সীমান্ত হত্যা বলে কিছু নেই

সীমান্ত হত্যা বলে কিছু নেই উল্লেখ করে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের গভর্নর তথাগত রায় বলেছেন, ‘সীমান্তে মানুষ হত্যা করা হয় না। কেউ যদি পাসপোর্ট, ভিসা কিংবা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া লুকিয়ে ভারতে যেতে চাই তাহলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।’

শুক্রবার দুপুরে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া মহাবিদ্যালয় ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের মহানায়ক বিপ্লবী বাঘা যতীনের নামে নামকরণের ফলক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

তথাগত রায় বলেন, ‘ভারত যাওয়া বা আসার সময় কেউ যদি আইনকানুন মেনে না চলে তবে বিএসএফ-বিজিবি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।’

তথগত যখন এই দাবি করছেন তখন ভোরে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার ঠাকুরপুর সীমান্তের ভারতীয় অংশে বিএসএফের গুলিতে রুহুল আমিন (৩২) ওরফে রুহুল মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি নিহত হন।

এছাড়া গত ২ ডিসেম্বর সিলেটের জৈন্তাপুর সীমান্তে এবার ভারতীয় খাসিয়ার গুলিতে বাংলাদেশি যুবক জমির মিয়া (২২) নিহত হয়। গত ২৬ নভেম্বর সাতক্ষীরা সদর উপজেলার তলুইগাছা সীমান্তের বিপরীতে ভারতের তারালী এলাকায় বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হন। এর পরদিন লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দইখাওয়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে অমূল্য চন্দ্র বর্মণ নামে এক বাংলাদেশি গরু ব্যবসায়ী নিহত হন।

দু’দেশের সম্পর্কের নির্দিষ্ট কোনো চিন্তাভাবনা রয়েছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবারে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারতের আলাদা একটা সম্পর্ক রয়েছে। দু’দেশের সাংস্কৃতিক মিল এবং সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হচ্ছে।’

পরে উপজেলা প্রশাসন ও মাহবিদ্যালয়ের আয়োজনে বাঘা যতীনের বাস্তুভিটা কয়া মহাবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বাঘা যতীনের ইতিহাস ঘাটলে অনেক কিছু পাওয়া যায়। সেটি অনেকদিন পরেও হলেও বাঙালি আজকে যেভাবে স্মরণ করছে তাতে আমি গর্বিত।’

ত্রিপুরা রাজ্যের এই গভর্নর বলেন, ‘বাঘা যতীনের নাম যতিন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। বাঘা যতীনের জন্ম হয় ১৮৭৯ সালের ৭ ডিসেম্বর মামাবাড়ি কুষ্টিয়ার কয়া গ্রামে। তার সময় কেটেছে বাংলাদেশের যশোর, ঝিনাইদহ এবং কুষ্টিয়ার এই কয়া গ্রামে। তার পিতার নাম উমেষ চন্দ্র মুখোপাধ্যায় এবং মায়ের নাম শরৎশশী দেবী।’

তিনি বলেন, ‘বাঘা যতীনের জন্ম এই এলাকায় এটা আমার জানা ছিল না। শুধু বাঘা যতীনই নয়, বাউল সম্রাট লালন, সাংবাদিকতার পথিকৃৎ কাঙাল হরিনাথ, সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের নাম শুনেছি কিন্তু তাদের বাড়ি যে এই কুষ্টিয়ার কুমরাখালীতে তা আমার জানা ছিল না।’

কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনের সংসদ সদস্য আব্দুর রউফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের প্রশাসক আলহাজ জাহিদ হোসেন জাফর।

এতে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আবু হেনা মোস্তাফা কামাল, অতিরিক্ত সুপার জয়নুল আবেদীন, কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহেলা আক্তার, স্বাদীনতার ইতিহাস লেখক আব্দুস ছালাম, কয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম, কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট নিজামূল হক চুন্নু, অধ্যক্ষ হারুন-অর রশীদ প্রমুখ।

One thought on “সীমান্ত হত্যা বলে কিছু নেই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *