মুসা বিন শমসেরের ৯৩৬০০ কোটি টাকা গেলো কোথায়?

ঢাকা : আলোচিত ব্যবসায়ী ও ড্যাটকো গ্রুপের চেয়ারম্যান ড. মুসা বিন শমসের (প্রিন্স মুসা) দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) যতটা বলেছেন তা সঠিক নয় বলে জানিয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান বলেছেন, ‘তিনি যতোটা না করেছেন, তার চেয়ে বেশি বলেছেন।’

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দুদক চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।

‘মুসা যতোটা গর্জে, আসলে ততো না’ উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘দুদকের কাছে তিনি বিশাল জমি-জমার হিসাব দিয়েছেন। তবে কোনো জায়গাই তার দখলে নেই। আবার বিদেশে আটক ১২ বিলিয়ন ডলারের যে তথ্য দিয়েছেন, সেখান থেকে সে তথ্যও পাচ্ছি না। আবার সেও কিছু দিতে পারছেন না। আমরা খোঁজ-খবর নিয়ে দেখেছি, তেমন কিছু নেই। যতোটা না করেছেন, তার চেয়ে বেশি বলেছেন তিনি।’

এদিকে দুদক সূত্রে জানায়, মুসা বিন শমসেরকে এর আগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তার কাছ থেকে সুইচ ব্যাংকের হিসাব নম্বর জানা যায়নি। কমিশনে মুসার জমা দেয়া সম্পদ বিবরণীতেও এ তথ্য নেই। সুইচ ব্যাংকের ওই হিসাব নম্বর না পাওয়ায় সুনির্দিষ্ট তথ্য চেয়ে এমএলএআর পাঠাতে পারছে না দুদক। তাই শিগগিরই সুইচ ব্যাংকের ওই হিসাব নম্বরটি জানতে তাকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

বিজনেস ম্যাগাজিন ফোর্বস’র প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে প্রিন্স মুসার বিরুদ্ধে ২০১১ সালে অবৈধ সম্পদের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। তবে অজ্ঞাত কারণে দুদকের ওই অনুসন্ধান আলোর মুখ দেখেনি। আবার তিন বছর পর ২০১৪ সালের শেষের দিকে ‘বিজনেস এশিয়া’ ম্যাগাজিনের প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে অবারও নতুন করে মুসার সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুদক।

২০১৪ সালের ৩ নভেম্বর দুদকের পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীকে বিষয়টি অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয়। তার প্রাথমিক অনুসন্ধানে মুসার বিরুদ্ধে স্বনামে/বেনামে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেলে চলতি বছরের ১৯ মে তার বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করে কমিশন। নোটিশ অনুসারে চলতি বছরের ৭ জুন দুদকে সম্পদ বিবরণী জমা দেন মুসা বিন শমসের।

সম্পদ বিবরণীতে তিনি সুইচ ব্যাংকে তার ১২ বিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি প্রায় ৯৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা- প্রতি ডলার ৭৮ টাকা হিসাবে) ফ্রিজ অবস্থায় থাকার কথা উল্লেখ করেন। সুইচ ব্যাংকে ৯০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের (বাংলাদেশি প্রায় ৭০০ কোটি টাকা) অলংকার জমার তথ্য দিয়েছেন তিনি। এছাড়া দেশে তার সম্পদের মধ্যে গুলশান ও বনানীতে দু’টি বাড়ি, সাভার ও গাজীপুরে এক হাজার ২০০ বিঘা জমির কথাও সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ রয়েছে।

৮ thoughts on “মুসা বিন শমসেরের ৯৩৬০০ কোটি টাকা গেলো কোথায়?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *