ওয়ালটন টি-টোয়েন্টি সিরিজে সফরকারী জিম্বাবুয়েকে প্রথম ম্যাচে ৪ উইকেটে হারিয়ে চার ম্যাচ সিরিজে ১-০ তে লিড নিল টাইগাররা। ৮ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে স্বাগতিকরা।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চার ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে দুপুর তিনটায় মুখোমুখি হয় স্বাগতিক বাংলাদেশ। টাইগারদের বিপক্ষে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে জিম্বাবুয়ে ১৬৩ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ১৮.৪ ওভারে ১৬৬ রান তোলে বাংলাদেশ।
খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে টস জিতে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক এলটন চিগুম্বুরা আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন। টাইগারদের হয়ে বোলিং উদ্বোধন করেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। জিম্বাবুয়ের হয়ে ব্যাটিংয়ে ওপেন করতে আসেন ভুসি সিবান্দা এবং হ্যামিলটন মাসাকাদজা। প্রথম ওভার থেকে মাত্র দুই রান তোলে সফরকারী ওপেনাররা।
প্রথম দশ ওভারে সফরকারীদের ওপেনিং জুটি ভাঙতে পারেননি মাশরাফি, আল আমিন, সাকিব আল হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান আর মাহমুদুল্লাহ। ১২তম ওভারে সাকিবের শিকারে সাজঘরে ফেরেন ৪৬ রান করা ভুসি সিবান্দা। তামিম ইকবালের হাতে ধরা পড়ে বিদায় নেওয়ার আগে সিবান্দা ৩৯ বলে চারটি চার আর দুটি ছক্কায় তার ইনিংসটি সাজান। আউট হওয়ার আগে ওপেনিং জুটিতে মাসাকাদজাকে নিয়ে ১০১ রান তোলেন সিবান্দা।
জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে দলীয় ১২৭ রানের মাথায়। ৮ বলে ১৪ রান করে রানআউটের ফাঁদে পড়েন ম্যালকম ওয়ালার। ১৮তম ওভারে দলীয় ১৫০ রানের মাথায় হ্যামিলটন মাসাকাদজা ক্যারিয়ার সেরা ৭৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন। রান আউট হওয়ার আগে ৫৩ বলে ৯টি চার আর দুটি ছক্কা হাঁকান তিনি।
আগের ওভারে মাসাকাদজা ফিরে গেলে পরের ওভারে (১৯তম ওভারে) মুস্তাফিজুর রহমান প্রথম বলেই ফিরিয়ে দেন এলটন চিগুম্বুরাকে (৩ রান)। জিম্বাবুয়ের দলপতিকে বোল্ড করার পরের বলে লুক জঙ্গোকেও (০ রান) বোল্ড করেন তিনি। ফলে, ১৫৩ রানের মাথায় সফরকারীরা ৫ উইকেট হারায়।
শেষ ওভারে আল আমিন আক্রমণে এসে প্রথম বলেই সিকান্দার রাজাকে (৬ রান) ফিরিয়ে দেন। মাহামুদুল্লাহর তালুবন্দি হন তিনি। শেষ বলেও উইকেট তুলে নেন আল আমিন। বোল্ড করে ফেরান শেন উইলিয়ামসকে (২)। ফলে, নির্ধারিত ওভার শেষে ১৬৩ রানেই থেমে যেতে হয় সফরকারীদের।
টাইগারদের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজ এবং আল আমিন। এছাড়া একটি উইকেট নেন সাকিব আল হাসান।
ছুঁড়ে দেওয়া ১৬৪ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নামেন তামিম ইকবাল এবং সৌম্য সরকার। প্রথম তিন ওভার থেকে তারা ২৬ রান তুলে নেন। তবে, ইনিংসের চতুর্থ ওভারে দুভার্গ্যজনক রান আউটের ফাঁদে পড়েন সৌম্য সরকার (৭ রান)।
ইনিংসের সপ্তম ওভারে গ্রায়েম ক্রেমারের বল ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে বাতাসে ভাসিয়ে দেন তামিম। সিবান্দার হাতে লংঅফে ধরা পড়েন তিনি। বিদায়ের আগে ২৪ বলে তিনটি চার আর একটি ছক্কায় ২৯ রান করেন তামিম। অভিষেক ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নেমে ব্যক্তিগত ৬ রান করে উইলিয়ামসের বলে দলীয় দশম ওভারে বোল্ড হন অভিষিক্ত হওয়া শুভাগত হোম।
জিম্বাবুয়ে ৭১ বলে তাদের দলীয় শতক স্পর্শ করে। জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ ৭৬ বলে দলীয় শতকে পৌঁছায়।
মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ৪৪ রানের জুটি গড়ে বিদায় নেন সাব্বির রহমান। দলীয় ১৫তম ওভারে গ্রায়েম ক্রেমারের বলে তুলে মারতে গিয়ে ম্যালকম ওয়ালারের তালুবন্দি হন সাব্বির। তবে, বিদায়ের আগে ৩৬ বলে ৪টি চার আর একটি ছক্কা হাঁকান ৪৬ রান করা সাব্বির। পরের ওভারেই ফেরেন মুশফিক। ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বলে সিকান্দার রাজার তালুবন্দি হওয়ার আগে মুশফিকের ব্যাট থেকে আসে ২৬ রান। ১৯ বলে তিনটি বাউন্ডারি হাঁকান মুশফিক।
১৭তম ওভারে লুক জঙ্গো বোল্ড করেন ৭ রান করা মাহামুদুল্লাহ রিয়াদকে। সাকিব *** রানে এবং নুরুল হাসান *** রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।
এ ম্যাচের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হলো শুভাগত হোম এবং নুরুল হাসানের। প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দলে সুযোগ হয়নি ইমরুল কায়েস, আরাফাত সানি এবং আবু হায়দার রনির।
আসন্ন বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজের টাইটেল স্বত্ব পেয়েছে ওয়ালটন। সিরিজটির নাম দেওয়া হয়েছে, ‘ওয়ালটন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট সিরিজ বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবুয়ে ২০১৬ পাওয়ার্ড বাই মার্সেল’। ১৭, ২০ ও ২২ জানুয়ারি দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ একই মাঠে গড়াবে।
বাংলাদেশ একাদশ: মাশরাফি বিন মর্তুজা, মুশফিকুর রহিম, মুস্তাফিজুর রহমান, নুরুল হাসান, সাব্বির রহমান, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ, শুভাগত হোম, সৌম্য সরকার, তামিম ইকবাল ও আল-আমিন হোসেন।
জিম্বাবুয়ে একাদশ: ভুসি সিবান্দা, হ্যামিলটন মাসাকাদজা, শেন উইলিয়ামস, পিটার মুর, সিকান্দার রাজা, ম্যালকম ওয়ালার, এলটন চিগুম্বুরা, ব্রায়ান ভিতোরি, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, লুক জঙ্গো ও গ্রায়েম ক্রেমার।
তোমার ভালবাসা চাই liked this on Facebook.
Sazzad Reza liked this on Facebook.
Laltu Hossain liked this on Facebook.
Md Najim liked this on Facebook.