দুবাইয়ে হোটেলে আগুন; ব্যালকনি থেকে ঝুলে বাঁচলেন আলোকচিত্রী

আগুন থেকে তাঁর দূরত্ব ছিল মাত্র ১০ মিটার! ভূমি থেকে ৪৮ তলা ওপরে কোমরের বেল্টের সঙ্গে ৩০ মিটার কেব্‌ল পেঁচিয়ে ব্যালকনি থেকে ঝুলেছিলেন তিনি। বর্ষবরণের রাতে দুবাইয়ের ৬৩ তলা অ্যাড্রেস ডাউনটাউন হোটেলে লাগা আগুনের ছবি তুলতে গিয়ে এভাবেই মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছিলেন এক আলোকচিত্রী।

পরে একটি সংবাদ সংস্থাকে তিনি বলেন, ”শুধু মনে হচ্ছিল, আর হয়তো এক ঘণ্টা! তারপরেই সব শেষ।”

দুবাইয়ের ওই হোটেলের ২০ তলায় প্রথমে আগুন লাগে। স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ। পরে তা অন্য তলায় ছড়িয়ে পড়ে। ৪৮ তলার একটি ঘরের ব্যালকনি থেকে আতশবাজি আর আলোয় ঝলমল শহরের ছবি তুলছিলেন ওই আলোকচিত্রী। হঠাৎই এক বন্ধুর চিৎকার, ”আগুন, আগুন!”

আলোকচিত্রী পিছন ফিরে দেখেন, ব্যালকনির দিকে এগিয়ে আসছে ধোঁয়ার কুণ্ডলী। আর বন্ধু খুঁজছেন কাছাকাছি কোথায় ‘এগজিট’ লেখা রয়েছে!

ব্যালকনির পাশেই ছিল বাইরে থেকে জানালা পরিষ্কার করার প্ল্যাটফর্ম। তার প্রান্তে পাকিয়ে রাখা ছিল সাফাই কর্মীদের ব্যবহার্য কেব্‌ল। দেখেই ওই আলোকচিত্রী স্থির করেন, ওই কেব্‌ল তাঁকে বাঁচাতে পারে। ব্যালকনি টপকে প্ল্যাটফর্মে নামেন তিনি। কোমরের বেল্টে কেব্‌ল জড়িয়ে ঝুলতে ঝুলতে চলে আসেন ব্যালকনির নীচে। ওই আলোকচিত্রীর কথায়, ”আগুন মাত্র ১০ মিটার দূরে। ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে আসছে। চারপাশে কি হচ্ছে, কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।”

ওই অবস্থাতেই কেটে যায় আধ ঘণ্টারও বেশি সময়। হঠাৎ আলো দেখে আর পায়ের শব্দে বুঝতে পারেন উদ্ধারকর্মীরা কাছাকাছিই রয়েছেন। তাঁর কথায়, ”বেঁচে যেতে পারি বুঝে চিৎকার করতে থাকি। অ্যালুমিনিয়মের প্ল্যাটফর্মে জুতো দিয়ে ঠোক্কর মারতে থাকি।”

তাতেই তাঁর দিকে উদ্ধারকর্মীদের নজর পড়ে।

অগ্নিকাণ্ডের মধ্যেও দেশ-বিদেশের পর্যটকদের নিরাশ করেনি দুবাই। আতশবাজি পুড়েছে। হয়েছে উৎসব। ওই হোটেলের আপাত আশ্রয়হীন অতিথিদের জন্য বাড়ির দরজা খুলে দিয়েছেন দুবাইবাসীরা।

৯ thoughts on “দুবাইয়ে হোটেলে আগুন; ব্যালকনি থেকে ঝুলে বাঁচলেন আলোকচিত্রী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *