সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, ইসলামের বিরুদ্ধে নয়

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে যেন কোনোভাবেই ইসলাম ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধ বলে মনে না করা হয়, সেদিকে লক্ষ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এ সময় মার্কিন নাগরিকদের একজনকে আরেকজনের বিরুদ্ধে লড়তে মানা করেন তিনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা যদি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হতে চাই, তাহলে অবশ্যই মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে শক্তিশালী জোট গঠন করতে হবে। তাদের সন্দেহের চোখে দেখে, ঘৃণা করে দূরে সরিয়ে দিলে চলবে না।’

গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় (বাংলাদেশ সময় সোমবার সকাল) ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে এসব কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

দেশটির সান বার্নারডিনোতে বন্দুকধারীদের হামলায় ১৪ জন নিহত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় এ বক্তব্য রাখেন ওবামা। এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ওভাল অফিস থেকে বক্তব্য রাখলেন ওবামা। সাধারণত জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য এই স্থান ব্যবহার করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে সমাজের ভেতর বিভেদ তৈরি হলে চরমপন্থীদের জন্য সুবিধা হবে বলে মন্তব্য করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। সে সঙ্গে হামলাকারীদের কাছে অস্ত্র সরবরাহ কঠিন করতেও কাজ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এ জন্য দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটিকে কঠোরভাবে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের জন্য নির্দেশ দেন তিনি। সে সঙ্গে সান বার্নারডিনোতে হামলা চালানো নারী কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিল, তা খতিয়ে দেখতেও নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট।

বারাক ওবামা বলেন, ভয় বা আতঙ্কের চেয়ে স্বাধীনতা অনেক বেশি শক্তিশালী। সান বার্নারডিনোর এই হত্যাকাণ্ড সাধারণ নিরপরাধ মানুষের জীবন নেওয়ার জন্যই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র শিগগিরই সন্ত্রাসবাদের এই হুমকি কাটিয়ে উঠবে বলে আশা ব্যক্ত করেন বারাক ওবামা।

আমেরিকান মুসলিমরাও যে যুক্তরাষ্ট্রের সমাজের অংশ, সে কথা দেশটির নাগরিকদের মনে করিয়ে দেন ওবামা। তিনি বলেন, ‘এবং হ্যাঁ, সামরিক পোশাক পরে দেশের জন্য জীবন দিতে যারা প্রস্তুত থাকে, সেই নারী-পুরুষরাও আমাদের দেশেরই নাগরিক, এটাও আমাদের মনে রাখতে হবে।’

বারাক ওবামা বলেন, আমেরিকার মুসলিম সম্প্রদায় থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার অর্থ হলো, ইসলামিক স্টেট (আইএস) যা চাইছে তা-ই করা। এই আইএসের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের শক্তি প্রয়োগ করা হবে বলেও জানান তিনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘প্রয়োজন হলে আমাদের সেনাবাহিনী যেকোনো দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদের পরিকল্পনাকারীদের খুঁজে বের করবে।’ এ ছাড়া দেশের মাটিতে সন্ত্রাসবাদকে পরাজিত করতে অনেক কিছু করার আছে বলে মনে করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.