জাতীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৪) বলেছেন, ‘নূর হোসেন একটা ইউনিয়নভিত্তিক গুণ্ডা। কিন্তু তাকে ওসামা বিন লাদেন বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমি কনফিউজড, একজন কাউন্সিলরের কথায় র্যাব সাতজন মানুষকে মেরে ফেলবে! র্যাব তো অনেক প্রশংসনীয় কাজ করেছে। তাহলে এটা কোন র্যাব? এই র্যাবের আরিফ ও রানাই আমার বাড়িতে হামলা করেছিল, আমার ভাতিজার বাড়িতে হামলা করেছিল। মিথ্যা তদন্ত রিপোর্ট দিয়েছিল এবং আমাদেরও তিনটা ছেলেকে মারিয়েছিল।’ নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন প্রসঙ্গে রবিবার ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের টকশো ‘আজকের বাংলাদেশ’-এ তিনি এসব কথা বলেন। খালেদ মুহিউদ্দীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আজকালের খবর পত্রিকার সম্পাদক প্রণব সাহা। বলা হয়, নূর হোসেন আপনার ডান হাত, নজরুল ছিল বাম হাত- সঞ্চালকের এমন প্রশ্নের জবাবে নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ দলীয় এই সংসদ সদস্য বলেন, ডান হাত, বাম হাত হওয়ার মতো জায়গায় ওরা এখনো যায়নি। আমার অনেক বড় বড় হাত আছে। তিনি বলেন, রাজনীতিবিদরা সত্য কথা সহজে বলতে পারেন না বা বলতে চান না। কিন্তু আমার নেত্রী সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে শিখিয়েছেন। আমি প্রথম ব্যক্তি যে ঘটনা ঘটার অর্থাৎ কিডন্যাপ হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে টেলিভিশনের সামনে বলেছিলাম, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দু-এক জন কর্মকর্তা এটা ঘটিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়কে জানিয়েছিলাম, র্যাবের ডিজি, এডিজিকে জানিয়েছিলাম। হত্যাকাণ্ডের শিকার নজরুল ইসলামের পরিবারের সামনেই ফোন করেছিলাম। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমিই নূর হোসেনের বিরুদ্ধে নজরুলকে সমর্থন দিয়ে পাস করিয়েছিলাম। ঘটনার পর আমি নূর হোসেনকেও ডাকিয়ে এনেছিলাম। ধমক দিয়েছিলাম। সে অস্বীকার করেছে। সেখানে বলা হচ্ছে নূর হোসেন শামীম ওসমানের লোক। নূর হোসেন আমার লোক নয়। সে আমাদের লোক। সে এলাকায় আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। সে একজন কাউন্সিলর। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে শামীম ওসমান বলেন, হ্যাঁ, আমি নূর হোসেনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছি। যেদিন ঘটনা ঘটেছে তার পরদিন সে আমাকে অপরিচিত নম্বর থেকে কল করে বলেছে, আপনি আমাকে বাঁচান, আপনি আমার ভাই লাগেন, আমি কিছু জানি না। আমি অন্যায় করিনি। আপনি আমার বাপ লাগেন। আমি অশিক্ষিত। আমি আপনার কথা শুনিনি। কিন্তু এ কথাগুলো বাদ দিয়ে কিছু মিডিয়া একপেশে খবর প্রকাশ করেছে। আমি নূর হোসেনকে চিন্তা করতে মানা করেছিলাম এটা সত্য। তখনো আমি জানি না সাতটি মানুষ মারা গেছে। আমার ধারণা ছিল শুধু নজরুলকে কিডন্যাপ বা অন্য ধরনের ক্ষতি করতে পারে। সেখানে সাতজনকে নিয়ে যাবে এবং সবাইকে মেরে ফেলবে সেটা আমি বিশ্বাস করতে পারিনি। বরং আমি কৌশলে নূর হোসেন থেকে জেনে নিয়েছিলাম তার কোন কোন দেশের ভিসা আছে। নূর হোসেনকে রিমান্ডে নেওয়া উচিত কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, না, আমি একজন আইনপ্রণেতা। আইনের ছাত্র হিসেবে যেটুকু জানি তাতে বলতে পারি এ মামলাটির চার্জশিট হয়ে গেছে। একটি পক্ষ আমাদের অ্যাডভোকেট চন্দন দা। সেই চন্দন দার বাদীপক্ষ এ চার্জশিটে সন্তুষ্ট। আরেকটি পক্ষ সন্তুষ্ট না। তারা নিæ আদালতে নারাজি দিয়েছেন। সেখান থেকে বলা হয়েছে চার্জশিট সঠিকভাবে হয়েছে। তারপর উনারা জজকোর্টে গেছেন। সেখান থেকেও একই কথা বলা হয়েছে। সেই ক্ষেত্রে নূর হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কিনা তা নির্ভর করছে আদালতের ওপর। সেখানে হাইকোর্ট যদি কোনো নির্দেশনা দেন তাহলে আলাদা ব্যাপার। ‘তবে রিমান্ডে নিক বা না নিক, শর্ষের ভ‚ত বেরিয়ে আসবেই। নূর হোসেনকে কথা বলতেই হবে। কোর্টে উত্থাপন করা হলে ক্রসে বেরিয়ে আসবেই’ বলেন শামীম ওসমান। একজন খুন হলেও রিমান্ডে নেওয়া হয়, সেখানে সাত খুনের মামলার প্রধান আসামিকে রিমান্ডে না নেওয়াকে কেমনভাবে দেখছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে শামীম ওসমান বলেন, প্রধান আসামি বলতে এখানে কোনো আসামি নেই। আসামি এখানে সবাই। যিনি মূল ঘটনা ঘটিয়েছেন অর্থাৎ মেজর আরিফ, উনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা নূর হোসেনকে সোর্স হিসেবে নিয়োগ করেছিলাম।’ মেজর আরিফ আরও বলেছেন, ঘটনার পরদিন তাদের যে কোনো এক জায়গায় ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হয়তো নিজে বাঁচার জন্য বলছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ফাঁসি দিতে পারলে তো নিজের সুবিধা। যে লোকটার নাম বলছেন তিনি অত্যন্ত সৎ ও দক্ষ একজন কর্মকর্তা। উনাকে কোট করে বলা হয়েছে, ‘আমি আর আমার সিইও ওখানে গেছি। বলা হয়েছে আজকের মধ্যে নূর হোসেনকে মেরে ফেল।’ তখন মেজর আরিফ বলেছেন, নজরুলের ঘটনার প্রেক্ষিতে এলাকা খুব অশান্ত। তখন তারেক সাঈদকে বলা হয়েছে, ‘ওকে, ইউ উইল ডু ইট’। শামীম ওসমান বলেন, নূর হোসেন যদি প্রধান ব্যক্তি হয় তাহলে ওকে মারার প্রশ্ন আসছে কেন? এই যে চার্জশিটটা দেওয়া হয়েছে তার জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ দেওয়া উচিত। কারণ এর আসামি একজন কর্নেল, একজন মেজর। সবাই হাই অফিশিয়াল। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের এসপি ড. মুহিত সৎ ও যোগ্য একজন মানুষ। তিনি যে প্রতিবেদন দিয়েছেন তাতে ২২ জন লোকের স্বীকারোক্তি আছে, ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। সবকিছু যেখানে কমপ্লিট, সেখানে এখন যদি পুলিশ অধিকতর তদন্তে যায় তাহলে আগেরগুলো সব ভিত্তিহীন হয়ে যাবে।
Related Posts
আমাদের দেশে কোনো মাদক তৈরি হয় না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- Ayesha Meher
- জুলাই ৩০, ২০১৭
- 1 min read
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ‘আমাদের দেশে কোনো মাদক তৈরী হয়না। সব পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে…
রাজস্ব আহরণে মূসকের অবদান গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী
- Ayesha Meher
- জুলাই ৯, ২০১৫
- 1 min read
মূসক ব্যবস্থাপনায় অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,…
শাহরুখের জন্য অর্জুনকে বের করে দিলেন সালমান
- Ayesha Meher
- জানুয়ারি ৩০, ২০১৫
- 1 min read
সালমান খান ও শাহরুখ খানের ঝগড়া-বিবাদ মিটে যাওয়ায় দু’জনের ভক্তরা বেশ আনন্দিত। তাদের বন্ধুত্ব যে…
Md Azizul liked this on Facebook.
MadZy Anik MoLlick liked this on Facebook.
Laltu Hossain liked this on Facebook.
Tajul Islam liked this on Facebook.
স্বপন হোসাইন liked this on Facebook.
MD Mosharrof liked this on Facebook.