প্রবাস থেকে খুব জানতে ইচ্ছা করে কেমন আছে বাংলাদেশ? খুব জানতে ইচ্ছা করে কেমন আছে বাংলাদেশীরা? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে বাংলাদেশ সম্পর্কে যা কিছু জানা যায় তার কতটুকু সত্য? কতটুকু মনগড়া? বাংলাদেশের মসজিদের ইমামদের জুম্মার খুদবার মত কতটুকু যার যার মনের মাধুরি, ক্রোধ, ব্যক্তিগত স্বার্থ, আক্রোশ, ঘৃনা, ইত্যাদি দ্বারা প্রভাবিত তথ্য তা কেউ জানেনা। কেউ জানেনা বাংলাদেশীরা কেমন আছে। স্বজনহারা মানুষেরা যার যার প্রিয়জনের ছবি নিয়ে সাংবাদিক সন্মেলন করে। মায়েরা কাঁদে, স্ত্রীরা কাঁদে, সন্তানেরা কাঁদে, সাংবাদিকেরা ছবি উঠায়, যারা খুনী তারাও দ্যাখে, যারা খুনের নির্দেশ দিয়েছে তারাও দ্যাখে, কারু কিছু করার নেই। বিরোধীদল করলেই মরতে হবে। এটাই স্বাভাবিক। এমন অনেক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে যাদের প্রিয়জনদের কাছে ক্যামেরা যেয়ে পৌছেনি। প্রতিদিন লাশ পাওয়া যায় ময়লার স্তুপে, পানিতে, সীমান্তে, গ্রামে, গঞ্জে,মাঠে, ধর্ষিতা লাশ, হাত বাঁধা লাশ, নির্যাতিত লাশ। রাজনৈতিক হত্যাকান্ড ছাড়াও আরো অনেক হত্যাকান্ড ঘটছে, তার ভেতরে নারী নির্যাতনের শিকার ও ভারতের বিএসএফ দ্বারা হত্যাকান্ড অন্যতম।
২৭শে নভেম্বর ২০১৫ – লালমনিরহাটে ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) একজন বাংলাদেশী হত্যা করে। হাতিবান্ধা উপজেলার অমূল্য বর্মন (৩৮)কে বিএসএফ এর হাতে প্রান দিতে হয়। সেই পুরানা গল্প – গরু চোরাকারবারী। সীমান্তে কেউ চোরাকারবারী করলে তাকে আন্তর্জাতিক আইনে গ্রেফতার করে তার দেশে পাঠাতে হবে বিচারের জন্য। একজন বাংলাদেশীকে গুলি করার অধিকার ভারতের নেই। অতিতে ভারতের নাগরিকেরা যখন আমেরিকা থেকে কানাডা এসেছিল বা আসত তখন কানাডার বর্ডার সিকিউরিটি গার্ড তাদের গুলি করে মেরে ফ্যালে নাই। ডিটেনশন সেন্টারে নিয়া গেছে, তিনবেলা খাইতে দিয়েছে এবং কানাডিয়ানদের ট্যাক্স ডলার দিয়া তাদের জন্য উকিল নিয়োগ করেছে নিজেদের ডিফেন্ড করার জন্য। অমুল্য বর্মনের মত অনেক বাংলাদেশীকে বিএসএফ হত্যা করেছে। বাংলাদেশীদের যেহেতু নির্বাচন করার অধিকার নেই তাই বাংলাদেশে কোন সরকার নেই বা আইন নেই। বহুকাল ধরেই পূর্ব বাংলা পরাধিন, অরক্ষিত। তাই ভারতের বিএসএফ যখন খুশী তখন বাংলাদেশী হত্যা করে। বাংলাদেশের ভেতরে যেসব খুনীরা আছে তারাও যখন খুশী তখন বাংলাদেশী হত্যা করে । কারু কোন বিচার হয়না। বাংলাদেশীরা এইসব কিছু মেনে নিয়েছে। এগুলা নিয়া কেউ মাথা ঘামায় না। বাংলাদেশীরা নির্বাচন ও গনতন্ত্র পেতে আগ্রহী। গনতন্ত্র বলতে বাংলাদেশীরা ভোট দিয়ে তাদের মনের মত দুর্নীতিবাজকে নির্বাচিত করে যার যার স্বার্থ নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে আগ্রহী। জাতীয় পর্যায়ে বাংলাদেশীরা নামি দামী নেতার জানাজা ছাড়া আর কোথাও একত্রিত হয়না।
অধিকারের রিপোর্ট থেকে জানা যায় বিগত পাঁচ মাসে ভারতের বিএসএফ ২০ বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে এবং ২৯ জন বাংলাদেশীকে গুলি ও নির্যাতন করে আহত করেছে। বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও অন্যান্য পেশাদার খুনীরা এই খবর শুনে হাসে। ভারতের বিএসএফ এর চাইতেও অনেক বেশী বাংলাদেশী হত্যা করে বাংলাদেশীরা নিজেরাই।
অধিকারের সমীক্ষা থেকে জানা যায়, ১লা জানুয়ারী ২০০০ থেকে ৩১শে মে ২০১৫ পর্যন্ত ভারতের বিএসএফ ১০৫৫ জন বাংলাদেশী হত্যা এবং ৯৪৮ জন বাংলাদেশীকে আহত করেছে ।
বাংলাদেশীরা যাতে ভারতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য ৪১৫৬ কিলোমিটার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া লাগাচ্ছে ভারত। পালেস্টাইনের বেশীরভাগ জমি দখল করে ইসরায়েল সীমান্তে যে দেওয়াল তুলেছে ঠিক একই রকম দেওয়াল তুলে দিয়েছে ভারত। অন্যদিকে ভারতের পন্য অবাধে প্রবেশ করে বাংলাদেশে। ভারতের পন্য ছাড়া বাংলাদেশীরা একদিনও বাঁচতে পারবেনা। ভারতের পণ্য যাতে অবাধে প্রবেশ করতে পারে এবং বাংলাদেশকে ভারতের একটি বৃহৎ বাজার হিসাবে প্রতিষ্টিত করতে পারে সেজন্য বাংলাদেশের জনগন আকুল ও ব্যাকুলভাবে ভারতকে সহযোগীতা করেছে, এবং করবে বলে নিজেরা সব ব্যবসাপাতি গুটিয়ে ফেলে ভারতের পন্যের ডিলারসিপ নিয়েছে। তাতেই বেশী মুনাফা। বাংলাদেশীরা উৎপাদনে তেমন আগ্রহী নয়। বাংলাদেশীরা নির্বাচন করে ক্ষমতায় যেতে বেশী আগ্রহী। বাংলাদেশীরা ক্রিকেট খেলাতে বেশী আগ্রহী। সেজন্য পানি পরিহারের মাধ্যমে নদীগুলোতে বাংলাদেশীরা মরুউদ্যান ও স্টেডিয়াম তৈরি করে ক্রিকেট প্র্যাকটিস করার চিন্তাভাবনা করছে।
জানা হবেনা । জানা হলোনা। কেমন আছে বাংলাদেশ ?