ভালোবাসার টানে সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকে সপরিবারে বাংলাদেশের বরিশালে এসে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে প্রেমিককে বিয়ে করার অন্যন্য নজির স্থাপন করলেন অস্ট্রেলিয়ার তরুণী এমিলি পার।
মনের মানুষকে আপন করে নিতে শুধু দেশ ছেড়ে আসেননি সে, একই সাথে ধর্মও পরিবর্তন করে সে এখন একজন মুসলিম বধূ। অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বরিশালের সাইদুল আলম রুমান-এর বিবাহিতা স্ত্রী এমিলি পার এখন এমিলি আলম।
ঘটনা এখানেই শেষ নয়, বরিশাল মহানগরীর আলেকান্দা এলাকার মরহুম শামছুল আলম বাবুলের ছেলে সাইদুল আলম রুমানকে বিয়ে করতে ১৮ সদস্যের পরিবারকে নিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন এ প্রেমিকা। এমিলির পিতা-মাতা, ভাই-বোনসহ খালাÑখালু, ফুফু-ফুফাসহ ১৮ জন বরিশালে পৌঁছে শুক্রবার মুসলিম রীতি অনুযায়ী বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছেন। শুক্রবার জুম’আ নামাজের আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে এমিলি। নগরীর আলেকান্দা বায়তুল মেহেদী জামে মসজিদের ইমাম আলহাজ হজরত মাওলানা আব্দুল হালিম এমিলিকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করেন। এ সময় এমিলির মা, বাবা, ভাই ও বোনসহ অস্ট্রেলীয়া থেকে আসা স্বজনরাও উপস্থিত ছিলেন। রুমানের আলেকান্দার বাস ভবনেই ধর্মীয় এ পালাবদলের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। এমিলি রেবেকা পার থেকে হয়েছেন এমিলি আলম।
সন্ধ্যায় ইসলামি রীতি অনুযায়ী বিয়ের আনুষ্ঠানিকতাসহ রেজেস্ট্রিও সম্পন্ন হয়েছে। সন্ধ্যায় নগরীর হোটেল এরিনা থেকে বাংলাদেশের জনপ্রিয় যান রিকশায় চড়ে বরিশাল ক্লাব মিলনায়তনে বিবাহোত্তর অনুষ্ঠানে যান বধূ সাজে এমিলি। আর রিকশার চালক ছিলেন স্বয়ং তার সদ্য স্বামী রুম্মান। নগরীর সদর রোডের গাজী ফুল ঘর গত কয়েকদিন ধরে পরিকল্পনা করে শুক্রবার দিনভর রিকশাটিকে ফুল দিয়ে সাজিয়েছেন। আর মাঘের হিম শীতল রাতে যখন অস্ট্রেলীয় প্রবাসী বর ও বধূ ঐ রিকশায় করে বরিশাল ক্লাবের দিকে যাচ্ছিলেন, তখন পথের দু’ধারে উৎসুক মানুষের কৌতূহলের কোন শেষ ছিল না। স্যুট পড়া রিকশা চালক যাকে নিয়ে রিকশাটি চালিয়ে যাচ্ছিলেন, সে স্বয়ং তার সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী এমিলি। খোলা রিকশায় যাত্রী নববধূ পোশাকে, আর চালক স্বয়ং বর। এদৃশ্য বরিশালে আগে কখনো কারো চোখে পড়েনি।
বরিশাল মহানগরীর সাবেক কাউন্সিলর ও ব্যবসায়ী শফিকুল আলম গুলজার এবং নিহত যুবদল নেতা মাহবুব আলম মেহেদীর ভাইয়ের ছেলে রুম্মান ব্যবসায়িক কারণে দীর্ঘদিন ধরে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। এরই মধ্যে কয়েক বছর আগেই এমিলির সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে রুম্মানের। কিন্তু দুই দেশের দুরত্বের সাথে ধর্মীয় ব্যবধান তাদের প্রেমের সম্পর্কের চূড়ান্ত পরিণতির প্রধান বাধা হয়ে ওঠে। রুম্মান চাচ্ছিল তারে বিয়ে যেন পরিবার-পরিজনসহ সকলে মেনে নেয়। পাশাপাশি তাদের মধ্যে ধর্মীয় কোন ব্যবধান যেন ভব্যিষ্যত বংশধরদের পরিচয়েও অন্তরায় না হয়। পুরো বিষয়টি নিয়ে সহমত পোষণ করে রুম্মান ও তার প্রেমিকা এমিলির পরিবারও।
অবশেষে উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সিদ্বান্ত নেয় তারা। এমাসের গোড়ার দিকেই বাংলাদেশে পৌঁছে বরিশালে এসে শুক্রবার জাঁকজমকপূর্ণভাবেই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হল অস্ট্রেলিয়ার কনে আর বাংলাদেশের বরিশালে বরের। এ বিয়ে উপলক্ষে এমিলির বাবা ব্রুস পার ও মা ভিকি পারসহ ১৮ সদস্যের অস্ট্রেলীয় নাগরিক নগরীর ‘হোটেল এরিনা’তে অবস্থান করছেন। শুক্রবার রাতে বরিশাল ক্লাব মিলনায়তনে বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নগরীর বিশিষ্টজনরা উপস্থিত হয়ে নবদম্পত্তির জন্য দোয়া ও শুভ কামনা করেছেন। ধন্যবাদ দিয়েছেন এমিলির আলমের অস্ট্রেলীয় পরিবারকে। বিশেষ করে এমিলির বাবা-মায়ের মহানুভবতা ও ভদ্রতায় বিস্মিত ও মুগ্ধ সকলেই।
Moin Ahmed liked this on Facebook.
Anam Sahid liked this on Facebook.
MadZy Anik MoLlick liked this on Facebook.
Emon Alam liked this on Facebook.
Arif Ahmed liked this on Facebook.
Mohamin Sheik liked this on Facebook.