সিকিমীকরনের বিরুদ্ধবাদীদের নিধন চলছে ফাঁসিতে: নির্বাচন সামনে তাই নানান কলাকৌশল

মিনা ফারাহ

বাংলাদেশকে কলংকমুক্ত করার নামে আর কতো মিথ্যা বলবে লীগ? কলংকমুক্ত করছে ইন্ডিয়াকে কারণ নিজেদের প্রয়োজনে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করেছে ইন্ডিয়া। পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করে ৪৭এর প্রতিশোধ নেয়ার প্রয়োজন ছিলো ইন্ডিয়ার। আমরা মূর্খ নই তাই জানি, পাকিস্তানকে দুইখন্ড করার পর প্রায় ১০০ হাজার যুদ্ধাপরাধীকে মুক্তি দিলো ইন্দিরা নিজে।

জাতিকে কলংকমুক্ত করার চৌকিদারি কেউ দেয়নি হাসিনাকে। এইসব অজুহাত ডাহা মিথ্যা। মুজিব পবিবারের একজনও মুক্তিযুদ্ধে না গিয়ে দেশে-বিদেশে পাকিস্তানীদের জরায়ুতে আশ্রয় নিয়েছিলো। এসব কি সিকিম বানানোর প্রস্তুতি? ভারতের সঙ্গে উন্নত সম্পর্ক হঠাৎ কেন আকাশ ছাড়িয়ে যাচ্ছে? হঠাৎ চুক্তির ধুম এবং গণভবনে দাদা-দিদিদের মাসির বাড়ি। সকল নষ্টের গোড়া ওই প্রণব মুখার্জী। ও যতোদিন রাজনীতিতে থাকবে, অভিশাপমুক্ত হবে না বাংলাদেশ। দাদা-দিদিদের গায়ে পড়া আত্মীয়তা বমির উদ্রেক করে। ভারতীয়দের সঙ্গে এইমাত্রায় চুক্তি দেখে মনে হচ্ছে টাইবুন্যালকে ব্যবহার করা হচ্ছে সিকিম বানানোর ক্ষেত্র হিসেবে। অর্থাৎ প্রতিবাদ করার জন্য একটি কণ্ঠও রাখবে না।

৭৫ সনে সিকিম দখলের আগে ইন্দিরা গান্ধিও লেন্দুপ জর্দিকে দিয়ে একটার পর একটা সফল অভিযান চালিয়েছিলো। আমাদের দেশেও এখন একটার পর একটা সফল অভিযান অব্যাহত। যে প্রক্রিয়ায় ৫ জানুয়ারি কায়েম করলো ভারত, অভিযান প্রমাণের জন্য যথেষ্ট। কওয়া নেই বলা নেই, এখন দেখুন, প্রতি সপ্তাহেই ভারতের সাথে বন্ধুত্ব আরো উপরদিকে যাচ্ছে। কি চুক্তি, কেন চুক্তি, কবে চুক্তি, কখন পরিকল্পনা, কারা আলোচক, কারা দলিল লেখক… কাউকে বলে?

এখন প্রায় প্রতিদিনই ভারতীয়দের অনুষ্ঠান বাংলাদেশে। সাকা-মুজাহিদের ফাঁসির দিন ঋতৃক রওশনদের ৩ ঘন্টার অনুষ্ঠানের জন্য ৪ কোটি টাকা গচ্চা। এই দেশে এখন কয় লক্ষ খয়ের খা? কেজিবি, সিআইএ, জগৎশেঠের মতো এরাই বন্ধুবেশে মানুষের সঙ্গে মিশে একটার পর একটা অভিযান সফল করছে। জয়বাংলা।
গতকাল হঠাৎ দেখি, পুঁজিবাজার ভারতীয়দের হাতে তুলে দেয়ার সফল অভিযান। অর্থের এতোই সংকট, এবার ভারতীয়দের হাতে তুলে দিলো পুঁজিবাজার। এবার ভারতীয় হাঙ্গরেরা পুঁজিবাজার ইঞ্জিনিয়ারিং করে বাটপার সালমান রহমানদেরকেও পরাজিত করবে। এই খেলায় যারা রক্তাক্ত হবে অর্থাৎ গরিব বিনিয়োগকারীদের কোন খবরই কভার করবে না টেলিভিশন লীগ। সিকিম হতে আর কতো দেরি?
বাংলাদেশিদের মস্তিষ্ক সত্যিই গণশৌচাগার। মল-মূত্রের বিষক্রিয়ায় ধ্বংস হয়েছে মস্তিষ্কের প্রতিটি কোষ। তাই তারা এখন আর চিন্তা করতে পারে না। প্রাণভিক্ষার চিঠি নিয়ে আইনমন্ত্রীর যে বেইলি রোডের নাটক, গন্তব্য কোথায় জানেন? আপনারা কেউ কি জানেন, নাজমুল হুদা কেন তৃণমূল বিএনপি খুললো? কারো কি ধারনা আছে, কেন দিবস ভিত্তিক ফাঁসি? ন্যূনতম চিন্তাশক্তি থাকলে বলুন, কেন এই প্রাণভিক্ষার নাটক? খালেদার মতো পরে নয় বরং আগেই চিন্তা করে বাংলা নাৎসী পার্টি। তারা সঠিক সময়ে সঠিক পরিকল্পনাটি করে ফেলেছে। বিদেশিদের চাপে মধ্যবর্তী নির্বাচন অনিবার্য।

তৃতীয় চোখে কয়েকটা অগ্রিম রায় দেখছি। আরো প্রায় ১১টা ফাঁসির আগে এগুলো বের করা হবে। খালেদাকে জেলে পাঠানোর আগে একটি রায় আনা হবে। মার্চে জামায়েত নিষিদ্ধ করার আগে এখান থেকেই একটি রায় নিয়ে আসবে। নাজমুল হুদার বিএনপি দিয়ে মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে জিয়ার বিএনপি নিষিদ্ধের রায়টিও আসবে এখান থেকেই। বাংলাদেশকে কেন সিকিমের মতো অঙ্গরাজ্য হলে দেশের আরো উন্নতি হবে, রায়ের মাধ্যমে সেটিও জানানো হবে প্রেস কনফারেন্স থেকে। একটি রায় দেখছি যেখানে বলছে, বাংলাদেশে এখন থেকে ভারতের সংস্কৃতি চালু হবে এবং সবগুলো প্রেক্ষাগৃহে বলিউডের ছবি বাধ্যতামূলক, ইত্যাদি ইত্যাদি।

ইন্দিরা গান্ধির করুণ পরিণতি কে না জানে? একনায়কত্ব কায়েম করে অসংখ্য স্বাধীনতাকামি খুন করেছিলো স্বৈরাচার ইন্দিরা। মুক্তিযুদ্ধে তার সহায়তার মূলে গণতন্ত্র নয় বরং হসিনার ১৫ আগস্টের মতোই জওহরলালের ৪৭ এর প্রতিশোধ কার্যক্রম। আমরা পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়েছি কিন্তু গণতন্ত্র মারা গেছে। আইয়ুব আমলে কখনোই এই পর্যায়ের মার্শল ল’ এবং কমিউনিজম দেখিনি। পথে-ঘাটে এখন ফুলের বদলে বন্দুকের নল ফোটে। পাখির বদলে গান গায় মেশিনগান। গাছের পাতার বদলে গুলির ঝড়োহাওয়া। পূর্ণিমার আলোর বদলে শরীর আলোকিত করে র্যা বের হাজারো সার্চলাইট। এই হচ্ছে আজকের বাংলাদেশের চেহারা। ইস্কান্দার মির্জা থেকে সোহরাওয়ার্দির মৃত্যু পর্যন্ত, ৬ বছর সামরিক শাসন থাকলেও, ৬৫ সন থেকে পূর্ণ গণতন্ত্র ভোগ করেছে এই ভূখন্ডের মানুষ। করেনি? এখন আমাদেরকে সত্য বলতে হবে, সাবালক হতে হবে, অন্যথায় দলে দলে আত্মহত্যা করুন। গণতন্ত্র নয়, চলছে কমিউনিজম এবং সামরিক শাসন দুটোই। আইয়ুব খানের অভিশাপ লেগেছে। নরকে বসে ইন্দিরা খুশিতে লাফাচ্ছে। তার ২নম্বর সিকিমতন্ত্র সফল হওয়ার পথে। ভারতের সেনাবাহিনী ফ্লাট, টাকা-পয়সার পরোয়া করে না। যখন দেখলো, স্বর্ণমন্দিরে তাদের ভাইদেরকে হত্যা করেছে ইন্দিরার বাহিনী, তখন যা করার করলো, ইতিহাস সাক্ষি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *