রাজধানীর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর অচেতন থাকা রোগীকে যৌন হেনস্তার অভিযোগে নার্স (ব্রাদার) সাইফুল ইসলামকে আগামী ৬ জানুয়ারির মধ্যে গ্রেপ্তার করে মামলার অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ সোমবার সকালে বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর যৌন হেনস্তার অভিযোগে আসামিকে গ্রেপ্তার করে আজ আদালতে হাজিরের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান জোনের উপকমিশনার (এসি) মো. রফিক ও গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল হক আদালতে হাজির হয়ে ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেননি বলে জানান।
এ সময় আদালতকে এসি মো. রফিক বলেন, ‘আমরা তাঁকে (আসামি) গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। কিন্তু তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি পলাতক আছেন। তাঁকে গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
এ পর্যায়ে আদালত আগামী ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।
তাপস কুমার বলেন, ‘আজ আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশ জানিয়েছে, তারা আসামিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। তাই আদালত তাদের আগামী ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন।’
গত ৩০ নভেম্বর রাজধানীর অভিজাত আবাসিক এলাকা গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) এক নারী রোগীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে ২ ডিসেম্বর বিষয়টি জানাজানি হয়। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাইফুলের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়নি। কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
পরে একটি পত্রিকায় প্রকাশিত খবর আমলে নিয়ে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে যৌন হয়রানির অভিযোগে সাইফুলকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন।
পরে ওই রোগী সাংবাদিকদের জানান, তিনি অজ্ঞান ছিলেন। হঠাৎ জ্ঞান ফিরে দেখেন, বুকের ওপর একটি হাত। একই সঙ্গে তাঁর শরীরের কাপড় (চাদর) সরানো হচ্ছে। তিনি তাকিয়ে দেখেন, ওই হাত একটা ছেলের। তিনি নার্সদের ডাকার চেষ্টা করেন। প্রায় আধা ঘণ্টা পর নার্স আসেন। নার্স এসে এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং তাঁর স্বামীকে না জানাতে অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে ওই নারী তাঁর স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও দেখা করতে দেওয়া হয়নি।
১৬ ঘণ্টা পর তাঁর স্বামীর সঙ্গে দেখা হওয়ার পর বিষয়টি জানাজানি হয়। তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সাইফুল ইসলামকে পুলিশে সোপর্দ করতে বলেন। কিন্তু তারা তাঁকে পুলিশে দিতে রাজি হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বারবার তাঁকে মামলা করার জন্য বলেছে। কিন্তু তিনি মামলা না করেই সাইফুলকে পুলিশে দেওয়ার কথা বলেন।
Harun Ahmed liked this on Facebook.
Tania Chowdhury liked this on Facebook.
Taj Sheikh liked this on Facebook.