পাশে বড় ব্যাগে ভরা জামা-কাপড়। পেছনে শীত নিবারণের লেপ-কম্বল। ওপাশে পানির বোতল। আর তিনি গায়ে চাদর জড়িয়ে বসে আছেন বন্ধ দরজা ঘেঁষে। ছবিটি দেখলে যে কারো মনে হবে, বিশাল এ বাড়ির গৃহকর্ত্রী শীতের দিনে রোদ পোহাচ্ছেন।
কিন্তু না, মোটেই তা নয়। তিনি বসে আছেন বিয়ের দাবি নিয়ে। চোখে মুখে তার হতাশার ছাপ। বাড়িটির মালিক আশরাফুল হকের সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের পরকীয়া সম্পর্ক। যার কারণে সম্প্রতি মরিয়মের স্বামী তাকে তালাকও দিয়েছেন। এখন কী আর করা? নিরূপায় মরিয়ম বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের দুয়ারে অবস্থান নিয়েছেন।
আর অন্যদিকে, মরিয়মকে বিয়ের জন্য আসতে বলে বাড়ি ছেড়ে উধাও হয়ে গেছেন প্রতারক আশরাফুল। প্রেমিক ফিরে না আসা অবধি তার দুয়ারে অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মরিয়ম। কিন্তু তীব্র শীতের কারণে তিনি লেপ-কম্বল নিয়ে এসেছেন।
ঘটনাটি দিনাজপুরের পার্বতীপুর পৌর এলাকার নামাপাড়া গ্রামের। শনিবার বিকেল থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত এভাবে অবস্থান করতে দেখা গেছে মরিয়মকে।
স্থানীয়রা জানায়, নামাপাড়ার মুদি দোকানি আশরাফুলের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে পরকীয়া সম্পর্ক চলে আসছিল পৌরশহরের শহীদ ইব্রাহীম নগর মহল্লার দুই সন্তানের জননী মরিয়ম বেগমের। এ ঘটনায় এলাকাবাসী তাদের দু’জনকে ধরে কয়েকবার সতর্কও করে। তারপরেও তাদের পরকীয়া অব্যাহত থাকে। এক পর্যায়ে শনিবার বিকেলে মরিয়মকে তার স্বামী বাধ্য হয়ে তালাক দেন। এরপরই মরিয়ম বিয়ের দাবিতে গিয়ে ওঠে আশরাফুলের বাড়িতে। কিন্তু বাড়ির দরজা বন্ধ থাকায় তিনি বন্ধ দরজার পাশেই অবস্থান নেন।
মরিয়ম জানান, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তিন বছর ধরে আশরাফুল তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক অব্যাহত রেখেছেন। বিয়ে করার কথা বলে তিনি তাকে আসতেও বলেছেন। কিন্তু তার আসার আগেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। মরিয়ম বলেন, ‘সে ফিরে না আসা পর্যন্ত আমি তার দরজায় অবস্থান করবো।’
এলাকাবাসী জানান, আশরাফুল একজন খারাপ প্রকৃতির লোক। তার প্রথম স্ত্রীর দুই সন্তান থাকার পরেও সে দ্বিতীয় বিয়ে করে। এরপর প্রথম স্ত্রীকে তাড়িয়ে দেয়। আবার সে আরেক নারীর সংসার নষ্ট করেছে। সে তৃতীয় বিয়ে করে হ্যাট্রিক করতে চায়।
প্রতিবেশীরা জানান, আশরাফুল কবে ফিরবে কে জানে? এখন তো মরিয়মের একূলও গেল, ওকূলও গেল। তার সম্বল এখন লেপ-কম্বল।
জানতে চাইলে মোবাইল ফোনে অভিযুক্ত আশরাফুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘সব কিছু তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।’
পার্বতীপুর মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি, তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘ঘটনাটি লোক মুখে জেনেছি। এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি।’
Asif Sarker liked this on Facebook.
Moin Ahmed liked this on Facebook.
Imam Uddin liked this on Facebook.
Asif Siddique liked this on Facebook.
Fazlur Rahaman liked this on Facebook.
Nazmul Totol liked this on Facebook.