আটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছে ইসলামিক স্টেট

৯/১১ এর কথা মনে আছে তো সবার? ৯/১১ খেলাতে সাড়া বিশ্বের মুসলমানদের হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছিল। ব্যাপক ধরপাকড় হয়েছিল। নির্দোষ মানুষকে রাস্তা থেকে বা বাসা থেকে বা তাদের কর্মস্থান থেকে তুলে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল, অমানবিক মানসিক নির্যাতন করা হয়েছিল, গ্রেফতার করা হয়েছিল এবং জেলে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছিল। এখনও হচ্ছে। ইসলামিক স্টেট হলো ৯/১১ পরবর্তী নাটক। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ইসলামিক স্টেটের হামলার কারণে সাড়া ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকাতে দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়েছে “ঘৃনা” অপরাধ। কানাডার অন্টারিও প্রদেশের পিটারবোরো শহরের একটি মসজিদ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে । একটি মন্দিরে আগুন দেওয়া হয়েছে। কানাডার বৃহত্তম শহর টরেন্টোতে দুইজন হিজাবী মহিলার উপরে আক্রমণ করা হয়েছে। শারীরিকভাবে আঘাত করা হয়েছে। ফলাফল এরা মানসিকভাবে মুষরে পড়েছে। কানাডার পুলিশ এব্যাপারে তদন্ত করছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এক বিবৃতি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন, সাম্প্রদায়িকতা ও ঘৃনা অপরাধকে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে বলে জানিয়েছেন। দেশ,জাত,বর্ণ,ধর্মীয় বিশ্বাস ও রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে কারুকে “ঘৃনা” করা একটি ফেডারাল অপরাধ হিসাবে গন্য করা হয়।

প্রথমে সিরিয়া থেকে মানুষজনকে উত্যাক্ত করে বের করে দেয় ইসলামিক স্টেটের সন্ত্রাসীরা। দেশ থেকে বিতারিত বা পালিয়ে আসা সিরিয়ানরা প্রথমে বিভিন্ন প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিতে চেস্টা করে কিন্তু পারেনি ফলে স্রোতের মত ভেসে আসে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সীমান্তে। কোন কোন দেশ আশ্রয় দিয়েছে। কোন কোন দেশ তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। নারী, পুরুষ, শিশুরা এখনও অনেক রাস্টের সীমান্ত এলাকাতে অবস্থান করছেন, অনাহারে, অর্ধাহারে, সামনে বর্ডার কিন্ত ভেতরে ঢোকার অনুমতি নেই। ঠিক এমন এক সময়ে ইসলামিক স্টেট প্যারিসে হামলা করে যাতে সহজেই রিফুজীদের উপরে অপবাদ দেওয়া যায়। সিরিয়ান রিফুজীদের আশ্রয় দেবার ঝুঁকি কেউ যেন না নেয় সেজন্যই প্যারিসে সাধারণ মানুষের উপরে হামলা করা হয়। সারা বিশ্বের মুসলমানদের যাতে ল্যাঞ্ছনা করা হয়। ফ্রান্সে মুসলমানদের উপরে নানাভাবে সাম্প্রদায়িক নিপীড়ন চালানো হচ্ছে বহদিন ধরে। এই হামলার কারণে ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরে মসজিদ বন্ধ করে দেবার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে ফ্রান্স সরকার। কিছুদিন আগে সংসদে আইন পাশ করে হিজাব নিষিদ্ধ করা হয়েছে । ফ্রান্সের মুসলমানেরা এখন যার যার নিজের বাসাতে নাজি কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে থাকার মত মানসিক চাপের মধ্য অতিবাহিত করছেন তাদের দিনরাত্রী।

টরেন্টোতর ফ্লেমিংডন পার্ক এলাকাতে স্কুল থেকে বাচ্চাকে বাসায় আনার সময়ে দুষ্কৃতকারীরা এই মেয়েটির পেছন থেকে আক্রমণ করে। তার হিজাব ছিড়ে ফ্যালে, তাঁকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিয়ে পেটে এলোপাথাড়ি ঘুষি মারে। এই সময় মেয়েটি তার মুখ ঢেকে রাখে এবং তাকে না মারার জন্য অনুরোধ করে। প্রহার করার সময়ে দুষ্কৃতকারীরা অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে । তাকে “টেরোরিস্ট” বলে এবং “যেখান থেকে এসেছো সেখানে ফিরে যাও” বলে চিৎকার করে। যাবার সময়ে মেয়েটির হাত থেকে মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এই সময় মেয়েটির ভাই খবর পায়, এবং পুলিশ ও এ্যামবুলেন্স ডাকে। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে হাসপাতাল থেকে তাকে বাসায় পাঠিয়ে দিলেও মানসিকভাবে মেয়েটি অত্যন্ত ভীত হয়ে পড়েছে। যারা এই ধরনের হামলার শিকার হয়েছেন স্বাভাবিকভাবেই তারা ভীত জিবনের ভয়ে ভীত থাকে। হয়তো মেয়েটি এই ঘটনা জীবনে কোনদিন ভুলতে পারবেনা বা ভুলে যেতে অনেক সময় নেবে। মেয়েটির ভাই জাতীয় টেলিভিশনে বিবৃতি দিয়ে সহানুভুতিশীলদের ধন্যবাদ জানায় এবং বলে যে এই ঘটনার জন্য তারা মোটেই ভীত নয়। কানাডাতেই তাদের জন্ম এবং কানাডাতেই তারা বসবাস করবে। এই দুর্ঘটনা তাদেরকে ভীত করতে পারবেনা। এই দুস্কৃতকারীদের ভয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে কোথাও পালিয়ে যাবেনা। ঘটনা পুলিশ তদন্ত করছে তাই ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ দিতে পারছেনা বলে জানায়।

খবরটি ইংরেজীতে পড়ুন।

    কানাডার অন্টারিও প্রদেশের পিটারবোরো শহরে

 

যে মসজিদটি আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে সেই ক্ষতির পরিমান ৮০ হাজার ডলার। কানাডার বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসলমানেরা ডোনেট করেছেন ১১০,০০০ ডলার । এই মসজিদটি মেরামতের কাজ চলছে। এই মসজিদ কমিটি বলেছে এই মসজিদের জন্য আর ডোনেশনের দরকার নেই। পিটারবোরো শহরের মেয়র এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেছেন যে আমি যে কানাডাকে জানি সে কানাডা এটা নয়। শান্তিপূর্ন নাগরিকদের উপরে এই ধরনের হামলা হতে দেওয়া হবেনা। তদন্ত চলছে। দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে।

মসজিদে আগুন দেবার সংবাদটি ইংরেজীতে পড়ুন ।

ইসলামিক স্টেটের কিভাবে জন্ম হলো। কে জন্ম দিলো। কারা এই বর্বর গ্রুপকে আধুনিক অস্ত্র দিয়ে সজ্বিত করেছে? কারা এদেরকে ডলার দিচ্ছে? এইসব প্রশ্নের উত্তর একটি — মার্কিন যুক্তরাস্ট্র। মার্কিন যুক্তরাস্ট্র সর্ব প্রথমে ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক গঠিত করে। পরে সিরিয়াকে ধবংস করার জন্য সিরিয়াতেও এই গ্রুপের একটি শাখা গঠন করা হয়।

ইসলামিক স্টেট বর্বর গ্রুপের কিভাবে জন্ম হলো – ভিডিও দেখুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *