ঢাকা : তিন চাকা বিশিষ্ট অটোরিকশার (ইজিবাইক) ব্যাটারি রিচার্জের জন্য সোলার চার্জিং স্টেশন স্থাপনের সরকারি পরিকল্পনা অবশেষে আলোর মুখ দেখছে। দেশের প্রথম ইজিবাইক সোলার চার্জিং স্টেশন উদ্বোধন হচ্ছে শুক্রবার। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার দু’বছর পর পরিকল্পনাটি প্রাথমিকভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
রাজধানী ঢাকার কেরানীগঞ্জের রুহিতপুরের পল্লীবিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) প্রথম চার্জিং স্টেশনটি নির্মাণ করেছে। এতে প্রাথমিকভাবে এক সঙ্গে ২০ থেকে ২২ ইজিবাইকের ব্যাটারি রিচার্জ দেয়া যাবে।
সূত্র জানায়, ইজিবাইকের ব্যাটারি চার্জের কারণে জাতীয় গ্রিড থেকে প্রতিদিন অন্তত ৪০০ থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হয়, এতে অর্থ অপচয়ের পাশাপাশি সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। গ্রিডে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে এগুলো রিচার্জ করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পাইলট প্রকল্প হিসেবে দেশের ছয় বিভাগীয় শহরে বিতরণ কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে ছয়টি সোলার চার্জিং স্টেশন স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়।
২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুৎ বিভাগকে দ্রুত এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন। এর প্রায় দুই বছর পর প্রথম চার্জিং স্টেশন উদ্বোধন হতে যাচ্ছে শুক্রবার। যদিও গত ১০ দিন পরীক্ষামূলকভাবে এখানে থেকে ইজিবাইক ব্যাটারি রিচার্জ দেয়া হচ্ছে।
ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। এতে ব্যয় হয়েছে ৫০ লাখ টাকা। কেরানীগঞ্জের রুহিতপুরের সানি ফ্লিলিং স্টেশনের ছাদের ওপর সৌর প্যানেল বসানো হয়েছে। তাই কোনো জমির প্রয়োজন হয়নি।
জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে প্রতিবার রিচার্জের জন্য ইজি বাইকপ্রতি ৫০ টাকা নেয়া হচ্ছে ।
এ বিষয়ে ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর মহাব্যস্থাপক মো. রবিউল হোসেন বলেন, এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। দিনে সৌর বিদ্যুৎ আমাদের ব্যাটারিতে ধরে রাখি। রাতে ইজিবাইক চার্জ দেয়া হয়।
পাওয়ার সেলের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রতিটি ইজিবাইকের জন্য চার থেকে পাঁচটি ১২ ভোল্টের ব্যাটারি প্রয়োজন হয়। প্রতি সেট ব্যাটারি চার্জের জন্য গড়ে ৮০০ থেকে ১১০০ ওয়াট হিসেবে পাঁচ থেকে ছয় ইউনিট (দিনে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা) বিদ্যুৎ খরচ হয়। এ হিসেবে দেশের পাঁচ লাখ ইজিবাইকের জন্য দৈনিক বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় ৫০০ মেগাওয়াট।
এ বিদ্যুৎ ব্যবহারে সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হয়। কারণ ইজি বাইক চার্জে আবাসিক বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়। আবাসিক বিল আসে বাইক প্রতি দিনে গড়ে ৩০ টাকা (প্রতি ইউনিটের দাম ৫ থেকে ৬ টাকা)। বাণিজ্যিক হিসেবে ব্যবহৃত হলে প্রতি সেট ব্যাটারি চার্জের জন্য দৈনিক খরচ হতো ৪৯ টাকা (পাঁচ ইউনিট বিদ্যুৎ, প্রতি ইউনিট নয় টাকা ৮০ পয়সা)। অর্থাৎ একটি ইজিবাইক চার্জে সরকার দিনে ১৯ টাকার মতো রাজস্ব হারাচ্ছে। অনেক গ্যারেজ মালিক বিদ্যুৎ চুরিও করে।
এ অপচয় রোধেই সোলার চার্জিং স্টেশন স্থাপনের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, সারাদেশে নিজস্ব অর্থায়নে মোট ছয়টি চার্জিং স্টেশন স্থাপনের নির্দেশ দেয়া হয় বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোকে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) তিনটি এবং ডেসকো, ডিপিডিসি ও পল্লীবিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) একটি করে স্টেশন স্থাপনের কথা।
Khorshed Alam liked this on Facebook.
Moin Ahmed liked this on Facebook.
Sumon Khan liked this on Facebook.
Shahin Vai liked this on Facebook.
Rezina Akhter liked this on Facebook.
Nazrul Islam Rubel liked this on Facebook.
Jahangir Kabir liked this on Facebook.