‘ফেসবুকে লেখার কারণে যে রাষ্ট্রের ভিত নড়ে সে রাষ্ট্র আসলেই দুর্যোগাক্রান্ত’

ফেসবুক পেজ ‘মজা লস’ পেজের অ্যাডমিন রিফায়েত’কে আটকের ঘটনা জন্ম দিয়েছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এই ঘটনায় নানা প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন অনেকেই। সমালোচকরা বলছেন ‘এই ঘটনার ক্রিয়া প্রতিক্রয়া ঠিক করে দেবে আগামী দিনে দেশের ভেতর থেকে ফেসবুকে সরকারের সমালোচনা ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ কতুটুকু করা যাবে। ইতিমধ্যে রিফায়েতের মুক্তির দাবিতে ফেসবুকে খোলা হয়েছে ইভেন্ট পেজ।

২২ দিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার ফেসবুক খুলে দেয়ার পর রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্ক এলাকা থেকে আটক হয় ফেসবুক পেজ ‘মজা লস’র একজন অ্যাডমিন রিফায়েতকে।

রিফায়েতের আটকের ঘটনার সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর জ্বালানী বিশেষজ্ঞ কল্লোল মুস্তফা ফেসবুকে লেখেন, ‘মজা লস?’ একটা হালকা ফান পেজ হলেও রীতিমতো ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ তৎপরতার অভিযোগে এর অ্যাডমিনকে গ্রেফতার কোনো হালকা ঘটনা নয়। দেশের ভেতর থেকে ফেসবুকে সরকারের সমালোচনা ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ ইত্যাদি চলবে কি চলবে না, চললে কীভাবে কী মাত্রায় চলবে- তা এই ঘটনার ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার উপর অনেকখানিই নির্ভর করবে। নানা দিক থেকেই এটা একটা সিরিয়াস টেস্ট কেস বলেই মনে করি।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোর্তিময় বড়ুয়া তার ফেসবুকে ঘটনার নিন্দা জানিয়ে লেখেন, ‘বিমান বাহিনীর মনে হয় মহড়া চলছে, মাঝে মাঝেই মন আর কানের বারোটা বাজিয়ে উড়ে যাচ্ছে। আর আমার সিরাজ উদ দৌল্লা সিনেমার ডায়লগ মনে পড়ছে- বাংলার আকাশে আজ দুর্যোগের ঘনঘটা, কে দেবে আশা, কে দেবে ভরসা? এরই মধ্যে শুনি ফেসবুকে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণার জন্যে একটি ফান পেজের কর্ণধারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাংলা আজ সত্যিই দুর্যোগে পতিত। ফেসবুকে লেখার কারণে যে রাস্ট্রের ভিত নড়ে যায় সে রাষ্ট্র আসলেই দুর্যোগাক্রান্ত।…’

জার্মান ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ডয়চে ভেলের প্রতিনিধি আরাফাতুল ইসলাম লেখেন, ‘বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ফেসবুক পাতা Moja losss? এর একজন অ্যাডমিনকে আটক করা হয়েছে৷ সাধারণ মানুষের বাকস্বাধীনতার উপর এধরনের হস্তক্ষেপের নিন্দা জানাই৷’

আটকের ঘটনার পরই তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ১০ তারিখ একটি ইভেন্টের ডাক দেয় অনলাইন কমিউনিটি। কমিউনিটির পক্ষে অনলাইন এক্টিভিস্ট এবং ব্লগারস ফোরামের সাবেক সভাপতি আবু সাঈদ আহমেদ প্রিয়.কম-কে বলেন, ‘আপাতত আমরা অনলাইন প্লাটফর্মে এই আটকের প্রতিবাদে সোচ্চার থাকব। এরই মাঝে আমাদের আলোচনা অব্যাহত থাকবে। ১৬ তারিখে একত্রিত হয়ে একটি পিটিশন তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয় এবং বিভাগকে প্রেরণ করব। এছাড়া ভবিষ্যত কর্মপন্থা নির্ধারণ করব। সংবিধান স্বীকৃত বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। বাকস্বাধীনতার পরিবর্তে কণ্ঠরোধের বিরুদ্ধে অতীতের মতো ভবিষ্যতেও সোচ্চার থাকবে অনলাইন কমিউনিটি।’

তবে ইভেন্টের ডাক দেয়ার পর থেকেই সাঈদ নানা রকম হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন বলে দাবি করেন।

৯ thoughts on “‘ফেসবুকে লেখার কারণে যে রাষ্ট্রের ভিত নড়ে সে রাষ্ট্র আসলেই দুর্যোগাক্রান্ত’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *