স্ত্রী রওশন এরশাদকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করাকে ‘সম্পূর্ণ অবৈধ’ বলেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর ঢাকায় দেওয়া ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় সোমবার রাতে রংপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
জাতীয় পার্টিকে ভাঙার চেষ্টা চলছে দাবি করে এজন্য দলের আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ নেতাদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ।
এরশাদ রোববার নিজের জেলায় সংবাদ সম্মেলন করে ভাই জি এম কাদেরকে দলের কো-চেয়ারম্যান ও উত্তরসূরি ঘোষণা করলে তার পাল্টায় সোমবার রাতে ঢাকায় রওশনের বাড়িতে এক বৈঠকে তাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
এর ঘণ্টাখানেকের মধ্যে রংপুরে অবস্থানরত এরশাদ তার প্রতিক্রিয়া জানাতে একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে ডেকে বলেন,“আমিই পার্টির চেয়ারম্যান। সভাপতিমণ্ডলীর সভা আহ্বান করার এখতিয়ার শুধু আমার। আমি ছাড়া সভাপতিমণ্ডলীর কোনো সভা কেউ ডাকতে পারেন না।
“ডাকলেও তা হবে গঠনতন্ত্র পরিপন্থি। রওশন এরশাদকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করাটাও অবৈধ। যারা করেছে তাদের উদ্দেশ্য অসৎ।”
সোমবার রওশনের বাড়িতে বৈঠকের পর মহাসচিব বাবলু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, দলের গঠনতন্ত্রে কো-চেয়ারম্যানের কোনো পদ নেই।
এরশাদের ‘গঠনতন্ত্রবহির্ভূত’ ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় দলের সভাপতিমণ্ডলী ও পার্লামেন্টারি পার্টির যৌথ বৈঠকে রওশনকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় এরশাদ বলেন, “আমার অবর্তমানে দলের হাল ধরবেন আমার ছোট ভাই জি এম কাদের। সে কারণেই তাকে আমি গঠনতন্ত্রের ৩৯ ধারায় কো-চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছি। চেয়ারম্যান হিসেবে সে ক্ষমতা আমার আছে।”
এরশাদের স্ত্রী সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীতে রয়েছেন। এরশাদের ভাই জি এম কাদেরও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য।
দুই বছর আগে দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে এরশাদ ও রওশনের মধ্যে টানাপড়েন দেখা দেয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে দুজনের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের মধ্যেই এরশাদ বলেছিলেন, রওশনই তার কাণ্ডারি।
তবে সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ বলেন, রওশনকে যারা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
“এর আগে আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করেছিলাম। রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরিয়ে জিয়াউদ্দিন বাবলুকে মহাসচিব করেছি। তখন তো কেউ কোনো প্রশ্ন তোলেননি।। এখন প্রশ্ন তুলছেন কেন?”
বিএনপিবিহীন দশম সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির নাটকীয় অংশগ্রহণের পর এরশাদের দল বিরোধী দলের আসনে বসার পাশাপাশি সরকারেও অংশ নেয়। আনিসুল ইসলাম মাহমুদ মন্ত্রী এবং মশিউর রহমান রাঙ্গা প্রতিমন্ত্রী হন।
সেনাপ্রধান থেকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পর জাতীয় পার্টি গঠনকারী এরশাদ বলেন, “সঙ্কটময় মুহূর্তে আমি যখন দলকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। নতুন করে দলকে নিয়ে ভাবছি: ঠিক এমন সময় দলের ভেতরে একটি চক্র দলকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন।”
তারা কারা- সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কারা জাতীয় পার্টি করেন, আর কারা করেন না, রওশন এরশাদকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করার মধ্যদিয়ে তাদের স্বরূপ বেরিয়ে এসেছে।”
ভাইয়ের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে থাকা জি এম কাদের বলেন, “একটি অংশ বেশ কিছুদিন ধরে দলকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্র করছে। রওশনকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করার মধ্যদিয়ে তাদের মুখোশ উম্মোচিত হল। তবে তারা কোনোভাবেই সফল হবে না।
“এরশাদ যতদিন জীবিত থাকবেন, ততদিন তিনিই চেয়ারম্যান থাককেবন। তার নির্দেশনা অনুযায়ী দল চলবে। আমিও চেয়ারম্যানের নির্দেশ মতো দলকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করব।”
Ibrahim Sowdagar liked this on Facebook.
Saleh Ahmed liked this on Facebook.
Younus Khan liked this on Facebook.
Moin Ahmed liked this on Facebook.
Abdul Halem Bablu liked this on Facebook.
Abdul Jalil liked this on Facebook.
Ahmed Mosud liked this on Facebook.
Shah Nawaz liked this on Facebook.
MD Uzzol Baruniya liked this on Facebook.
Sumon Aminul liked this on Facebook.
Asif Siddique liked this on Facebook.
Imam Uddin liked this on Facebook.