কারাগারে বসে কী লিখতে চায় ঐশী রহমান?

ঢাকা: পুলিশ পিতা ও মাকে হত্যার অভিযোগে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ঐশী রহমান কারাগারে বসে কী লিখতে চাইছে? সম্প্রতি তার একমাত্র চাচা মশিউর রহমান রুবেল তাকে দেখতে কারাগারে গেলে ঐশী তার কাছে কাগজ কলম চাওয়ার পর এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে পরিবারে মধ্যে। তবে ঐশী আসলে কী লিখতে চায় সে ব্যাপারে তার চাচা কিছু বলেননি। আর ঐশীও নাকি এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলতে চায়নি।

কারাগারে ঐশী কেমন আছে-জানতে চাইলে তার চাচা এই প্রতিবেদককে বলেন, ঐশী ভালো নেই। ফাঁসির মতো এই বিশাল শাস্তি সে মানতেই চাইছে না। কারাগার থেকে বের হওয়ার জন্য সে ব্যকুল হয়ে উঠেছে। প্রতিদিনই কারাগারে কান্নাকাটি করে। আর ওর সঙ্গে দেখা করতে গেলেই বলে আমাকে কারাগার থেকে বের করে নিয়ে যাও।

গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারের কনডেম সেলে সে এখন অন্তরীণ। রায়ের পরে তার মানষিক অবস্থা মোটেই ভালো নেই। সে রীতিমতো ভেঙে পড়েছে।

গত বৃহস্পতিবার কাশিমপুর কারাগারে ঐশীকে দেখতে যান তার চাচা মশিউর রহমান রুবেল। চাচাকে কাছে পেয়ে ঐশী ভীষণ আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে। তবে ঐশীর ভেতরে অনুশোচনার লেশমাত্র নেই।

সোমবার রাতে মুঠোফোন আলাপ হয় ঐশী রহমানের চাচা মশিউর রহমান রুবেল বলেন, কারাগারে তাকে গল্পের বই কিনে দেয়া হয়েছে। বই পড়েই তার সময় কাটছে। তিনি বলেন, ঐশী আমার কাছে কাগজ কলম চেয়েছে। তবে কাগজ কলম দিয়ে সে কী করবে সে ব্যাপারে কিছু বলতে চায়নি।

খাওয়া দাওয়ায় যাতে কোনো কষ্ট না হয় সে জন্য আমি তার জন্য প্রিজন ক্যান্টিনে টাকা দিয়েছি কিছু কিনে খাওয়ার জন্য। এ সময় ছোটভাই ওহীকে দেখার জন্য ঐশী বেশ কান্নাকাটি করে। কিন্তু ওহীর পরীক্ষা থাকায় তাকে সেখানে নেওয়া সম্ভব হয়নি।

মশিউর রহমান রুবেল আরও বলেন, রায়ের নকল তোলা হয়েছে। আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপ শেষে হয়ত আগামী সপ্তাহেই উচ্চতর আদালতে আপিলের জন্য যাব। ঐশীর ফাঁসির রায়ের পর থেকে তার দাদীর শারীরিক অবস্থাও বেশ খারাপ হয়ে গেছে বলেও তিনি জানান।

জানতে চাইলে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার সালমা বেগম এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

চলিত বছরের ১২ অক্টোবর পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানকে হত্যার দায়ে তাদের মেয়ে ঐশী রহমানকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত।

২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরের দিন রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় আত্মসমর্পণ করে ঐশী রহমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.