক্যাল যেমন, ন্যাপথলিন্স (naphthalene), বিফেনিলস (biphenyls) ইত্যাদির সংস্পর্শে এলে ব্রণ হতে পারে।
অতিরিক্ত দুঃশ্চিন্তায় হরোমোন লেভেল বদলে গেলে খাওয়ার রুচি বদলে যায় ফলে ভাজা, পোড়া, মিষ্টি জাতীয় খাদ্যের প্রতি মানুষ ঝুকে পরে এবং ব্রণ হয় । সবাই ভাজা, পোড়া, মিস্টি বা চকোলেটকে ব্রনের জন্য দোষারোপ করে আর হরমোনের পরিবর্তন যা নাকি ব্রনের আসল কারণ তা নিরাপদ দুরত্বে থেকে ব্রনের জন্ম দিতে থাকে। পরিছন্ন ত্বকের জন্য শুধু সুষম খাদ্য গ্রহণ করলেই হবেনা তার সাথে নিয়মিতভাবে ব্যয়াম করতে হবে। ঘরে বসেই অনেক ব্যায়াম করা যায় কোন রকমের হেভী ইকুইপমেন্ট ছাড়াই। সুষম খাদ্য, ব্যায়াম, প্রয়োজনমত ঘুম, এবং সিগারেট ও যেকোন ধরনের মাদকদ্রব্য সেবন সম্পুর্ণভাবে পরিহার করে এবং রোদ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রেখে পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যবান ও সুন্দর ত্বকের অধিকারী হওয়া সম্ভব। পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যবান ত্বক বজায় রাখার জন্য এই দুইটি অতি প্রয়োজনীয় ভাইটামিন হলো এ এবং সি । প্রতিদিন পাঁচ রকমের শাক সবজী ও ফল খেতে হবে তার মধ্য একটি লেবু জাতীয় ফল অবশ্যই থাকতে হবে। কলা, পেপে, আম, লিচু, লেবু, গাজর, বাধাকপি, ফুল কপি,শসা, আলু, পেয়াজ, বাতাবী লেবু, আনারস, ট্মেটো, তরমুজ, মিষ্টি কুমড়া মোটামুটি সবই পাওয়া যায় বাংলাদেশে। সবগুলাতেই ভাইটামিন এ ও সি আছে। ভুষিসহ গমের রুটি, মটরসুটী, ডাল (সব ধরনের), কেচকী মাছ , মুরগীর মাংস, ইত্যাদি খাদ্য গ্রহন করা উচিৎ।
ব্রণের চিকিৎসা – প্রতিদিন দুইবার ঠান্ডা পানি দিয়ে, কোন রকমের কেমিক্যাল ছাড়া যেসব সাবান পাওয়া যায় তা দিয়ে বা এলকোহল ছাড়া যেসব মুখ ধোয়ার লোশন পাওয়া যায় তা দিয়ে মুখ ধৌত করতে হবে। জোরে জোরে ঘষা যাবেনা। ঠান্ডা পানি বা তুলো দিয়ে খুব মোলায়েম করে পরিস্কার করতে হবে। 2.5% or 5% strength benzoyl peroxide gel, lotion, or ointment ব্যবহার করতে হবে। রাতে ঘুমানোর আগে বেঞ্জোয়েল পেরোক্সাইড জেল লাগিয়ে ঘুমাতে হবে। এক সপ্তাহ পরে সকালে ও রাতে দুইবার ব্যবহার করতে হবে। তিন সপ্তাহ ব্যবহার করার পরেও যদি না কমে তখন ১০% শক্তির বেঞ্জয়েল পারোক্সাইড জেল ব্যবহার করতে হবে। এই জেল যেকোন ড্রাগ স্টোরে প্রেসক্রিপশন ছাড়াই পাওয়া যায়।
[লেখাটি লিখেছেন আয়শা মেহের। বর্তমানে যিনি “সুস্বাস্থ্যের জন্য খাদ্য” বিষয়ক পরামর্শ দেবার জন্য অধ্যায়ন করছেন। ]
Sourov Biswas liked this on Facebook.
Nurul Amin Khan liked this on Facebook.
Rezina Akhter liked this on Facebook.